জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন প্রত্যাহার
সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জনতার বিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আচমকাই দেশে জরুরি সামরিক আইন জারি করেন তিনি।
উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হাত থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সুরক্ষায় এবং রাষ্ট্রবিরোধী নানা শক্তিকে নির্মূল করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে দাবি করেছিলেন ইউন সুক-ইওল।
তবে সামরিক আইন জারির পরপরই রাস্তায় নেমে আসে বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা কোরিয়ার আইনসভা জাতীয় পরিষদের বাইরে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির আইনপ্রেণেতারা সর্বসম্মতভাবে প্রেসিডেন্টের সামরিক আইন জারির ফরমান প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর বুধবার ভোর নাগাদ সামরিক আইন বাতিলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় আইনসভা।
পরে ভোর সাড়ে ৪টায় ফের টিভিতে দেয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইউন বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে জাতীয় পরিষদ থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এবং আমরা সামরিক আইন বলবৎ করতে মোতায়েন করা সামরিক বাহিনীকে প্রত্যাহার করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জাতীয় পরিষদের আহ্বান মেনে নেব এবং মন্ত্রিসভা বৈঠকের মাধ্যমে সামরিক আইন তুলে নেব।’
সরকারের এই ‘ইউ-টার্নে’ রাস্তায় জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। চিৎকার করে তারা বলছিল, ‘আমরা জিতেছি!’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, একজনকে আনন্দে ড্রাম বাজাতেও দেখা দেখা গেছে।
এর আগে ১৯৭৯ সালে এক অভ্যুত্থানে দীর্ঘদিনের সামরিক শাসক পার্ক চুং নিহত হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করা হয়েছিল। তবে ১৯৮৭ সালে গণতন্ত্রে ফেরার পর দেশটিতে আর সামরিক আইন জারির প্রয়োজন পড়েনি। এর ফলে ৪৫ বছর পর আবার এই দমনমূলক আইন জারি করলে রাস্তায় নেমে আসে বিক্ষুব্ধ জনতা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে