দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানল, নিহত ২৪
দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানলে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ও সেনা সদস্যরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ছাড়াও গত সপ্তাহান্তে এক ডজনেরও বেশি স্থানে আগুনের সূত্রপাত হয়। যার ফলে প্রায় ২৭ হাজার বাসিন্দাকে ঘর ছাড়া হতে হয়েছে। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের।
বুধবার (২৬ মার্চ) দেশটির বন বিভাগ জানিয়েছে, এখনো পাঁচটি সক্রিয় দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস।
প্রশাসনের আশঙ্কা, আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে না আসায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ দাবানলগুলোর একটি।
দেশটির স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে পৌঁছেছে এবং ১২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
এই ভয়াবহ দাবানলের ফলে ইউনেস্কোর ঐতিহ্যবাহী দুটি স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। দাবানল বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার কারণে ব্যাপক মাত্রায় লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আগুনের তীব্রতা, ধোঁয়ায় কমে যাওয়া দৃশ্যমানতা এবং অবরুদ্ধ রাস্তাগুলোর কারণে আতঙ্কিত লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের বেশিরভাগই স্থানীয় বাসিন্দা। তবে তিনজন ফায়ার ফাইটার প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া একটি পাহাড়ি এলাকায় দাবানল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করার সময় একটি বিমান বিধ্বস্ত হলে এক পাইলট নিহত হন।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দাবানল ইতোমধ্যেই ১৭ হাজার ৩৯৮ হেক্টর জমি পুড়ে গেছে । এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উইসিয়ং কাউন্টি, যেখানে মোট ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ৮৭ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, দেশটির ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম দাবানল বিপর্যয়। এর আগে ২০০০ সালে পূর্ব উপকূলে ২৩ হাজার ৯১৩ হেক্টর জমি ধ্বংস হয়েছিল।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার দেশব্যাপী সর্বোচ্চ স্তরের দাবানল সতর্কতা জারি করেছে। জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে, দাবানল-প্রবণ এলাকা থেকে কয়েদিদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
দাবানলের ভয়াবহতা স্বীকার করে দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হান ডাক-সু বলেছেন, ‘পাঁচ দিন ধরে আগুন জ্বলছে। এতে নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।’
জাতীয় জরুরি নিরাপত্তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সভায় তিনি আরও বলেন, এই দাবানল সমস্ত পূর্বাভাস ও প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে