Views Bangladesh Logo

বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত, লাগাম টানবে কে?

Masum   Hossain

মাসুম হোসেন

র্তমান সময়ে আতঙ্কের আরেক নাম কিশোর গ্যাং। শুধু শহরই নয়, গ্রামের অলিগলিতেও বেড়েছে তাদের উৎপাত। তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে পড়েছে যে, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেইসঙ্গে আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না সাধারণ মানুষের। পুলিশ সদস্যসহ সাংবাদিকরাও হচ্ছেন হামলার শিকার।

সম্প্রতি বগুড়ায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হন দুই পুলিশ সদস্য।

তারা হলেন বগুড়া ফুলবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আহম্মদ আলী। দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেল হেফাজতে নিতে গিয়ে তারা কিশোর গ্যাংয়ের বাধার সম্মুখীন হন। একপর্যায়ে তাদের মারধর করা হয়।

গত ১৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়া শহরের কালীতলা এলাকায় হামলার ওই ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেন।

সপ্তাহ দুয়েকের বেশি সময় আগের ঘটনা। নিজের মুদি দোকানির বাজার করতে বগুড়া শহরে গিয়েছিলেন শান্ত। তবে বাজারে যাওয়ার আগেই জলেশ্বরীতলা এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি। চার থেকে পাঁচজন কিশোর তাকে চাকু ধরে তার কাছে থাকা সাড়ে সাত হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে চলে যায়। শান্ত বগুড়ার বনানী এলাকার বাসিন্দা।

এর আগে, গত ৭ এপ্রিল বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় খোরশেদ আলম ও আসাফুদৌলা নিওন নামে দুই সাংবাদিক কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হন। তাদের মধ্যে খোরশেদ আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি আর নিওন বগুড়া লাইভ নামে অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিজস্ব প্রতিবেদক। হামলায় নিওন গুরুতর আহন হন।

সাংবাদিক খোরশেদ আলম জানান, তাদের ওপর হামলার কারণ এখনো অজানা। বিনা উস্কানিতে তাদের মারধর করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।

বগুড়া শহরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের অলিগলিতে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আড্ডা দিতে দেখা যায়। তারা দলবেঁধে থাকে। তারা এমনভাবে অবস্থান করে যে, যে কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির জন্য প্রস্তুত থাকে। তাদের কাছে ধারালো অস্ত্রও থাকে। শুধু এখানেই শেষ নয়, তারা যখন মোটরসাইকেলের শোডাউন দেয়, ওই সময় তাদের গতি থাকে বেপরোয়া। তাদের উদ্দেশ্যই হলো আতঙ্ক সৃষ্টি করে প্রভাব বিস্তার করা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহর এলাকা ছাড়াও গ্রামাঞ্চলেও কিশোর গ্যাংয়ের বিস্তার ঘটেছে। বগুড়ার শাজাহানপুর, গাবতলী, শিবগঞ্জ, আদমদীঘি, সোনাতলা, শেরপুর, ধুনট, সারিয়াকান্দি, কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলায়ও বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত। আমরা চাইলে সবই সম্ভব- এমন ধারণা থেকে তারা বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ। তবে শুধু কিশোরই নয়, বিভিন্ন বয়সের যুবকরাও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য রয়েছেন।

বগুড়া জেলার বাসিন্দা ইবরাহীম হোসেন, বাবু মিয়াসহ অন্তত ২০ জন জানান, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের তেমন কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর হলে কিশোর গ্যাং বেপরোয়া হয়ে উঠত না। বর্তমান সময়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রাস্তায় চলতে গেলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি থেকে তারা রক্ষা পেতে চান।

জানতে চাইলে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। তাদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ