সিরি গোপনীয়তা লঙ্ঘন মামলা: ৯৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি অ্যাপল

গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগে অ্যাপলের বিরুদ্ধে একটি ক্লাস অ্যাকশন মামলা করতে প্রস্তুতি নিচ্ছিল অসংখ্য ব্যবহারকারী। তবে আইনি জটিলতায় না গিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে ৯৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার মাধ্যমে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে সম্মত হয়েছে অ্যাপল।

‘ক্লাস-অ্যাকশন’ হলো এমন একটি মামলা, যেখানে একজন ব্যক্তি বাদী হিসেবে মামলা করলেও তিনি একই ধরনের ঘটনার শিকার অন্যান্য ভুক্তভোগীদের প্রতিনিধিত্ব করেন। এই ধরনের মামলায় যদি বাদী জয়ী হন, তাহলে রায়ের সুবিধা সংশ্লিষ্ট সব ভুক্তভোগীর জন্য প্রযোজ্য হয়।

গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডের ফেডারেল কোর্টে এই প্রাথমিক নিষ্পত্তির প্রস্তাব জমা দেয়া হয়েছে, যা বিচারপতি জেফ্রি হোয়াইটের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষমান। তথ্যটি প্রকাশ করেছে রয়টার্স।

সিরির (Siri) বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, এই এআই ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহারকারীদের কথোপকথন গোপনে শুনে সেই তথ্য তৃতীয় পক্ষ বিজ্ঞাপনদাতাদের সরবরাহ করেছিলো, যাতে ব্যবহারকারীদের ফোনে সেই তথ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা যায়।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অ্যাপলের বিরুদ্ধে একটি ক্লাস-অ্যাকশন মামলা দায়ের করা হয়। এর আগে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই মামলার ভিত্তি তৈরি হয়েছিল। তবে পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে সে সময় মামলা খারিজ হয়ে যায়। পরে নতুন করে মামলা করা হলে, এতে অ্যাপলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়।

মামলার দুজন বাদী অভিযোগ করেন, তারা এয়ার জর্ডান ‘স্নিকার্স’ এবং ‘ওলিভ গার্ড’ রেস্তোরাঁর নাম উল্লেখ করার পর, বিজ্ঞাপন হিসেবে সেগুলোর প্রচারণা দেখেছেন। এছাড়া অন্য বাদীর অভিযোগে বলা হয়, অ্যাপল তাদের ব্যবহারকারীদের কথোপকথন রেকর্ড করছে এবং ভুলবশত সিরি সক্রিয় হয়ে গেলে সেসব কথাবার্তাও রেকর্ড করা হচ্ছে। একজন অভিযোগকারী জানান, তিনি তার ডাক্তার বন্ধুর সঙ্গে অস্ত্রোপচার নিয়ে কথা বলার পরপরই তার ফোনে অস্ত্রোপচার সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু হয়। এটি ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের একটি বড় উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২১ সালে দায়ের করা এই মামলার পর থেকে অ্যাপল (Apple Lawsuit) ক্রমাগত এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে; কিন্তু ৩ বছরেরও বেশি সময় পরে অ্যাপল এখন এই মামলা নিষ্পত্তি করতে রাজি হয়েছে।

অ্যাপল এখন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবহারকারীদের জন্য ৯৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব ব্যবহারকারীর কথোপকথন রেকর্ড করা হয়েছে, তারা সর্বোচ্চ ২০ ডলার পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন।

তবে অ্যাপল কিংবা মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী, কেউই এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।