ঢাবির প্রবেশপথে নিরাপত্তা চৌকি, শিক্ষার্থীরা খুশি হলেও নগরবাসী ক্ষুব্ধ
আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে হুটহাট প্রবেশ করা গেলেও হটাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি প্রবেশপথে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়েছে প্রশাসন। এতে শিক্ষার্থীদের মনে স্বস্তি ফিরলেও খুশি হতে পারেননি নগরবাসী।
জানা গেছে, ১২ ডিসেম্বর পলাশী মোড় সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে বেরিয়ার এবং সিকিউরিটি অ্যান্ড সার্ভিলেন্স বক্স উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। এই প্রবেশ পথ ছাড়াও নীলক্ষেত মোড়, শহীদ মিনার, শাহবাগ, শহীদুল্লাহ হল, হাইকোর্ট মোড় এবং শিববাড়ি ক্রসিং মোড়ে নিরাপত্তা চৌকি এবং সিকিউরিটি অ্যান্ড সার্ভিলেন্স বক্স স্থাপন করা হয়।
১৩ ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় স্টিকার বিহীন গাড়ি, ভারী যানবাহন, গণপরিবহন এবং বহিরাগতদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের শাহবাগ ও নীলক্ষেত এলাকা সংলগ্ন মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে ব্যারিয়ার দেওয়া হয়েছে। প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিমের সদস্য ও শিক্ষার্থীরা মিলে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে রাস্তার দুই পাশেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবেশপথে নিরাপত্তা চৌকি বসানোর ফলে অনেক ভোগান্তি বেড়েছে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ বা ঘুরতে আসছেন তারাও যানজটে আটকে পড়েন।
আরাফাত রহমান নামের একজন পথচারী বলেন, আমি নীলক্ষেতে একটি পণ্য কিনতে গিয়ে দীর্ঘ সময় আটকে ছিলাম। এমন সিদ্ধান্তের নেয়ার আগে কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত ছিলো।
শাহবাগ থানার দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থার পর থেকে শাহবাগ, নীলক্ষেত, বাংলামোটর, মৎসভবন সড়কে যানজট বেড়েছে।
রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার মানজুর আহমেদ সিদ্দিক ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, ক্যাম্পাসে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ফলে অন্য সড়কগুলোতে যানজট আরও বেড়েছে।
ঢাবি ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পেরে এক রিকশাচালক বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢুকতে না পারলে আমাদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। কয়েকদিন ধরে আয় হচ্ছে না। উল্টো ভোগান্তি বেড়েছে।
রবিন আহমেদ নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, ঢাবি এক প্রকার জমিদারি শুরু করেছে। এটা ঢাকা শহরের মূল পয়েন্ট। এটা দিয়ে ঢুকতে না পারলে ঘুরে ঘুরে বাসায় ফিরতে হয়। এটা আমাদের জন্য অনেক ভোগান্তির।
যানজটের ফলে রিকশাচালকরাও আদায় করছেন বাড়তি ভাড়া। ৩০-৪০ টাকার ভাড়া কোনো কোনো সময় ৮০-১০০ টাকাও নেওয়া হচ্ছে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঢাবি শিক্ষার্থীদেরও। তবে ভাড়া বেশি নিয়ে শিক্ষার্থীদের কোনো আক্ষেপ নেই। ক্যাম্পাস বহিরাগতমুক্ত হয়েছে এতেই তারা খুশি।
এদিকে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রক্টরিয়াল টিমে আরও ১০ জন সদস্য নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বহিরাগতদের ভোগান্তি নিয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন,আমি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিচ্ছি। কারো চিত্তবিনোদনের জন্য ক্যাম্পাসকে উন্মুক্ত রাখতে পারি না।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে