ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করবে যে সমীকরণ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। চলছে রাজনৈতিক সমীকরণ মেলানোর চেষ্টাও। নির্দলীয় , নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এবার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো। অন্যদিকে অনড় অবস্থানে থেকেই নির্বাচন সম্পন্ন করার সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণাও জমে উঠেছে। প্রার্থীদর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন স্থানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাতের ঘটনাও ঘটছে।
তবে নির্বাচনে যেহেতু বিএনপির মতো একটি বড় রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করছে না ,তাই এবার ভোটার উপস্থিতি নিয়ে দেখা দিতে পারে সংকট, তাতেই নির্বাচন হতে পারে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি অংশ। আর এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। মূলত এ কৌশলটিই এবারের নির্বাচনি প্রচারণাকেও জমিয়ে দিয়েছে।
দেশে অনুষ্ঠিত ১১টি জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে তত্ত্বাবাধায়ক সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির প্রাপ্ত ভোটের হার পাশাপাশি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি ছিল।
১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে মোট প্রদত্ত ভোট ছিল ৩,৪৪,৭৭,৮০৩টি, যা মোট ভোটারের ৫৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এই প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ৩০ দশমিক ০৮ শতাংশ পায় আওয়ামী লীগ। সেবার তারা আসন পেয়েছিল ৮৮টি। একই জায়গায় সে নির্বাচনে ৩০ দশমিক ৮১ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৪০টি আসনে জয়ী হয়েছিল বিএনপি। সেসময় জাতীয় পার্টির প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং বিজয়ী আসন ছিল ৩৫টি। এ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ১৮টি আসনে জয়ী হয়ে পেয়েছিল মোট প্রদত্ত ভোটের ১২ দশমিক ১৩ শতাংশ।
১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছিল ৪,২৮,৮০,৫৭৬টি বা মোট ভোটারের ৭৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ ভোট, যার মধ্যে ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ পেয়েছিল আওয়ামী লীগ এবং তারা আসন লাভ করেছিল ১৪৬টি। ১১৬টি আসনে জয়ী হয়ে বিএনপি পেয়েছিল ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ ভোট। এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ৩২টি আসন, মোট প্রদত্ত ভোটের ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ ভোট পড়েছিল তাদের ঘরে। এ নির্বাচনে জামায়াত ৩ আসন পেলেও তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৮ শতাংশ।
২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে মোট প্রদত্ত ভোট ছিল ৫,৬১,৮৫,৭০৭টি, যা মোট ভোটারের ৭৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এই নির্বাচনে ১৯৩টি আসনে জয়ী হয়ে বিএনপি পেয়েছিল মোট প্রদত্ত ভোটের ৪০ দশমিক ৯৭ শতাংশ ভোট। আওয়ামী লীগ ৬২টি আসনে জয়ী হয়ে পেয়েছিল মোট প্রদত্ত ভোটের ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট। এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এবং ঐক্যফ্রন্ট যৌথভাবে পেয়েছিল ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ ভোট, তারা জিতেছিল ১৪টি আসনে। এ ছাড়াও জামায়াত ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছিল ১৭টি আসনে। পরপর তিনটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির ভোট ব্যাংক খুবই কাছাকাছি বলেই দেখা যায়।
২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় নির্বাচনে মোট প্রদত্ত ভোট ছিল ৭,০৬,৪৮,৪৮৫টি, যা মোট ভোটারের ৮৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল মোট প্রদত্ত ভোটের ৪৮ দশমিক ০৪ শতাংশ ভোট এবং তারা বিজয়ী হয়েছিল ২৩০টি আসনে। একই জায়গায় এ নির্বাচনে বিএনপি ৩০টি আসনে জয়ী হলেও প্রদত্ত ভোটের ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট পড়েছিল তাদের ঘরে। এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিল ২৭টি আসনে। জামায়াত পেয়েছিল মোট প্রদত্ত ভোটের ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ ভোট, তারা জয়ী হয়েছিল দুটি আসনে।
পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নানান জল্পনা-কল্পনার পর বিএনপি অংশ নিলেও, ভোট কারচুপির অভিযোগে দিনের শুরুতেই প্রার্থী তুলে নেয় তারা। ফলে এ দুটি নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে কে কত শতাংশ ভোট পেয়েছে, সে হিসাব হয় না।
বিগত সময়ের নির্বাচনগুলো দেখলে, এটা পরিষ্কার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রাপ্ত ভোটের হার কাছাকাছি। আরও লক্ষণীয় হচ্ছে, ২০০১ সালের পর আওয়ামী লীগের ভোট উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, আর কমেছে বিএনপির। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চারটি নির্বাচনে বিএনপির মিত্র জামায়াতের ভোট ক্রমাগত কমেছে। একইভাবে জাতীয় পার্টির ভোটও ১৯৯১ সালের তুলনায় অন্যান্য তিনটি নির্বাচনে কমেছে।
আগের ভোটের হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের গড়ে ৪০ শতাংশ ভোটার রয়েছে। আর বিএনপির গড়ে ৩৫ শতাংশ। এই হিসাবে বিএনপি ও জামায়াতের ভোট যোগ করলে এবার নির্বাচনে ৩৯ শতাংশ ভোটার আসবেন না। অর্থাৎ ৬১ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করার সুযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের। এই ৬১ শতাংশের মধ্যে ৪০ শতাংশ আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক। বাকি ৭ শতাংশ জাতীয় পার্টির ভোটব্যাংক অর্থাৎ ৪৭ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি মোটামুটি নিশ্চিত। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে সচেষ্ট থাকবে। এমনকি জেতার জন্য বিএনপি সমর্থক ভোটারদের ভোট পাওয়ার জন্যও তাদের চেষ্টা থাকবে। এ অবস্থায়, আরও ৫ থেকে ১০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ভোট ব্যাংকের ভোটারদেরও একটা অংশ নানা কারণে ভোটকেন্দ্রে আসবেন না। অতএব, যোগ-বিয়োগের হিসাবে থেকে বিএনপিবিহীন এবারের নির্বাচনে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা খুব কঠিন হবে না।
ভোটার উপস্থিতির হার নির্বাচনের বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এক পার্টি তো না । একাধিক পার্টি নির্বাচনে নাই, যাদের কিছু কিছু ভোট আছে তারাও নির্বাচনের বাইরে। বাম দলগুলোর কিছু হলেও ভোট আছে, কিছু কিছু জায়গায় তো তাদের সমর্থক আছে। ইসলামিক দলগুলোরও অনেক সমর্থক রয়েছে। চরমোনাই পীর দক্ষিণবঙ্গে খুবই পপুলার। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও তারা অনেক প্রতিষ্ঠিত দলের থেকেও অনেক বেশি ভোট পেয়েছে। তারা কেউ এবার নির্বাচনে নেই। এসবের পরেও ভোট দেখাতে তো কোনো অসুবিধা নাই। তবে ভোট আসলে কতখানি হবে, সেটা একটা বড় বিষয়, বড় কথা।’
দলীয়, স্বতন্ত্র কিংবা ডামি প্রার্থী যখন একই দলের তখন নির্বাচনি সংঘাতের সম্ভাবনা কতটুকু? এই পরিস্থিতি ভোটার উপস্থিতিতে কেমন প্রভাব ফেলবে? এমন প্রশ্নের জবাবে এই সাবেক নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘নির্বাচনি সংঘাত শুরু হয়ে গেছে। এখানে যেহেতু এক দলেরই প্রার্থী বিভিন্নভাবে, সেহেতু অন্য দলের ভোটাররা ভোট দেবে না। যত শতাংশই ভোটই পড়ুক না কেন, সেটা যদি সঠিকও হয়, তবুও লোকে বিশ্বাস করবে না। এখানে বিশ্বাস যোগ্যতার কোনো বিষয় নাই।’
আওয়ামী লীগের দলীয়, স্বতন্ত্র, ডামি, জোট এবং শরিকরা মাঠে নামালেও, বিএনপি নির্বাচনের বাইরে। ফলে বিএনপির এই ভোটের ব্যবহার হবে কীভাবে! এই ভোট পাবে কারা! বিএনপির অনুপস্থিতি মোট প্রদত্ত ভোটের হারকে প্রভাবিত করবে কি না! বা বিএনপির এই ভোট আওয়ামী লীগের ঘরেই পড়বে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) সভাপতি প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের হাই-কমান্ড নির্দেশ দিয়েছে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য। তবে বাংলাদেশের যে বাস্তবতা এখানে এর একটা অংশ ঠিকই যাবে না। তবে আরেকটা অংশ যাবে। কারণ নির্বাচনে টাকা ওড়ে, ফলে নগদ নারায়ণের যে প্রভাব, তা পড়বে। এ ছাড়াও আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থায় প্রার্থিরাই মূলত ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যাপারে বড় ভূমিকা পালন করেন। তো এখানে সেটার একটা প্রভাবও আছে। যেহেতু সব জায়গায় একাধিক প্রার্থী রয়েছে। ফলে এগুলো ভোটার উপস্থিতি বাড়াবে। এটা ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। যদিও আমাদের দেশের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোট পেতে হবে- এমনটি বলা নেই। অন্যদের তুলনায় এক ভোট বেশি পেলেও জয়ী হিসেবে বিবেচ্য হবে। এমনকি শূন্য ভোট পেলেও জয়ী হতে পারবে, যদি অন্য কেউ নির্বাচনে না দাঁড়ায় বা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়।’
নির্বাচনে শক্তিশালী প্রার্থীদের সবাই যেহেতু ক্ষমতাসীন দলের, সেহেতু সংঘাতের সম্ভাবনা অনেক বেশি, যা এরই মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। যেখানে মানুষ মারাও গিয়েছে। গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে। মোর্শেদ সাহেবের মতো মানুষ মারাত্মক হেনস্তা হওয়ার বিষয়টিও নজর কেড়েছে মন্তব্য করেন জানিপপ সভাপতি।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দ্বিতীয় পার্টি হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, ‘এবারের জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ২০১৪ সালের তুলনায় বেশি হবে। বিএনপি না থাকলেও যেহেতু আওয়ামী লীগের দলীয় এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে, ফলে অনেক জায়গায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হবে। তারা দ্বিতীয় পার্টি হিসেবে আর্বিভূত হবে এবং জাতীয় পার্টি তৃতীয় অবস্থানে থাকবে।’
নির্বাচনে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের মতো ভোটার উপস্থিতি থাকবে বলেও মনে করেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। তিনি বলেন, ‘দেশের এই পরিস্থিতিতে বিএনপি নির্বাচন বয়কটের যে ডাক দিয়েছে, তা বাস্তবায়িত হবে না। নির্বাচন প্রতিযোগিতাপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণভাবেই হবে। এখানে ভোটার কত শতাংশ হলো, তা মুখ্য বিষয় নয়। কাজেই ভোটার উপস্থিতি যদি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে থাকে সেটাকেই ভালো বলব। শুধু যেটা দেখার বিষয়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটা প্রভাবমুক্ত নির্বাচন হয় কি না! ভোটাররা যদি ভোট প্রদান করতে পারেন এবং তাদের চাওয়া নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়, তাহলেই এটি সর্বমহলে প্রশংশিত হবে।’
নির্বাচনের মাঠে থাকলেও অনেকটা আসন ভাগাভাগিতে ভাটা পড়েছে ১৪ দলীয় জোট এবং জাতীয় পার্টির বেলায়। এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তার শরিক দলগুলোকে ছেড়েছে ৩২ আসন। যেখানে ২৬টি পেয়েছে জাতীয় পার্টি। ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি, জাসদ তিনটি ও জাতীয় পার্টি (জেপি) একটি আসন পেয়েছে। তবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনে জোটভুক্ত থেকে এর থেকে বেশি আসনে ছাড় পেয়ে জয়ী হয়েছিল আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলো। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি জিতেছিল ৩৪টি আসনে, ওয়ার্কার্স পার্টি ৬টি এবং জাসদ-(ইনু) ০৫টি আসন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও তাদের জন্য বরাদ্দকৃত আসনের সংখ্যা ছিল এর থেকে বেশি। দেশের সর্বশেষ এই জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট ভুক্ত থেকেই জাতীয় পার্টি জিতেছিলে ২২টি , ওয়ার্কার্স পার্টি ০৩টি এবং জাসদ-(ইনু) ২টি আসন। তবে এবারের সমীকরণ ভিন্ন। মহাজোটের আসন ছাড়ার আগে অনেকটা অসন্তোষ থাকতে দেখা গেছে জোটের এই শরিক দলগুলোকে।
শরিকদের অসন্তোষ নির্বাচনের মাঠে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, “কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের শরিকরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হবে। আসন দেয়া মানেই তো জিতিয়ে আনার নিশ্চয়তা দেয়া নয়। জিততে হবে নিজেদের যোগ্যতায়। এটা জনগণের ভোটেই হতে হবে। এখন জোটের নেতৃবৃন্দ যদি নিজ যোগ্যতায় জিততে না পারে, তাহলে তাদের জেতাবে কে! তাদের নৌকা মার্কা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এরপরেও যদি তারা ব্যর্থ হয়, এর অর্থ তাদের সংগঠন নাই, জনসমর্থন নাই। তারা অযথায় একটা দল নিয়ে বসে আছে। তাদেরও এই বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে হবে। দেখবেন এমনো হতে পারে নির্বাচনের পরে জোটের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার ঘোষণাও দিতে পারেন।“
এখনো জোটের আবশ্যিকতা আছে উল্লেখ করে এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আরও বলেন, “তবে জোটকে শক্তিশালী করতে কাউকে কাউকে হয়তো মহিলা আসনে নিয়ে আসা হতে পারে। জোট তো একটা আদর্শকে কেন্দ্র করে হয়েছে, সেই আদর্শের এখনো অবসান ঘটেনি। ফলে জোটের আবশ্যিকতা রয়েছে। তাই জোটকে শক্তিশালী করা দরকার। আরও সমমনাদের জোটভুক্ত করাও দরকার।“
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে