১৩ বছরেও শেষ হয়নি সাগর-রুনি হত্যার বিচার, প্রতিবেদন দাখিলের প্রতীক্ষায় পরিবার
আজ ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৩ বছর পরও অমীমাংসিত রয়ে গেছে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার তদন্ত। হত্যার বিচার দেখে যেতে চান সাগরের মা সালেহা মনির। তবে এখনও তা ঝুলে আছে। এ ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়েছে ১১৫ বার এবং বর্তমান তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই এখনো এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সময় দিতে পারেনি। যদিও যথাযথ সময়ে প্রতিবেদন দাখিলের কথা জানিয়েছে তদন্ত সংস্থাটি।
২০১২ সালের এই দিনে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাগর ও রুনি তাদের বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন। এ হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ ও র্যাবের হাতে আসা মামলাটি এখন পিবিআইয়ের তদন্তাধীন। তবে বারবার প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছানোয় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার।
গত ২৭ জানুয়ারি মামলার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ছিল, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী তারিখ ২ মার্চ ধার্য করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হক জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনায় মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং যথাসময়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
এদিকে সাগরের মা সালেহা মনির বলেন, “আমার সাগরকে কেন মারা হলো? কারা মেরেছে? এই টুকু দেখে যেতে চাই। ছেলের কবরস্থানে এখনও যাইনি। রুনির মা তো চলে গেছে। এখন আমি একা আছি। আল্লাহর দিকে চেয়ে আছি।”
তদন্তের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “র্যাব তদন্তে বারবার সময় নষ্ট করেছে। এখন অন্য সংস্থাকে দিয়েছে, দেখি তারা কী করে। আশা করি, ইউনূস সরকারের আমলে সঠিকভাবে তদন্ত হবে।”
এছাড়া রুনির ভাই নওশের রোমানও জানান, তারা বিচারের আশা ছাড়বে না এবং যতদিন বাঁচবেন, দাবিও জানাবেন। সাগর রুনি ফাউন্ডেশন ‘সাগর-রুনি হিউম্যান রাইটস ফটো অ্যাওয়ার্ড’ প্রদর্শনী আয়োজন করেছে, যা ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় জাদুঘরে চলবে।
অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আবু সাইদ সিদ্দিকী (টিপু) বলেন, “মামলাটা নিয়ে আমরা পরিশ্রান্ত। বারবার বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি। আমরা পরিশ্রান্ত। পরিত্রাণ চাই।”
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলাটি সারা দেশে আলোচনার জন্ম দেয়। এ ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এখনও হত্যা রহস্য উদঘাটিত হয়নি। এর মধ্যে হত্যা মামলাটির তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সবার মধ্যে সংশয় দেখা যাচ্ছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে