এবার গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত শহরের দখল হারাল মিয়ানমার সেনাবাহিনী
তিন বছর আগে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সামরিক সরকার আরেকটি বড় পরাজয় বরণ করল। এবার এক বিদ্রোহী বাহিনীর হামলায় দেশটির সীমান্তবর্তী শহর মায়াওয়াদ্দির দখল হারাল তারা। গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তে অবস্থিত।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত শহর মায়াওয়াদ্দির নিরাপত্তায় নিয়োজিত কয়েক শ সেনা সদস্য এখন আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এই শহরটি কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ থাইল্যান্ডের সাথে মিয়ানমারের স্থলপথে বাণিজ্যের বেশিরভাগই মায়াওয়াদ্দির মধ্য দিয়ে হয়।
এ ব্যাপারে শুক্রবার কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন জানায়, তারা মায়াওয়াদ্দি শহরের ১০ কিলোমিটার দূরে থানগানিয়াং শহরে অবস্থিত জান্তা বাহিনীর একটি ব্যাটেলিয়নের সৈন্যদের আত্মসমর্পণ গ্রহণ করেছে।
জান্তা বাহিনীর সৈন্যদের আত্মসমর্পণের তারা একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। সেই ভিডিওতে তাদের (জান্তা বাহিনী) দখল করা অস্ত্রের একটি উল্লেখযোগ্য অস্ত্রাগার দেখানো হয়।
এ ছাড়াও সপ্তাহান্তে, কারেন বাহিনী মায়াওয়াদ্দির অভ্যন্তরে শেষ অবশিষ্ট ব্যাটালিয়নের সাথে আলোচনা করেছে। আলোচনার পর তারাও আত্মসমর্পণ করতে সম্মত হয়েছে।
এটি মিয়ানমারের সামরিক জান্তার জন্য বড় ধাক্কা। মূলত জান্তা সরকার সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শান প্রদেশে এবং বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে রাখাইন প্রদেশের পাশাপাশি চীনা সীমান্তের বিশাল এলাকা থেকেও বিতাড়িত হয়েছে।
কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ১৯৪৮ সালে মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর থেকে জাতিগত কারেন জনগণের জন্য স্ব-শাসনের দাবিতে লড়াই করছে। যদিও এই বাহিনী ১৯৯০-এর দশকে সরকারি বাহিনীর হাতে পরাজিত হয় এবং ২০১৫ সালের পর তারা দেশটির জাতীয় যুদ্ধবিরতির অংশও হয়েছিল।
তবে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে। সে সময় কেএনইউ ঘোষণা করে, অং সান সু চির নেতৃত্বে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাতিল করছে তারা।
জানা গেছে, অনেক স্বেচ্ছাসেবক যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিতে সহায়তা করেছে, কেএনইউ। যারা মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সামরিক অবস্থানগুলিতে নতুন করে আক্রমণে অন্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগ দিয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে