Views Bangladesh Logo

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম সচল করুন

বাংলাদেশে যে একটি প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) রয়েছে এ তথ্যটি হয়তো অনেকেরই অজানা, কারণ প্রাণিসম্পদ নিয়ে এ দেশে তেমন গবেষণা হয় না বললেই চলে। যদিও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক খাত; কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন নিয়ে কী ধরনের গবেষণা হয়েছে, তার কোনো ভালো খবর দেশবাসীর সামনে আসেনি। এসেছে একটি খারাপ খবর।

গতকাল বুধবার (২৬ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, কর্তারা ব্যস্ত আখের গোছাতে, গবেষণা কার্যক্রম অচল। নিঃসন্দেহে খবরটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বাংলাদেশের অন্যান্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মতো প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটও রাজনীতি ও কর্তাদের দৌরাত্ম্যের খপ্পরে পড়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, করোনাকালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের করোনা-আক্রান্ত মায়ের সেবা-শুশ্রূষায় মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ২৪ কর্মকর্তাকে নিয়োজিত করেছিলেন সচিব। সে সময় ঘটনাটি বেশ শোরগোল ফেলেছিল। সচিবের মায়ের সেবা দিয়ে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) তখনকার এক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সচিবের আশীর্বাদে বাগিয়ে নেন মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালকের পদ।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘পুরস্কার’ পাওয়া ওই কর্মকর্তা রাজনৈতিক পালাবদলের পর নিজেও পাল্টিয়েছেন জার্সি। সেজেছেন বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা। ফলও পেয়েছেন নগদে। এখন তিনি গবেষণা খামারের ফার্ম সুপার। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যেখানে সার্বক্ষণিক গাড়ি সুবিধা পান না, সেখানে জুনিয়র কর্মকর্তা আশাদুল গাড়ি হাঁকান। কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে বেপরোয়া আচরণেও রয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধা নেয়া এই কর্মকর্তার দুর্নাম।

এরকম ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খুশি করেই অধস্তন কর্মকর্তারা চলছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের থেকে অধস্তন কর্মকর্তারা ক্রমান্বয়ে তোষামোদে ব্যস্ত থেকে, রাজনৈতিক পোশাক পাল্টে যে যেভাবে পারছেন সুযোগ-সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অপ্রয়োজনে বিদেশ সফরে যাচ্ছেন। পদোন্নতি, টেন্ডারবাজিসহ সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করছেন। নিজেদের আখের গোছানো সচল থাকলেও এক রকম অচল হয়ে পড়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা। এতে লেজেগোবরে পরিস্থিতি মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রমে।

আমরা এরকম খারাপ খবর পেয়ে অভ্যস্ত। সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর অচলাবস্থা দেখে দেখে আমাদের গা-সওয়া হয়ে গেছে; কিন্তু আর কত? স্বাধীনতার এত বছরেও আমাদের কোনো গবেষণা খাতই উন্নত হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা আশা করেছিলাম নতুন এক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক হবে; কিন্তু তার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং পোশাক পাল্টে যে যার আগের অবস্থাতেই ফিরে যাচ্ছে।

এভাবে চলতে থাকলে শুধু নির্দিষ্ট কিছু গবেষণা প্রতিষ্ঠানই না, পুরো দেশই একদিন অচল হয়ে যাবে। এই অচলাবস্থা থেকে দেশকে এখনই ঠেকাতে হবে। প্রতিটা সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সচল করতে হবে। আমরা চাই বর্তমান সরকার এখনই এই দিকে নজর দিক। কর্তাদের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ বন্ধ করে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম এখনই সচল করুন।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ