ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সুবিধা পেতে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি
আশির দশকে তৎকালীন সামরিক-স্বৈরশাসক জেনারেল এইচ এম এরশাদ অপরিকল্পিত জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে ‘এক নম্বর জাতীয় সমস্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। তার এই বক্তব্য সেই সময় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেলেও এটা ছিল সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এই মন্তব্য। কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি তা পরিকল্পিতই হোক বা অপরিকল্পিতই হোক কখনো একটি দেশের জন্য এক নম্বর জাতীয় সমস্যা হতে পারে না। জনসংখ্যা এমনই এক সম্পদ, যার কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবীর উন্নয়ন অগ্রযাত্রা জনসংখ্যা ব্যতীত কোনোভাবেই কল্পনা করা যায় না। জনসংখ্যাকে পরিকল্পিতভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ এবং উৎপাদনশীল উপকরণে পরিণত করা গেলে তা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদে পরিণত হয়। আর জনসংখ্যা যদি অপরিকল্পিতভাবে বেড়ে ওঠে, তাহলে তা একটি দেশের জন্য ‘দায়’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার দায়িত্ব একান্তভাবেই রাষ্ট্রের। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার ব্যর্থতার দায় রাষ্ট্র কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। আরা যদি বাংলাদেশের দিকে দৃষ্টি দিই তাহলে দেখব, আমাদের এখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার ক্ষেত্রে অমার্জনীয় ব্যর্থতা রয়েছে, যার দায় কোনোভাবেই রাষ্ট্র এড়াতে পারবে না।
স্বাধীনতার ৫৩ বছর গত হয়েছে কিন্তু এখনো আমাদের দেশে জনসংখ্যাকে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার ও জনসম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে কোনো রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা গৃহীত হয়নি। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যত ‘আত্মমর্যাদা সম্পন্ন বেকার তৈরির’ কারখানায় পরিণত হয়েছে। একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করার পরও নিশ্চিত হতে পারছে না তারা উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে। কারণ যারা শিক্ষা লাভ করছে তাদের কোনো কারিগরি জ্ঞান নেই, যা ব্যবহার করে তারা কোনো প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি অথবা আত্মকর্মসংস্থান করতে পারবেন। জনসংখ্যাকে দক্ষ এবং উপযুক্ত কর্মী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা এবং উদ্যোগ গ্রহণ সবচেয়ে জরুরি হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করছে; কিন্তু কিভাবে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে সে সম্পর্কে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো চিন্তা-ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। বিগত সরকারের আমলে সাড়ে ১৫ বছরের একনায়কতান্ত্রিক শাসনামলে উন্নয়নের গল্প শুনতে শুনতে জাতি বেহুঁশ হয়ে পড়ার অবস্থা হয়েছিল; কিন্তু তাদের সেই উন্নয়নের মূল উদ্দেশ্যই ছিল রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটে নেয়া। তারা অবকাঠামোগত খাতে দৃশ্যমান উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে কার্যত জনসংখ্যাকে জনসম্পদের পরিণত করার আবশ্যকতার বিষয়টি ভুলেই গিয়েছিলেন। বাংলাদেশ আরও এক যুগ আগে (২০১২ সালে) ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থায় প্রবেশ করেছে; কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল ভোগ করার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। অর্থনীতিবিদ ও জনসংখ্যাতত্ত্ববিদরা মনে করেন, একটি জাতির জীবনে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থা একবারই আসে। আবার কারও কারও মতে, হাজার বছরে একবার এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।
একটি দেশের জনসংখ্যা যদি বয়স কাঠামোর বিবেচনায় প্রবৃদ্ধি সহায়ক ভূমিকা পালন করে তাহলে সেই অবস্থাকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলা যেতে পারে। জনসংখ্যাকে সাধারণত দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে কর্মক্ষম জনসংখ্যা এবং অন্যটি হচ্ছে নির্ভরশীল জনসংখ্যা। কর্মক্ষম জনসংখ্যার হার বা সংখ্যা যদি নির্ভরশীল জনসংখ্যার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে সেই অবস্থাকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলা যেতে পারে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড ইস্যুটি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকীর সঙ্গে আলাপ হলে তিনি বলেন, ‘কোনো দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার হার যদি মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি হয় তাহলে সেটাই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থা। বিশ্বব্যাপীই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডকে একটি দেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেসব দেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার সুফল ভালোভাবে এবং পরিকল্পিত উপায়ে কাজে লাগাতে পারে তারাই উন্নতির শীর্ষে আরোহন করতে পারে। বর্তমানে বিশ্বে যেসব দেশকে আমরা উন্নত দেশ হিসেবে জানি তারা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার সুফল পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে বলেই তারা উন্নতির শিখরে আরোহন করতে সক্ষম হয়েছে। পক্ষান্তরে, যেসব দেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার সুফল পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নয়ন অর্জন করতে পারেনি। কাজেই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার সৃষ্টি হলেই একটি দেশ উন্নয়নের শিখরে আরোহন করতে পারবে সব সময় তা নাও হতে পারে।’
বাংলাদেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ১৯৭২ সালে দেশের টোটাল ফার্টিলিটি রেট ছিল গড়ে ৬ দশমিক ৭ পয়েন্ট। অর্থাৎ প্রতিটি মহিলা তার সন্তান ধারণ ক্ষমতাকালে গড়ে প্রায় ৭টি করে সন্তান জন্ম দিতেন। মহিলাপ্রতি সন্তান জন্মদানের হার এখন ১ দশমিক ৯ শতাংশ। একটি শিশু জন্মগ্রহণ করার পর কর্মক্ষম হবার জন্য একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আবার নির্ভরশীল জনসংখ্যা বাড়ার জন্যও একটি সময়ের প্রয়োজন হয়। ২০৪০ সালে গিয়ে আমাদের কর্মক্ষম জনসংখ্যার হার কমতে শুরু করবে এবং ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থা শেষ হবে ২০৫০ সালে।
অর্থনীতির পরিভাষায় কর্মক্ষম জনসংখ্যা বলতে ১৫ বছর থেকে ৬৪ বছর বয়স পর্যন্ত জনসংখ্যাকে বুঝায়। কোনো দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার হার মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি হলেই তাকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলা হয়। বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ বা দুই-তৃতীয়াংশই এখন কর্মক্ষম। নির্ভরশীল জনসংখ্যার আবার দুটি ভাগ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে নিচের দিকের আর একটি ওপরের দিকের। নিচের দিকে নির্ভরশীল যে জনসংখ্যা থাকে তারা এক সময় পরিণত বয়সে পদার্পণ করে এবং কর্মক্ষম হয়; কিন্তু ওপরের দিকে নির্ভরশীল যে জনসংখ্যা থাকে তারা ক্রমেই আরো অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। নিচের যে নির্ভরশীল জনসংখ্যা তা হচ্ছে যাদের বয়স শূন্য থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত। আর ওপরের দিকের নির্ভরশীল জনস্যংখ্য হচ্ছে ৬৪ বছরের বেশি বয়সী মানুষগুলো। আমাদের যে ৬৮ শতাংশ কর্মক্ষম জনসংখ্যা আছে তাদের হিউম্যান ক্যাপিটালে পরিণত করার জন্য উপযুক্ত শিক্ষা-প্রশিক্ষণের কোনো উদ্যোগ রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণ করা হয়নি।
ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার সুযোগ সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে কীভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন অর্জন করা যায়, তার জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছে জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার সূত্রপাত হয়। সেই অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে তারা বিশ্ব অর্থনীতিতে দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়; কিন্তু পরবর্তীতে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থা শেষ হয়ে গেলে জাপানে বৃদ্ধ অর্থাৎ কর্মক্ষমতাহীন মানুষের হার বৃদ্ধি পেতে থাকে। জাপান বিশ্ব অর্থনীতিতে পিছিয়ে পড়তে শুরু করে। এদিকে চীন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জাপানের ৪৪ বছরের আধিপত্যকে অতিক্রম করে বিশ্ব অর্থনীতিতে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। চীনের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থাও এখন পড়ন্তবেলায় রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতও বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। ভারত বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
একটি দেশের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বা হার যখন বেশি হয়, তখন দেশটি তুলনামূলক সস্তায় শ্রম শক্তির জোগান নিশ্চিত করতে পারে। শ্রমিকের মজুরি তুলনামূলকভাবে কম হলে বাইরের বিনিয়োগ আকর্ষণ করা সহজ হয়। মোট জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশই যখন কর্মক্ষম তাদের যদি উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে তা দেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বিরাট সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। প্রবৃদ্ধি যখন উচ্চ মাত্রায় হতে থাকে, তখন সেই দেশটির জনগণের আয় বৃদ্ধি পায়, সঞ্চয়ের সামর্থ্য বাড়ে। মানুষের আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঞ্চয় বৃদ্ধির নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। বাংলাদেশ ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাংকের রেটিংয়ে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের প্রাথমিক তালিকায় স্থান দিয়েছে।
২০২৬ সালে বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হবে; কিন্তু এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমরা কতটা আন্তরিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। বাংলাদেশ যদি টেকসই উন্নয়ন অর্জন করতে চায় তাহলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এজন্য অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে উন্নয়ন কার্যক্রমে অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে হবে; কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের চরম ব্যর্থতা রয়েছে। অনেক দিন ধরেই ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের হার জিডিপির ২২ থেকে ২৩ শতাংশে ওঠানামা করছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকালে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের হার জিডিপির ২৮ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকলেও তা অর্জিত হয়নি। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য সঞ্চয়ের হার বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ যদি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নয়ন অর্জন করতে চায় তাহলে সঞ্চয়ের হার বাড়াতে হবে। বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ে সঞ্চয়ের হার হচ্ছে ২৪ শতাংশের মতো। এটা অন্তত ৩৬ শতাংশে উন্নীত করতে হবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় ধরনের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ট্যাক্স আদায় করতে না পারা। বাংলাদেশের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র শ্রীলঙ্কার ওপর রয়েছে। জাপানের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও হচ্ছে ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ। দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেত্রে এটা ৩২ শতাংশ। অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়ার ট্যাক্স আদায়ের পরিমাণ হচ্ছে মোট জিডিপির ৩২ শতাংশ। চীনের ক্ষেত্রে এটা ২০ দশমিক ১ শতাংশ, ভিয়েতনামে ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ১২ দশমিক ২ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ, ভুটানে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ, পাকিস্তানে ১০ শতাংশ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। শ্রীলঙ্কায় ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। বাংলাদেশের ট্যাক্স আদায় ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল ও দুর্নীতিগ্রস্ত।
এই অবস্থায় আমরা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থার সুফল কিভাবে অর্জন করব? বিগত সরকার ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সুবিধা প্রাপ্তির জন্য কার্যত তেমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল কিভাবে অবকাঠামোগত খাতে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ ও ভোগ করা যায়। বাংলাদেশে অতীতেও যারা রাষ্ট্র এবং সরকারপ্রধান ছিলেন তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে; কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যগণ যেভাবে দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন তার আর কোনো সময় দেখা যায়নি। আমরা যদি ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড এর সুযোগ গ্রহণ করতে চাই তাহলে জরুরি ভিত্তিতে জনসংখ্যাকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন ও অধিকতর উৎপাদনক্ষম করে তোলার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় আগামীতে আমাদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না।
এম এ খালেক: অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি ও অর্থনীতিবিষয়ক লেখক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে