বইমেলায় স্বর্ণপ্রভার নাট্যগ্রন্থ: রাঙাবালি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাটক ও নাট্যতত্ত্বে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন ফারজানা নাজ স্বর্ণপ্রভা। বর্তমানে তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার প্রথম গ্রন্থ ‘রাঙাবালি’। এটি একটি মৌলিক নাট্যগ্রন্থ। প্রথম গ্রন্থ প্রকাশের অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতিবারই বইমেলায় আসি। এবারের বইমেলা একটু অন্যরকম। প্রথম লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলাম। অনেক পাঠক-লেখকের সঙ্গে পরিচয় হচ্ছে। ভালো লাগছে।
রাঙাবালি তিনি লিখেছেন ১২ বছর ধরে। স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পাঠকালে নাটক রচনা গ্রুপের মৌলিক মঞ্চ নাটক রচনার অংশ হিসেবে প্রথম লেখা হয়েছিল রাঙাবালি নাট্য-অখ্যানের গল্প। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে তিনি নাটকটির পরিমার্জনা করেছেন। অবশেষে তার মনে হয়েছে নাটকটি বই হিসেবে পাঠকের সামনে হাজির করা যায়।’ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রথম যে পাণ্ডুলিপিটা ছিল আর এখন যেটা বই আকারে প্রকাশ হলো তার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাঙাবালি তার শরীর বদলেছে। আমার প্রথম ভাবনায় রাঙাবালি যেরকম একটা শিশু ছিল বা একটা অঙকুরিত বীজ ছিল সেটা বিকশিত হয়ে এখন একটা পরিপূর্ণ বৃক্ষ হয়েছে। মহাভারতের মৎস্যগন্ধা নারী যোজনগন্ধা এবং পাশ্চাত্যের মৎস্যকুমারীর মিথ থেকেই আমার মনে সাহস আসে মীনকুমারী-বিষয়ক পৌরাণিক কাহিনির আলোকে নবনাটক রচনার, যেখানে গ্রিক মিথের অরফিউজ-ইউরিডাইসের অমর প্রেমগাথাও উৎসাহ জুগিয়েছে; কিন্তু শেষ পর্যন্ত নাটকটি একেবারেই সমকালীন বাস্তবতার।’
নাটকটির কোনো মঞ্চায়ন হয়নি। তবে তিনি চান নাটকটির মঞ্চায়ন হোক। যদিও মঞ্চায়ন একটু চ্যালেঞ্জিং বলে তিনি মনে করেন। নাটকটিতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রচুর গান। গানগুলোও তিনি লিখেছেন। নাটকের প্রয়োজনে গানগুলো এসেছে। তবে তিনি মনে করেন নাটকটি পড়েও আনন্দ পাওয়া যাবে। এ প্রসঙ্গে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা উদ্ধৃতি দিয়েছেন, “নাটকের ভাবখানা এইরূপ হওয়া উচিত যে-আমার নাটক যদি অভিনীত হয় তো হউক, না হয় তো অভিনয়ের পোড়াকপাল, আমার কোনো ক্ষতি নাই।’ স্বর্ণপ্রভা বলেন, ‘মৎস্যপ্রণীত রাঙাবালির মনোবাসনাও তদ্রুপ। নাটক যখন মঞ্চায়িত হয় তখন এর সঙ্গে অনেকে জড়িত হন। পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী-সুরকার, অন্যান্য কলাকুশলী; কিন্তু নাটক যখন কেউ পাঠ করছেন তখন শুধু নাট্যকার ও পাঠকের সঙ্গেই একটা সংযোগ স্থাপিত হয়।’ তিনি জানান, এই সংযোগটা তিনি উপভোগ করছেন। এই সংযোগটা তার বেশি প্রয়োজন।
নাটক ছাড়াও তিনি কবিতা ও গল্প লিখেন। ইচ্ছে আছে উপন্যাস লেখার। লেখালেখি ও পড়াশোনা নিয়ে তিনি সিরিয়াস। ইচ্ছে আছে টেলিভিশনের জন্যও নাটক লেখার। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের বইমেলায় নাটকের বই তেমন চলে না। ফলে নাটকটি বই আকারে প্রকাশ করতে তাকে খুব বেগ পেতে হয়েছে। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে