Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

মূল্যস্ফীতির পারদ বাড়ছেই

বাজারব্যবস্থা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করুন

Editorial  Desk

সম্পাদকীয় ডেস্ক

বুধবার, ৫ জুন ২০২৪

য়েক বছর ধরে কমবেশি সব দেশেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে। মূল্যস্ফীতির চাপে বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে গরিব দেশের সাধারণ মানুষ এখন দিশেহারা। আবার বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতির যে সরকারি হিসাব দেয়া হচ্ছে, বাস্তবে তার চেয়েও বেশি মনে করা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই চলমান মূল্যস্ফীতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে? দ্রব্যমূল্য কি বাড়তেই থাকবে? ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, মূল্যস্ফীতি যখন ৯ শতাংশের ওপরে ওঠে, তখন সেটি নেমে আসতে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আর সেদিকেই ধাবিত হচ্ছে বাংলাদেশ, যা খুবই দুঃখজনক।

যদিও মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে আশার কথা শোনানো হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে। কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে; কিন্তু মূল্যস্ফীতি কমছে না। কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা যাচ্ছে না। সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দুই অঙ্কের ঘর ছুঁই ছুঁই করছে। যদিও খাদ্য মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘর আগেই পার করেছে। এতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সীমিত আয়ের মানুষ।

দেশের মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছেই। দেশে বিগত ১৪ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে। গত সোমবার (৪ জুন) সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ হিসাব প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, মে মাসে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ডলারসংকটের মধ্যে সরকার ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন বাজেটে সরকার আয়-ব্যয়ে ভারসাম্য আনতে গিয়ে পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধিতে মূল্যস্ফীতির হারে বাড়তি চাপ পড়বে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে।

একদিকে তীব্র গরম, অন্যদিকে বিদ্যুৎ-সংকট তো আছেই। পাশাপাশি বাজারেও আগুন। এতে সীমিত আয়ের মানুষ তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এ রকম এক অবস্থায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার সুপারিশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রায়ই আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করা হলেও কয়েক মাস ধরে বিশ্ববাজারে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম কমছে। তবে এর প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। কারণ বাংলাদেশে অধিকাংশ পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা হয় না। যদিও আমদানিকারকরা এর জন্য মূলত ডলার সংকট এবং আমদানির এলসি খোলার ওপর কড়াকড়িকে দায়ী করে থাকেন।

শেষ হতে চলা অর্থবছরের প্রায় পুরোটা সময়ই দেশের বাজারে ছিল ভোক্তাদের হাহাকার। এ ক্ষেত্রে যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো না যায়, তাহলে জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটে জর্জরিত সাধারণ মানুষ কীভাবে বাড়তি দামের বোঝা বহন করবে? তাই দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া, শ্রমবাজারে সংকট তৈরি হওয়া এবং সামাজিক সহায়তা কর্মসূচি সীমিত হয়ে পড়ার মতো বিষয়ে সরকারকে সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাজারব্যবস্থায় অনিয়ম থাকলে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ