তাহলে বাদ পড়ছেন শান্ত, আসছেন নতুন অধিনায়ক?
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশের মিশন শেষ। এ টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার আগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বড় লক্ষ্যের কথা বলেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কের এমন বক্তব্য বেশ ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘এই একটি জায়গায় আপনি সবসময় সব ম্যাচ জিততে পারবেন না। আমার একটা জিনিস ভালো লেগেছে অধিনায়কের আত্মবিশ্বাস দেখে। আমার মনে হয়, তারা নির্ভার।’ কিন্তু অধিনায়ক যে সাহসী আত্মবিশ্বাসের কথা বলেছিলেন, দল তার ধারে-কাছেও যেতে পারেনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি বৃষ্টির বাধায় পরিত্যক্ত হওয়ার আগে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বেশ প্রতিযোগিতাহীনভাবে হেরেছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের খেলার ধরন দেখে শান্তর কথা নিয়ে এখন হাসি-ঠাট্টা হচ্ছে। দলের ব্যর্থতায় সমালোচনা ধেয়ে আসছে চারদিক থেকে। ফলে শান্তর নেতৃত্বও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতার পর অধিনায়কের পদটি নিয়ে আলোচনা হবে বিসিবি সভায়। আগামী সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর দেড়টায় মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে হবে সভাটি। এ সভায় টেস্ট ও ওয়ানডে দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর জায়গায় নতুন কাউকে নেয়ার সিদ্ধান্তও হতে পারে।
গত বছরের অক্টোবরেই নাজমুল হোসেন শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা শোনা গিয়েছিল। বোর্ডকে অধিনায়কের দায়িত্ব ছাড়ার ইচ্ছার কথা আগেই বলেছিলেন এই ক্রিকেটার। অবশ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ১১ মাস দায়িত্ব পালন করার পর টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব ছেড়ে দেন শান্ত। তবে তার জায়গায় নতুন কাউকে নিয়োগ দেয়নি বিসিবি। পদটি এখনো শূন্য। ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন, ‘যেহেতু আপাতত আমাদের টি-টোয়েন্টি খেলা নেই, হাতে সময় আছে; এখনই নতুন অধিনায়ক নিচ্ছি না।’ গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শান্তকে সব ফরম্যাটের ক্রিকেটে দায়িত্ব দেয়া হয়। এ পর্যন্ত তিন ফরম্যাটের ক্রিকেট মিলে ৪৭টি ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন এই অধিনায়ক। তবে তার সফলতার হার যে খুব একটা ভালো যে এমন নয়। ৩৬ শতাংশ জয়ের রেকর্ড তার।
আগামী মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তাই বিসিবি সভায় টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কের নাম চূড়ান্ত করা হবে এটা নিশ্চিত। এই ২০ ওভারের ক্রিকেটে নতুন অধিনায়ক হওয়ার জন্য জোর আলোচনায় আছেন সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দায়িত্ব পালন করা লিটন কুমার দাস। তার নেতৃত্বে ক্যারিবিয়ানে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০ তে জিতে ছিল বাংলাদেশ। তাই অলিখিতভাবে টি-টোয়েন্টি দলের নতুন অধিনায়কের নাম ঠিক হয়ে আছে। যদিও অফ ফর্মের কারণে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে নেয়া হয়নি লিটনকে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলকে ১২টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ৭টি জয় এনে দেন লিটন। একটি ম্যাচের ফল হয়নি। অধিনায়ক হিসেবে তার সফলতার হার ৫৮ শতাংশ।
টি-টোয়েন্টি দলের পাশাপাশি এখন টেস্ট ও ওয়ানডে দলের নতুন অধিনায়ক নিয়েও চিন্তায় আছে বিসিবি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় ইভেন্টের আগে নেতৃত্ব পরিবর্তন করতে চায়নি বলেই শান্তকে দায়িত্বে বহাল রাখা হয়। এবার ওয়ানডে ও টেস্ট দলে নেতৃত্বের বদল হতে পারে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতার কারণে যদি বাদ পড়েন শান্ত তাহলে অধিনায়কের দায়িত্ব পেতে পারেন কে? এরই মধ্যে শান্তর ডেপুটি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। অবশ্য এর আগেও তাকে নেতৃত্বের জন্য বিবেচনা করা হয়েছিল। বিপিএল, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপসহ ঘরোয়া ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব করার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে মিরাজের। গত বছর জাতীয় দলকেও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে ৬টি ম্যাচে দায়িত্ব পালন করেন মিরাজ। এখন দেখার বিষয় যে, শেষ পর্যন্ত শান্তই টিকে যান, নাকি অধিনায়কের ব্যাটন ওঠে নতুন কারোর হাতে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে