তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ছয়টি সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি
তরুণ প্রজন্মের সুস্থ ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের’ ছয়টি সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছে নবগঠিত তামাকবিরোধী শিক্ষক ফোরাম।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে নারী মৈত্রীর সভায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত হয় ফোরামটি।
ফোরামের আহ্বায়ক মনোনীত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. খালেদা ইসলাম। সহ-আহ্বায়ক হয়েছেন বাংলাদেশ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তনুশ্রী হালদার ও বাংলা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক শামীমা নাসরীন।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলির সভাপতিত্বে সভায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সীমা জহুর এবং তামাক বিরোধী মা ফোরামের আহ্বায়ক শিবানী ভট্টাচার্য ও সহ-আহ্বায়ক শাহনাজ পলি।
সভায় নারী মৈত্রীর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর নাসরিন আক্তার বলেন, ‘তামাক সেবনে বাংলাদেশে দিনে ৪৪২ জন মারা যান। এই দুঃখজনক পরিসংখ্যান আমাদের জনস্বাস্থ্য এবং জীবন রক্ষার প্রচেষ্টায় গভীর সংকট তৈরি করেছে। যদিও বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশগুলোর একটি, তবুও আমরা এখনও ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত এবং তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচার নিষিদ্ধের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম মান অর্জনে পিছিয়ে আছি’।
ফোরামের আহ্বায়ক ড. খালেদা খানম বলেন, ‘অল্প বয়সে ধূমপানে আসক্ত কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা দিন দিন অবনতি ঘটছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গ্লোবাল ইয়ুথ টোব্যাকো সার্ভে’ অনুসারে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ধূমপানের হার বাংলাদেশ, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ায় সবচেয়ে বেশি। দেশের ১২ শতাংশ কিশোর-কিশোরী নিয়মিত ধূমপানে আসক্ত, যা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য গুরুতর সংকেত। তাই তরুণদের সুরক্ষায় যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস করা জরুরি’।
সীমা জহুর বলেন, ‘নানাভাবে তরুণদের ক্ষতিকর তামাকপণ্যে আকৃষ্ট করছে তামাক কোম্পানিগুলো। তারা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোকে এর প্রধান কেন্দ্রে পরিণত করেছে। তামাক কোম্পানির বিজ্ঞাপন, প্যাকেজিং, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ক্যাম্পাসের আশেপাশে তামাকের দোকানের সহজলভ্যতা শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করছে’।
শিক্ষক ফোরামের অন্য সদস্যরাও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীগুলো দ্রুত পাস হলে সুস্থ, নিরাপদ ও তামাকমুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। যেখানে তারা সুস্থ থাকবে, সুস্থ থাকবে দেশ। তাদেরকে সুস্থ মানসিকতায় জাতির প্রতি দায়িত্বশীল নাগরিক হতে হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে