কারাগার ভেঙে পালানোদের বিরুদ্ধে সুন্দরবনে দস্যুতার অভিযোগ
গত ৫ আগস্ট সাতক্ষীরা কারাগারের অস্ত্র লুট করে পালানো আসামিদের একটি দল সুন্দরবনে দস্যুতায় লিপ্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, দস্যুদের এই দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেল পালানো আসামি ৪২ বছর বয়সী আব্দুল্লাহ তরফদার।
সম্প্রতি শফিকুল গাজী নামে এক জেলেকে অপহরণ করে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উপকূলজুড়ে বনজীবীদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বাহিনীর প্রধান আব্দুল্লাহ তরফদারের বাড়ি সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের কালিঞ্চি গ্রামে। তিনি নারী পাচার মামলায় সাতক্ষীরা কারাগারে বন্দি ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট সাতক্ষীরা কারাগার ভেঙে অস্ত্র লুট করে পালিয়ে শ্যামনগরের কৈখালী ইউনিয়নের পারাণপুর গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। ৬ আগস্ট রাতে আব্দুল্লাহ টেংরাখালি গ্রামের আলীম গাজী, রাজ্জাক গাজী ও সফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় মিরগাং মোড় দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন।
সুন্দরবনে গিয়ে দস্যুতায় নামা আব্দুল্লাহর বাহিনীতে যোগ দিয়েছে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল। যাদের অধিকাংশই কারাগার থেকে পালিয়ে আসা।
সূত্র মতে, এসব দস্যুর বাড়ি সাতক্ষীরা ও কালিগঞ্জের মৌতলায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জেলে জানান, ১০ থেকে ১২ জনের একটি ডাকাত দল সুন্দরবনের দাড়গাং, আঠারোবেকী, কাচিকাটা, রায়মঙ্গল, কচুখালী ও মাওন্দো নদীতে অবস্থান করছে। তারা জেলেদের নৌকায় যা পাচ্ছে তুলে নিচ্ছে। পুনরায় বনে প্রবেশ করলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্রবেশ করতে বলছে।
একাধিক জেলে আব্দুল্লাহ তরফদারের নেতৃত্বে সুন্দরবনে আবার বনদস্যুরা সক্রিয় হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, তারা আব্দুল্লাহ তরফদারসহ অনেককেই চিনতে পেরেছেন।
এদিকে আব্দুল্লাহ তরফদারকে দস্যুতায় সহযোগিতার অস্বীকার করেছেন টেংরাখালি গ্রামের আলীম গাজী। তিনি বলেন, 'আমি গতকাল বন থেকে বাড়ি আইছি। এসে শুনলাম যে বনে ডাকাত নামিছে। আমার ভাই রাজ্জাক ও আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটিপক্ষ মিথ্যে কচ্ছে।'
সফিকুল ইসলামের মা রাবেয়া বেগম মুঠেফোনে জানান, সফিকুল আর রাজ্জাক বনে আছে।
ছেলের দস্যুতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।
সাতক্ষীরা কারাগারের জেলার হাসনা জাহান বিথী বলেন, আব্দুল্লাহ তরফদারসহ জেল থেকে পালানো ৭-৮ জন এখনো আত্মসমর্পণ করেনি। তাদের গ্রেপ্তারে প্রশাসন অভিযান শুরু করেছে।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে