বাসে ডাকাতি, 'ধর্ষণের' ঘটনায় তিনজনের জামিন
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতি ও এক নারীযাত্রীর 'ধর্ষণের' অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় জামিনে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- বাসটির চালক বাবলু ইসলাম (৩৫), চালকের সহকারী সুমন ইসলাম (৩৫) এবং সুপারভাইজার মাহবুল আলমকে (৩৮)। নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালত বুধবার তাদের জামিন দেন।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমীন নেলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকার গাবতলি থেকে ছেড়ে আসে। পথিমধ্যে গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় বাসটিতে আরও কয়েকজন যাত্রী ওঠে।
পরে বাসটি টাঙ্গাইল পৌঁছালে নতুন ওঠা যাত্রীসহ আরও কয়েকজন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। পরে ডাকাতরা যাত্রীদের কাছ থেকে সব মালামাল লুটে নেয় এবং দুই নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করে মির্জাপুর এলাকায় বাস থেকে নেমে যায়। মঙ্গলবার সকালে বাসটি বড়াইগ্রাম এলাকায় আসলে যাত্রীরা বাসটি আটকের জন্য থানায় খবর দেয়।'
তিনি বলেন, 'এ সময় যাত্রীরা অভিযোগ করেন ঘটনার সঙ্গে বাসের চালক, সুপারভাইজার ও হেলপার জড়িত থাকতে পারে। এজন্য তাদেরকে আটক করা হয়। আটকদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো মামলা দায়ের না করলেও তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। বিষয়টি তদন্ততাধীন রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হলেও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় হাজির হওয়া শর্তে তাদের জামিন দেওয়া হয়েছে।'
সোহাগ নামের এক যাত্রী বলেন, 'গাড়ি যাত্রী বোঝাই থাকলেও গাড়ির চালক ও তার সহযোগীরা আরও সাত-আটজনকে মাঝপথে গাড়িতে তুলে এবং তারপর গাড়ির চালকের আসনে তাদেরই একজন বসে পড়ে।
ওই দলের বাকিরা তখন যাত্রীদের কাছে চলে আসে এবং গলায় চাকু ধরে। তারা বাসের আলো জ্বালাতে নিষেধ করেছিলো।'
তিনি বলেন তিনি কথা বলতে পারছিলেন না, মাথা উঁচু করতে পারছিলেন না, চোখ খুলতে পারছিলেন না। শুধুই বাসের দুই নারী যাত্রীর চিৎকার আর কান্নার আওয়াজ শুনছিলেন।
'ওই দুইজনের সিট ছিল বাসের মাঝামাঝি। তাদের মাঝে একজন হিন্দু, তার সাথে তার স্বামীও ছিলেন," বলছিলেন সোহাগ।
ডাকাতরা প্রথমে ওই নারীর কাছে যা যা ছিল, সব নিয়ে নেয়।
'এরপর চিকন করে একজন ছেলে আমাদের সামনেই ওই মহিলাকে টানতে টানতে জোর করে পেছনের সিটে নিয়ে চলে যায়। ওর স্বামী বাধা দিতে গেলে স্বামীকে অনেক মারধর করে,' বলেন সোহাগ হাসান।
'এরা যে পরিমাণ... উনি ধর্ষণেরও শিকার হয়েছে। পিছে নিয়ে গেলে উনি অনেক চিৎকার করছিলো। ওদিকে আমাদের যেতে দিচ্ছিলো না। আমরা শুধু চিৎকারের আওয়াজ পাচ্ছিলাম। জোরে জোরে কাঁদতেছিলো। কিন্তু ওখানে আমাদের কিছুই করার ছিল না।'
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে