অলিম্পিকের পদকস্তম্ভে দাঁড়াতে হলে
পঞ্চ বৃত্তের ইন্দ্রজালের মধ্যে পুরো দুনিয়া ঢুকে পড়েছে। জীবনের উৎসব অলিম্পিক পক্ষকাল ধরে মানবসমাজকে চুম্বকের মতো টানবে। একশত বছর পর প্যারিসে তৃতীয়বারের মতো আদম ও দর্শনভিত্তিক তারুণ্য আর যৌবনের পূজারিদের প্রাণ চঞ্চলময় অনুষ্ঠান। অলিম্পিক অনেক বিরাট বিষয়। এর আয়োজন তুলনাহীন। ১৯২৪ সালে প্যারিসে যখন অষ্টম আধুনিক অলিম্পিকের আয়োজন হয়েছিল সেই আয়োজনের আবেগ আর প্রাণের স্পন্দন ছিল অন্যরকম। কেননা আধুনিক অলিম্পিকের জনক, মানবতাবাদী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ফরাসি নাগরিক ব্যারন পিয়ের দ্য কুবারতিনের আইওসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে সেট ছিল শেষ অলিম্পিক। ফরাসি সাংগঠনিক কমিটি এবং আইওসি আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর অলিম্পিক উপহার দিয়ে আধুনিক অলিম্পিকের জনক এবং অলিম্পিক আন্দোলনের ‘প্রধান ড্রাইভিং ফোর্স’ কুবারতিনের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছে।
প্যারিসে এখন চলছে ৩৩তম আধুনিক অলিম্পিক গেমস। খণ্ডিত নয় পুরো পৃথিবী এখন প্যারিসে উপস্থিত। যে স্বপ্ন দেখেছিলেন কুবারদিন। অলিম্পিকের সার্বজনীন আবেদন ভীষণ শক্তিশালী। বিভিন্ন বর্ণ, ধর্মগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট স্বপ্ন ও লক্ষ্য বাস্তায়নের জন্য প্যারিসে সর্ববৃহৎ খেলার মেলায় এখন উপস্থিত। এখানে ভেদাভেদ নেই। প্যারিসে সবাই দেবেন আর নেবেন, মিলিবেন, মিলাবেন। ওরা কেউ শূন্য হাতে ফিরে যাবেন না। ২৯তম আধুনিক অলিম্পিক চীনের বেইজিং ২০০৮। চীন স্পোর্টস রাইটার ইউনিয়নের আমন্ত্রণে সুযোগ হয়েছিল বেইজিং অলিম্পিকের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চত্বরে স্মরণীয় কয়েকটি দিন কাটানোর। এটা ছিল আমার দুর্লভ এবং সব সময় স্মরণ রাখার মতো অভিজ্ঞতা। আমি তখন এশিয়ান স্পোর্টস প্রেস ইউনিয়ন (বর্তমানে এআইপিএস এশিয়া) এর গভর্নিং বডিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলাম।
উড়োজাহাজ থেকে নেমে এয়ারপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ‘জি’ গেট দিয়ে বেরিয়ে এসে দেখি ‘প্লে-কার্ড’ হাতে নাম লিখে দাঁড়িয়ে আছে এক হাস্যময় কিশোরী। প্লে-কার্ডে নামটি লেখা আছে আমি সেই ব্যক্তি বলার সঙ্গে সঙ্গে কিশোরী আমার সঙ্গে হ্যান্ডসেক করে বলল আমার নাম ঝাং লিং। আমি তোমার সঙ্গে লিয়াজোঁর দায়িত্ব পালন করব- বেইজিংয়ে তোমার অবস্থানকালীন দিনগুলোতে। তারপর হেসে বলল ইংরেজি ভালো না বলতে পারলেও আমি কিন্তু বুঝি অতএব, কোনো অসুবিধা হবে না। গাড়িতে তুলে বলল এর আগের ফ্লাইটে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এসেছেন এশিয়ান স্পোর্টস প্রেস ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ক্যাপ চুন পার্ক এবং তার দোভাষী অং। হোটেলে ‘ফ্রেস’ হবার দুই ঘণ্টার মধ্যে তোমাদের দুজনকে হোটেল থেকে নিয়ে যাবো প্রেস সেন্টারে সেখানে তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন চীন স্পোর্টস রাইটার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং এক্সিকিউটিভ বডির সদস্যরা।
হোটেলে যাওয়ার পথে ঝাং লিং আমাকে একটি ফোল্ডার দিয়ে বলেন এটি তোমার কাজে লাগবে। দেখলাম ১৯৫২ সালে ফিনল্যান্ডের হেলসিং ফি (১৫তম আধুনিক অলিম্পিক) অলিম্পিকের পর ৩২ বছর চীন অলিম্পিকে অনুপস্থিত ছিল। এই সময় তারা দেশের স্পোর্টস উন্নয়নে নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করেছে। চীন অলিম্পিকে আবার ফিরে এসেছে ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে। মনে পড়েছে বাংলাদেশ থেকে এই অলিম্পিকে প্রথম অংশ নিয়েছিলেন অ্যাথলেট সাইদুর রহমান ডন। তিনি ফ্ল্যাগ হাতে দেশের পরিচিতি তুলে ধরার পাশাপাশি জাতির স্বপ্ন বহন করেছেন। তিন যুগের পর গণপ্রজাতন্ত্রী চীন অলিম্পিকে ফিরে এসেছে নিজকে প্রস্তুত করে দাপটের সঙ্গে। তার প্রমাণ ১৫টি স্বর্ণ, ৮টি রৌপ্য, ৯টি ব্রোঞ্জ পদকসহ মোট ৩২টি পদক অর্জন।
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির নির্ধারিত প্রথম ১০টি দেশের পদক তালিকায় চীনের স্থান চতুর্থ। এর ১৬ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার সিডনি অলিম্পিকে পদক তালিকায় চীন তিনে। যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার পেছনে। চীনের অর্জন ২৮টি স্বর্ণ, ১৬টি রৌপ্য, ১৪টি ব্রোঞ্জসহ ৫৮টি পদক। এর চার বছর পর ২০০৪ গ্রিসের এথেন্স অলিম্পিকে চীন রাশিয়াকে পেছনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে তালিকায় চলে এসেছে, অর্থাৎ দ্বিতীয়। চীনের সংগ্রহ ৩২টি স্বর্ণ, ১৭টি রৌপ্য, ১৪টি ব্রোঞ্জ মোট ৬৩টি পদক। মিডিয়া সেন্টারে চীন অলিম্পিক সাংগঠনিক কমিটি এবং চীন স্পোর্টস প্রেস ইউনিয়নের শুধুমাত্র বিশেষভাবে আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে- মুখপাত্র একটি কথায় সবচেয়ে বেশি জোর দিলেন সেটি হলো আধুনিক অলিম্পিকের ইতিহাসে এর আগে যা কেউ কখনো দেখেননি- তা এবার দেখানোর অপেক্ষায় আছে বেইজিং।
তার আরেকটি কথা হলো বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন দেখবে এশিয়া ধারাবাহিকতার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। এবার আমাদের লক্ষ্য প্রথম হিসেবে নাম লেখানো। আর এর জন্য করা হয়েছে। সেই কাজ কতটুকু ভালো হয়েছে তা ক্রীড়া বিশ্ব এবার দেখতে পাবে। উদ্বোধনী ÔBIRDS NEST’ বা ‘পাখির নীড়’ স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে চোখ ছানাবড়া। অসাধারণ সব বিষয়। এলাহীকাণ্ড। স্থাপত্য, নির্মাণ শৈলী, চৈনিক সংস্কৃতি আর আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুধু মন কাড়েনি। নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের মুখোমুখি। চার ঘণ্টা ধরে ২০৫ দেশের প্রতিনিধি আর হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে ২৯তম বেইজিং অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্মৃতিপটে সব সময় জাগরূক থাকবে। আশপাশে বসা অতিথিদের একটাই কথা চীন এটা কি দেখাল। সত্যি নজিরবিহীন।
২০০৪ সালে বেইজিং অলিম্পিক বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছেন অ্যাথলেট মোহাম্মদ আবু আবদুল্লাহ, নাজমুল নাহার বিউটি, সাঁতারু রুবেল রানা ও ডলি আক্তার, শুটার ইমাম হোসেন এবং শারমীন আক্তার। মার্চ পাস্টে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেছেন সাঁতারু রুবেল রানা। সবার অংশগ্রহণ ওয়াইল্ড কার্ডে প্রাথমিক এবং প্রথম হিটে সবাই বিদায়। ক্রীড়াবিদ ও খেলোয়াড় মাত্রই স্বপ্ন ‘অলিম্পিয়ান হিসেবে সম্মান’ অর্জন। এদিকে দেশের প্রাপ্তি কিন্তু শূন্য। অলিম্পিকের পদকের সঙ্গে ভীষণভাবে জড়িয়ে আছে দেশের ভাবমূর্তি। বিশেষ সুবিধা থাকাতে প্রতিদিন প্রহরের পর প্রহর বিভিন্ন খেলার ভ্যানুতে উপস্থিত থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখার সুযোগ হয়েছে। অলিম্পিকে পদক জয়ের সম্মান তুলনাহীন। আর তা চাক্ষুস না দেখতে বোঝানো যাবে না।
অলিম্পিক চত্বরে সবচেয়ে বেশি দর্শকের উপস্থিতি অ্যাথলেটিকস এবং সুইমিং পুলের সাঁতারে। ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড় এবং ৪০০ মিটার রিলেতে জ্যামাইকার উসাইন বোল্টের দেশের হয়ে স্বর্ণ পদক জয়ের পর সেই আবেগময় অনুভূতি আর উল্লাস কখনো ভুলার নয়। অ্যাথলেটিকস চত্বরে বোল্টের সেই অ্যাকশন এখনো চোখে লেপ্টে আছে। অলিম্পিকের বিজয়স্তম্ভ যে কি জিনিস এবং এর আবেগ যে কত বেশি ঘন চাক্ষুস না দেখলে বুঝানো সম্ভব নয়। কেনো আমাদের দেশের অর্থের সমতুল্য কোটি কোটি টাকা বছরের পর বছর ব্যয় করে দেশে দেশে অ্যাথলেট তৈরি করা হয়- অলিম্পিক চত্বরে উপস্থিত থাকলে এটি বুঝা যায়। শুটিং রেঞ্জে ভারতের ক্রীড়া কলামিস্ট দীপক দেশপাণ্ডের পাশে বসে অভিনব বিন্দ্রাকে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে স্বর্ণ জিততে দেখেছি। স্বাধীন ভারতে অভিনব বিন্দ্রা প্রথম ক্রীড়াবিদ যিনি ভারতের হয়ে অলিম্পিকের ব্যক্তিগত ইভেন্টে প্রথম স্বর্ণ জয় করেছেন। ১৩০ কোটি মানুষ বিন্দ্রার স্বর্ণপদক জয়ে মুহূর্তের মধ্যে জেগে উঠেছে।
কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশের আসিফ হোসেন খান এই ইভেন্টে সোনা জিতেছেন আর তখন বিন্দ্রা জিতেছেন রৌপ্য পদক। আসিফ বৃহত্তর ক্রীড়াঙ্গন থেকে হারিয়ে গেছেন। আর বিন্দ্রা সোনা জিতে পুরো ভারতরকে গৌরান্বিত করার পাশাপাশি নিজেও মহিমান্বিত হয়েছেন। অলিম্পিক চত্বরে উপস্থিত থেকে ক্রীড়াবিদদের অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখতে দেখতে মনে হয়েছে আরও জোরে ছোট, আরও উঁচুতে ওঠ এবং আরও শক্তির পরিচয় দাও। মাতৃভূমির সম্মান এবং ভাবমূর্তি বৃদ্ধি এবং মানবজাতির অগ্রগতির জন্য অতিক্রম কর অনতিক্রম্য বাধা। এই অলিম্পিক আমাদের জন্য নয়। আমরা দয়ায় অলিম্পিকে অংশ নেই। প্রাথমিক পর্যায়ে এবং প্রথম হিটে বিদায়। অলিম্পিকের সেই অসাধারণ পরিচিতি ‘অলিম্পিয়ান’ তকমা সারা জীবনের জন্য অবশ্য থাকে। মাতৃভূমির এতে কোনো লাভ হয় না।
আমাদের ইচ্ছা সব সময় জীবিত; কিন্তু সেই ইচ্ছা এবং আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য যে উদ্যোগ নেওয়ার দরকার এখানে আমরা পরাজিত। ভীষণভাবে পিছিয়ে আছি। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা অধিষ্ঠিত দেশের অন্যতম একটি আমাদের বাংলাদেশ। দেশটি স্বাধীনতা লাভ করেছে পাঁচ দশক আগে। সেই দেশের একজন ক্রীড়াবিদ অলিম্পিকের বিজয়স্তম্ভে কাছে যাওয়া দূরের কথা এর আগের কোনো স্তরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেনি। আমরা সব সময় বলি আমরা অলিম্পিক পদক জিততে চাই। এর জন্য আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে অংশ নেব। দেশের নীতি নির্ধারকরা সব সময় বলেন অলিম্পিকে মেডেল জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় যা করার সবকিছু করা হবে। মুখের কথা মুখেই থেকে গেছে। উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তবায়নের চেষ্টা হয়নি। অলিম্পিক ছেলের হাতে মোয়া নয় যে কয়েকদিন প্রস্তুতি নিয়ে গেলেই কাজ হয়ে যাবে।
অলিম্পিকের বিজয়স্তম্ভে দাঁড়ানোর যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে কোনো শর্টকাট কোনো কিছু নেই। অলিম্পিকের বিজয়স্তম্ভে ওঠা একটি চিন্তাশীল পরিকল্পনার মোড়কে মোড়ানো বড় প্রকল্প। আর এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন অঙ্গীকার ইচ্ছাশক্তি দেশপ্রেম আর যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আছেন তাদের সম্মতিতে বড় অঙ্কের অর্থের জোগান। আমাদের মতো দেশে সরকারের তরফ থেকে অলিম্পিক বিজয় মঞ্চে ওঠার প্রকল্পে শতভাগ আর্থিক সাপোর্ট ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আর এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং খেলার জাতীয় ফেডারেশনগুলোর সংগঠকদের। প্রথম থেকেই সমন্বয়ের মাধ্যমে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং খেলার ফেডারেশনগুলো প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করতে হবে।
‘অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন’ প্রয়োজনে সব রকম সাহায্য সহযোগিতা করবে। ৮ বছর মেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ‘এস্টিমেটেড বাজেট’ অনুমোদন এবং এরপর আনুষঙ্গিক কিছু কাজ করার সব দায়দায়িত্ব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর সংগঠকদের। অলিম্পিকে টার্গেট করে ৮ বছর মেয়াদি অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির সময় ভাবতে হবে কোনো কোনো ব্যক্তিগত খেলায় আমাদের ক্রীড়াবিদ ও খেলোয়াড়দের সম্ভাবনা বেশি। এই বিষয়টি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ক্রীড়া ফেডারেশন বিশেষজ্ঞরা নির্ধারণ করবে। এই ক্ষেত্রে ক্রীড়াবিদদের বয়সের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আর প্রকল্পের আওতায় সব খেলা নিয়ে ২৫ জনের বেশি ছেলে ও মেয়ে খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদের বেশি বাছাই করা সঙ্গত নয়। এই ক্ষেত্রে আবার প্রত্যেক খেলায় খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদ বাছাইয়ের সময় বয়সের বিষয়টি তিনভাগে ভাগ করতে হবে।
আট বছরের জন্য খেলোয়াড় ক্রীড়াবিদ, দেশি-বিদেশি কোচ, বিদেশে স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি উচ্চতর প্রশিক্ষণ, খেলোয়াড় ক্রীড়াবিদদের পরিবারের জন্য নিয়মিত মাসিকভাতা, ক্রীড়াবিদদের জন্য মাসিক হাত খরচ ও স্বাস্থ্য খরচসহ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। পাশাপাশি আট বছর ধরে প্রকল্পের আওতায় বিশেষ জোনে অবস্থানকালীন থাকা খাওয়ার সব খরচ, প্রয়োজনীয় কিছু নতুন ক্রীড়া কাঠানো নির্মাণ আর পুরোনোগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন এসব কিছুই বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করে সরকারের উঁচু মহল থেকে এই বাজেট অনুমোদন পাবার পর সবাই মিলে ধর্মকর্ম পালনের মতো কাজে নেমে পড়তে হবে।
সুষ্ঠু প্রসেসের মধ্যে চললে এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস এবং অলিম্পিক থেকে পদক জয় অবশ্যই সম্ভব। চার বছরের মধ্যে আঞ্চলিক ক্রীড়া সাউথ এশিয়ান গেমসে প্রত্যক্ষভাবে লক্ষ্যণীয় হবে- প্রকল্প থেকে উন্নয়নের ফল। এভাবেই কাজ করে অন্যরা সফল হয়েছে, আমরা পারব না কেন? প্রকল্প পরিচালনায় ব্যয় হতে পারে দুইশত কোটি টাকা আপাতত। দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি এবং মানুষকে উজ্জীবিত এবং তরুণ ও যুব সমাজকে অনুপ্রাণিত করার জন্য রাষ্ট্রের জন্য এর ব্যয় অনেক বড় কিছু নয়। বরং দেশ এই প্রকল্প থেকে রিটার্ন পাবে অনেক বেশি।
লেখক: কলামিস্ট ও বিশ্লেষক। সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এআইপিএস এশিয়া। আজীবন সদস্য বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন। প্যানেল রাইটার ফুটবল এশিয়া।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে