Views Bangladesh Logo

ঈদের ছুটির আগেই সিলেটে হোটেল বুকিং প্রায় শেষ, ঢল নামবে পর্যটকদের

দুল ফিতরের ছুটি শুরুর আগেই জনপ্রিয় পর্যটন জেলা সিলেটের কটেজগুলোর ৭০ শতাংশ এবং হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোর প্রায় ৫০ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকদের নিরাপদে ঈদ আনন্দ উপভোগে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

এবারের ঈদুল ফিতরে লম্বা ছুটি পেতে যাচ্ছেন দেশবাসী। রোজা ৩০টি হলে ঈদ হবে ১ এপ্রিল। আর ২৯টি রোজা হলে ঈদ হবে ৩১ মার্চ। ফলে ঈদের পর ৫/৬ দিনের দীর্ঘ ছুটি কাটানোর সুযোগ থাকছে। তাই এবার সিলেটে অন্যবারের চেয়ে বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা।

আর এবারের ব্যবসা দিয়ে গেল কয়েক বছরের বন্যা ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় যে ক্ষতি হয়েছে তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে মনে করছেন তারা। পর্যটকদের বরণে হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টগুলোর সংস্কারও করেছেন ব্যবসায়ীরা। পর্যটক আকর্ষণে কেউ কেউ হোটেলে নতুন করে সাজসজ্জাও করেছেন।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভালোমানের হোটেলগুলোর প্রায় ৭৫ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছুটিতে অবকাশ যাপনে সবার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে প্রকৃতিকন্যা সিলেট। সরকারি বা উৎসবের যে কোনো ছুটিতে মনোমুগ্ধকর পাহাড়, নদী, টিলা আর দিগন্ত বিস্তৃত সবুজের চা-বাগান ঘেরা রূপের রানি এ জেলামুখী হন দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। বিশেষত ঈদে ঢল নামে পরিবার-পরিজন সঙ্গে নিয়ে আসা পর্যটকদের। টানা এক মাস সিয়াম সাধনার পর কর্মজীবনের ক্লান্তি ভুলতে প্রতি ঈদেই লাখ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটে। জাফলং, সাদাপাথর, বিছনাকান্দি, সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল, পান্তুমাই ও দিগন্তজোড়া চা-বাগানসহ প্রকৃতির সাজানো-গোছানো অপার সৌন্দর্যের এই লীলাভূমিকে প্রাণভরে উপভোগ করেন তারা। হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরানের (রহ.) মাজার জিয়ারতেও স্বস্তি পান এ পুণ্যভূমিতে এসে।

তাই ঈদের লম্বা এ ছুটি ঘিরে আরও চাঙা হবে এখানকার পর্যটন খাত।

নগরীর মীরব্ক্সটুলার হোটেল সিলেট ইনের মহাব্যবস্থাপক জুয়েল আহমদ জানান, তার হোটেলের দুই-তৃতীয়াংশ রুম ঈদের পরবর্তী এক সপ্তাহের জন্য বুকিং হয়ে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে বাকি রুমগুলোও বুকিং হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অগ্রিম বুকিং দিয়ে না এলে এবার সিলেটে এসে পর্যটকরা হোটেল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ারও শঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।

সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী চৌধুরী জুয়েল জানান পর্যটকদের বরণে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। ঈদকে ঘিরে হোটেলগুলোর নতুন ডেকোরেশন করা হয়েছে। পর্যটকদের হোটেল বুকিং নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সাবেক সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল বলেন, গত কয়েক বছর বন্যা ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যটন খাত ও ব্যবসায়ীরা ছিলেন লোকসানের মুখে। এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা চললেও হঠাৎ ছিনতাই-ডাকাতির মতো ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকদের আগমন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলা পুলিশের মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. সম্রাট তালুকদার জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রতিটি স্পটে থাকছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করা হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পোশাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।

জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের নির্বিঘ্নে বেড়াতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন জেলা প্রশাসনের গাইডরা।



মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ