প্রতিহিংসা ও ক্ষমতার দম্ভেই পতন হলো শেখ হাসিনা সরকারের
প্রতিহিংসা আর ক্ষমতার দম্ভেই রাজনৈতিকভাবে শেষ হয়ে গেলেন শেখ হাসিনা। তার উপদেষ্টা হিসেবে যারা ছিলেন এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা, প্রত্যেকেই তাকে সময়মতো সঠিক পরামর্শ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। একই সঙ্গে গুন্ডামি ও মস্তানিনির্ভর ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে নতুন প্রজন্মকে দমনের নীতির কারণে রাজনৈতিক নেতা শেখ হাসিনা রাজনীতি থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বরং কতিপয় দুর্নীতিবাজ আমলা, সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী এবং অনৈতিক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য কুখ্যাত কিছু চাটুকার দলীয় নেতার রক্ষকে পরিণত হন। সবকিছুর অনিবার্য পরিণতিতে তাকে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হলো। সেইসঙ্গে ভয়াবহ অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে দিয়ে গেলেন অসংখ্য দলীয় নেতাকর্মীকে। প্রায় ধ্বংস করে গেলেন মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া আওয়ামী লীগকে।
বিশেষ করে গত ১৬ জুলাই থেকে ছাত্র জনতার ওপর নির্মম গুলি চালিয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষকে হত্যা, পঙ্গু করে দিয়ে স্বৈরাচারী আচরণের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার সংকীর্ণ প্রচেষ্টা, সারা দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে শেখ হাসিনা, তার উপদেষ্টা এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। সেই ক্ষোভের মুখে নতুন একটি ইতিহাস রচিত হলো বাংলাদেশে। এর আগে কোনো সরকারপ্রধানকেই পদত্যাগের পর দেশ থেকে এভাবে পালাতে হয়নি। শেখ হাসিনাকে লজ্জাজনকভাবে দেশ থেকে পালাতে হয়েছে। এই লজ্জার ইতিহাসের পর আওয়ামী লীগ আর কখনো রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ থেকে যায়।
মূলত, ২০১৮ সালের পর থেকেই শেখ হাসিনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে। একই সঙ্গে শুধু প্রশাসন ক্যাডারনির্ভর হওয়ার জন্য পেশীজীবী যেমন শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, সাংবাদিকদের সঙ্গেও শেখ হাসিনার দূরত্ব তৈরি হয়। ২০১৮ সালে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলন ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডার, পরিবহন সন্ত্রাসী এবং পুলিশ দিয়ে নির্মমভাবে দমন করার মধ্য দিয়ে নতুন প্রজেন্মের মনেও শেখ হাসিনার নেতৃত্ব সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম হয়। বিশেষ করে নিরাপদ সড়ক বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কোনো দাবিই পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার সরকার পূরণ করেনি। বরং চিহ্নিত পরিবহন সন্ত্রাসীদের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে সদ্য পতিত শেখ হাসিনার সরকার। ফলে সড়কে চলেছে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা। বিশৃঙ্খল সড়কে প্রতিদিন দুর্ঘটনায় রক্তাক্ত হয়েছে রাজপথ।
একই সঙ্গে শুধু পুলিশ এবং প্রশাসন ক্যাডার নির্ভরতার কারণে সরকারি প্রশাসনে এবং সমাজে বেড়েছে ভয়ংকর বৈষম্য। সুপার নিউমারি পদায়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে শুধু পুলিশ আর প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারাই দফায় দফায় পদোন্নতি, ধারাবাহিক বিদেশ ভ্রমণসহ সব ধরনের সরকারি সুবিধা পেয়েছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তারা তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে বার বার হয়রানি করাসহ বড় বড় অপরাধ করলেও কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে হেনস্তা করা হলেও শেখ হাসিনা নিজে সেই হেনস্তাকারীদের পক্ষ নেন। ফলে একটি সাজানো মামলায় জেলে যেতে হয় রোজিনা ইসলামকে। কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে তৎকালীন ডিসি পারভীন সুলতানার দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশের কারণে তার নির্দেশে এনডিসি নাজিম উদ্দিন, রিন্টু বিকাশ চাকমা এবং রাহাতুল ইসলাম মধ্যরাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় নির্মম নির্যাতন করে। পরে সেই নির্যাতন এবং বেআইনিভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথা সরকারি তদন্তে রিপোর্টে প্রমাণিত হলেও শেখ হাসিনা সরকার সেই চারজনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। বরং সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানই বার বার হয়রানির শিকার হন। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচারও হয়নি এক যুগ ধরে। নবম ওয়েজ বোর্ড প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও প্রতারণার শিকার হন পেশাদার সাংবাদিকরা।
২০১৮ সালের পর দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত আইন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকসহ, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষ চরম হয়রানির শিকার হন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ক্ষমতার অপব্যবহারের অবাধ সুযোগ নিয়ে সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তারা দুর্নীতি ও অপকর্মে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। সচেতন মানুষ এ নিয়ে বার বার সরকারকে সতর্ক করলেও সরকার প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা তা আমলে নেননি। বরং সমালোচনাকারীদের কঠোর ভাষায় আক্রমণ করেছেন, এমনকি পুলিশ দিয়ে তুলে নেয়ার পর কারাগারে আটকে রেখেছেন। কারাগারে একজন লেখক মুশতাক আহমেদের করুণ মৃত্যু হয়। এ মৃত্যুর পর সরকার ন্যূনতম তদন্তও করেনি। কার্টুন্স্টি কিশোর, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম চরম নির্যাতনের শিকার হন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে একটি প্রহসনের মামলায় শাস্তি দিয়ে কারাগারে রাখা হয় দীর্ঘদিন। এরপর চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ পর্যন্ত যেতে দেয়া হয়নি। অথচ সরকারের যে কেউ অসুস্থ হলে ব্যাংকক-সিঙ্গাপুর যাওয়া একটা সাধারণ রীতিতে পরিণত হয়। দেশের সাধারণ মানুষ শেখ হাসিনা সরকারের এ ধরনের প্রতিহিংসামূলক আচরণ ভালোভাবে গ্রহণ করেনি।
নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে অদ্ভুত-অযৌক্তিক সব মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করা হয়েছে। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিমান মানুষটিকে বার বার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। এ ধরনের সংকীর্ণ, প্রতিহিংসামূলক আচরণ দেশের মানুষ ভালোভাবে নেয়নি, অনেক সমালোচনা হয়েছে; কিন্তু সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা সেসব সমালোচনা ন্যূনতম আমলে নেননি।
এত কিছুর পরও ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে আবারও বিএনপিসহ প্রতিপক্ষ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অপকৌশলে বাইরে রেখে একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে সফল হন শেখ হাসিনা। এরপর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মূলত একটি রাজনীতিবিদ শূন্য রাজনৈতিক সরকার গঠিত হয়। এ সরকার গঠিত হওয়ার পর সরকার আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের কারণে মানুষের জীবন অসহনীয় হয়ে ওঠে। প্রকাশ হতে শুরু করে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা, কর কর্মকর্তা এবং সুবিধাভোগী দলীয় নেতা এবং ব্যবসায়ীদের বিপুল অঙ্কের টাকা বিদেশে পাচারের খবর। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই স্বীকার করেন, তার গণভবনের পিয়নও চারশ কোটি টাকার মালিক এবং সেই কর্মচারীও বিদেশে পালিয়েছেন! ক্ষমতার দম্ভে শেখ হাসিনা এতটাই অন্ধ হয়ে পড়েছিলেন যে, তার এ কথার অর্থ কী দাঁড়ায়, সেটাও ভুলে যান।
২০১৮ সালেই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে সরকার সে দাবি মেনে নেয়; কিন্তু আন্দোলনকারীদের পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের দিয়ে পেটানো, মামলা দিয়ে হয়রানির ঘটনা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি করে, যার প্রতিফলন দেখা যায় ডাকসু নির্বাচনে ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুরের বিজয়ের মধ্য দিয়ে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার পরও বহু বছর পর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের এই পরাজয় প্রমাণ করে তরুণ প্রজন্মের বড় একটা অংশের আওয়ামী লীগের প্রতি বিতৃষ্ণ মনোভাব রয়েছে এবং তার বড় কারণ ছিল ২০১৮ সালের দুটি আন্দোলন দমনে শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্মম নির্যাতন। দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে ক্ষমতান্ধতার কারণে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তরুণ প্রজন্মের সেই বিতৃষ্ণ মনোভাব সম্পর্কে জানার চেষ্টাই করেননি। তার উপদেষ্টারাও অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তাকে কিছুই জানাননি।
বরং প্রধানমন্ত্রী নিজেই তার নিজেদের লোকদের দিয়ে কোটা বাতিল করে জারি করা সরকারি পরিপত্রের বিরুদ্ধে রিট করান। সেই রিটের রায়ে কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হলে ২০২৪ সালের পহেলা জুলাই মাঠে নামে ছাত্রসমাজ, তরুণ প্রজন্ম। শেখ হাসিনার সরকার বরাবরের মতো তরুণ প্রজন্মেকে আমলেই নেননি। বরং আন্দোলনকারীদের প্রকান্তারে ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করে তরুণ প্রজন্মের প্রচণ্ড ক্ষোভের মুখে পড়েন। সেই ক্ষোভ দমন করতে গিয়ে যেভাবে গুলি করে শিশু-তরুণ-শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়েছে, তা বিশ্বের ইতিহাসেই বিরল। সরকারি হিসাবে ১৫০ মানুষ, বেসরকারি হিসাবে ২০৪ জন মানুষ হত্যার পর রক্তের দাগ শুকানোর আগেই গোয়েন্দা পুলিশকে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমন্বয়কদের এক অর্থে অপহরণ করে নিয়ে যান শেখ হাসিনা। হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে ডিবি অফিসে রাখার অজুহাত হিসেবে সরকার নিরাপত্তার যে দোহাই দেয়, সেটা দেশের মানুষ গ্রহণ করেনি। এমনকি আওয়ামী লীগে নেতাকর্মীরাও গ্রহণ করেননি। সমন্বয়কদের সঙ্গে এই প্রতিহিংসামূলক, অন্যায় আচরণের মধ্য দিয়েই শেখ হাসিনার টানা ১৫ বছরের সরকারের পতন অনিবার্য করে তোলেন।
টানা প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। ২০০৯ সালে যখন শেখ হাসিনা মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন, তখন যাদের বয়স পাঁচ থেকে দশ বছর ছিল, তারাই আজকের তরুণ প্রজন্ম। ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বড় হওয়া এই প্রজন্মের তো আওয়ামী লীগের প্রতিই সক্রিয় সমর্থন থাকার কথা; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে এই প্রজন্মকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব নিজেদের রাজনৈতিক আদর্শে বড় করতে পারেননি। বরং তাদের এমনভাবে বিক্ষুব্ধ করেছেন যে, তাদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গণঅভ্যুত্থানেই প্রথম সরকারপ্রধান হিসেবে পতিত এবং দেশ পালানোর কলঙ্ক মাথায় নিতে হলো শেখ হাসিনাকে।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণসহ বড় অবকাঠামো উন্নয়নের অনেক সাফল্য আছে। মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, অবশ্যই বড় অর্জন; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, সব অর্জনের নামকরণ শুধু বঙ্গবন্ধু আর তার পরিবারের সদস্যদের নামে করা হয়েছে; কিন্তু জেলহত্যার শিকার জাতীয় চার নেতাসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যান্য নেতাদের নামে মূলত, কোনো কিছুরই নামকরণ করা হয়নি। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ইতিহাসকেও খণ্ডিতভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেন শেখ হাসিনা, যা মূলত বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির পর্যায়েও পড়ে।
সরকারপ্রধান হিসেবে অন্যায়, অপকর্মের দায়ভার শেখ হাসিনার এবং তার উপদেষ্টা ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের। মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কোনোভাবেই, কোনো যুক্তিতেই শেখ হাসিনার অপকর্মের জন্য অসম্মানিত করা যায় না। অথচ আমরা দেখেছি শেখ হাসিনার পতনের পর একদল উন্মত্ত মানুষ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে। কোথাও কোথাও বঙ্গবন্ধুর নামে অপমানসূচক স্লোগান দিতে দেখা গেছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরের বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বিভিন্ন স্থানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। অনেক জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলার খবর পাওয়া গেছে। থানায় আগুনসহ সরকারি স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি টিভি চ্যানেলের অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অরাজকতা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না।
আমরা বিশ্বাস করি, এবারের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অন্য পেশাজীবীরা অত্যন্ত সচেতন মানুষ। তারা কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর অসম্মান এই বাংলাদেশে হতে দেবেন না। একাত্তরের ৩০ লাখ শহীদের রক্তঋণকে ভুলে যেতে দেবেন না। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে দেবেন না।
আশা করি, তরুণ প্রজন্মের অসাধারণ, অবিস্মরণীয় এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের চেতনায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে। যে বাংলাদেশে হত্যা, রক্তপাত, প্রতিহিংসা থাকবে না। বরং অগ্রগতি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে। জুলাই হত্যাকাণ্ডে জীবন দেয়া সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।
রাশেদ মেহেদী: সাংবাদিক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে