Views Bangladesh Logo

বেদখল সরকারি জমি উদ্ধার করা হোক

বাংলাদেশের ঠিক কী পরিমাণ সরকারি জমি বেদখল হয়ে আছে, তার হিসাব বোধহয় সরকারের কাছেও নেই। প্রায় সময়ই সংবাদমাধ্যমে খবর আসে রাজনৈতিক বলপ্রয়োগ করে সরকারি খাস জমি বা শত্রু সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে অমুক নেতা, তমুক নেতা। এই প্রক্রিয়া স্বাধীনতার পর থেকেই চলমান। এখনো তা চলছে। সরকার বদলায়, তার সঙ্গে সঙ্গে জমির দখলদারও বদলায়।

গতকাল সোমবার (১৭ মার্চ) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ‘দখলসূত্রে’ সরকারি জমির মালিক বিএনপি নেতা। প্রাপ্ত তথ্যমতে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে ১০ নম্বর সাইট এলাকায় সরকারি প্রায় ১৫০ একর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। দুই বছর আগে অভিযান চালিয়ে তার দখলে থাকা জমি উদ্ধার করেছিল স্থানীয় প্রশাসন। পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গত ৫ আগস্ট বিকেলে তিনি আবার সেই জমি দখলে নেন।

সাহাব উদ্দিন উপজেলা বিএনপির সভাপতির পাশাপাশি জেলা বিএনপির সহসভাপতিও। তার দখলে থাকা জমি তিনি পাথর ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। তবে সাহাব উদ্দিন সরকারি জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্থানীয় প্রশাসন জানায়, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ভোলাগঞ্জে ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি স্থলবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু করে তৎকালীন সরকার। পাশাপাশি পর্যটনের উন্নয়নে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয়। এ অবস্থায় দুই বছর আগে সরকারি জমি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান চালায় স্থানীয় প্রশাসন। তবে ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে আবার সেই জায়গা দখল করা হয়।

সাহাব উদ্দিন সরকারি জমি দখলের অভিযোগ যদি অস্বীকার করে থাকেন, তাহলে সংবাদমাধ্যম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করল কেন? জমি দখলের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সরকারি জায়গা থেকে দখলকারদের উচ্ছেদে শিগগির অভিযান চালানো হবে। জায়গাটি নিয়ে মামলা ছিল। রায় সরকারের পক্ষে গেছে। দ্রুত রায় পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুধু জমি নয়, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনেকেই অনেক কিছু দখল করেছেন, তার খবর কিছু সংবাদমাধ্যমে এসেছে, কিছু রয়ে গেছে খবরের বাইরে। রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকারি জমি, সম্পত্তি এবং কখনো কখনো সুযোগ পেয়ে ব্যক্তিগত সম্পত্তি দখলের অপসংস্কৃতি বাংলাদেশে অনেক কাল ধরেই চলছে। এ যেন জোর যার মুল্লুক তার। এরকম খাল-নদী-পাহাড়-বনাঞ্চল অনেক সরকারি সম্পত্তিই রাজনৈতিক নেতার দখলে থাকার ঘটনা প্রকাশিত হয় সংবাদমাধ্যমে।

আমরা চাই এ ধরনের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হোক। দোষীদের গ্রেপ্তার করা হোক। সরকারি জমি উদ্ধার করা হোক। সরকারি জমি যেন সরকারি কাজেই ব্যবহৃত হয়। কোনো ব্যক্তি, বিশেষ করে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকারি জমি বেদখল না করতে পারে তার জন্য আইনি ব্যবস্থা আরও জোরাল হোক।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ