বাধার মুখে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারলেন না বাংলাদেশের বিশিষ্টজন
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গীয় গ্রন্থাগার পরিষদের ১০০ বছর পূতি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ফলে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের কয়েকজন প্রতিনিধি এসেছেনও কলকাতায়।
তবে এ নিয়ে আপত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দ্বারস্ত হন। তাদের দাবি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তিত্বকে আসতে দেয়া যাবে না। পরবর্তীতে, কোনরকম অশান্তির পরিস্থিতি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশি আমন্ত্রিতদের ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। এদিকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হবে। ভারত থেকেও অতিথিদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ফলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রভাব ঢাকার কর্মসূচিতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেছেন, ‘বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে দেয়া হয়নি। শিক্ষার্থীরা বলেন, বাংলাদেশ প্রতিদিনই অপমান করছে। এ কারণে ক্যাম্পাসে বাংলাদেশিদের আসা নিয়ে তাদের আপত্তি ছিল।’ শিক্ষার্থীদের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের অংশ নিতে 'না' বলেন। তিনি বলেন, "প্রথমে আমরা শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরে বুঝতে পারি, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাই আসল। ক্যাম্পাসের কোনো ক্ষয়ক্ষতি আমরা চাই না। বাংলাদেশের অতিথিদের নিরাপত্তার কথাও চিন্তা করেছি। তাই বাংলাদেশের নাগরিকদের বাদ রেখেই এই অনুষ্ঠান করার জন্য আয়োজকদের বলা হয়েছে।"
এদিকে ভারতের বিখ্যাত গায়ক কবীর সুমন জানান, "আমার লজ্জা করছে। ধিক্কার জানাচ্ছি। যেসব ছাত্র এটা করেছেন, তারা অন্যায় করেছেন।"
কলকাতার বিশিষ্ট অধ্যাপক অশোক চক্রবর্তী বলেন " যারা এইধরনের ব্যবহার করছেন ওপার বাংলা থেকে আসা অতিথিদের সঙ্গে তারা শুধু অন্যায়ই করছে না। বরং তারা নিজের দেশকেও বাইরের দেশের কাছে হেয় করছেন।"
তিন দিনব্যাপী ওই অনুষ্ঠান শুরু হয় শুক্রবার। তাতে উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ থেকে চারজন কলকাতায় আসেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বঙ্গীয় গ্রন্থাগার পরিষদ। তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার গ্রন্থাগার আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে ১৯২৫ সালের ২০ ডিসেম্বর পথ চলা শুরু করেছিল বঙ্গীয় গ্রন্থাগার পরিষদ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে