তিন দিনব্যাপী ৮ম বাংলাদেশ স্কুল অব ইন্টারনেট গভর্নেন্স-২০২৪ অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের (বিআইজিএফ) উদ্যোগে ২৫-২৭ এপ্রিল তিন দিনব্যাপী ৮ম বাংলাদেশ স্কুল অব ইন্টারনেট গভর্নেন্স-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনে অনুষ্ঠানের সমাপনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌ: মো: মহিউদ্দিন আহমেদ।
স্কুল অব ইন্টারনেট গভর্নেন্সের সম্মিলনে মোট ১৪টি সেশনে বিটিআরসি’র কর্মকর্তাবৃন্দ, টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
৮২ জন ফেলোর অংশগ্রহণে তিন কর্মদিবসে বৈশ্বিক ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংগস (আইওটি) বিগ ডাটা , ডোমেইন নেইম সিস্টেম (ডিএনএস), ইন্টারনেট ইকোসিস্টেম, নিরাপদ ইন্টারনেট প্রযুক্তি, , ডাটা প্রটেকশন, টেলিযোগাযোগ ও ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে জিরো ডিজিটাল ডিভাইড সম্পর্কে আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌ: মো: মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, যেহেতু প্রযুক্তি মানুষের জন্য, তাই প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। উন্নত, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইডের ধরন ভিন্ন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তবে সময়ের সঙ্গে মানুষ তার নিজ প্রয়োজনে প্রযুক্তিকে গ্রহণ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা চালকবিহীন গাড়ির চেয়ে আমাদের জরুরি প্রয়োজন উচ্চগতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা।’
দেশের জন্য যেসব প্রযুক্তি প্রয়োজন, সেগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করার আহবান জানিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, দেশকে সমৃদ্ধশালী করতে তরুণ মানবশক্তিকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি, স্মার্ট বাংলাদেশের সুফল ভোগ করতে হলে প্রতিটি নাগরিককে প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সেমিনারের তৃতীয় দিনে আইন ও প্রযুক্তি সেশনের সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসি’র ভাইস-চেয়ারম্যান মো: আমিনুল হক। তাঁর মতে, প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ নয় বরং প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা প্রয়োজন হয়।
একই দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনায় বিটিআরসি’র স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘টাওয়ার থেকে নির্গত রেডিয়েশন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, তাই টাওয়ার স্থাপনে জনগণকে উৎসাহিত করতে হবে।’
দেশেই বিপুল পরিমাণ স্মার্টফোন উৎপাদিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ১৭ টি কারখানায় মোট চাহিদার ৯৬ শতাংশ আজ দেশে উৎপাদিত হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ) চেয়ারপারসন জনাব হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘ডিজিটাল বিভক্তি শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা চ্যালেঞ্জ হলেও যেহেতু প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, তাই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। দেশে ডিজিটাল অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে ডিজিটাল অবকাঠামো, ডিজিটাল সেবা এবং সেবা গ্রহণের বিষয়গুলো উন্নত ও সহজলভ্য করতে হবে।’
ডিজিটাল অংশগ্রহণ বাড়লে একই সঙ্গে অর্থনৈতিক ও নারী-পুরুষের মধ্যকার বৈষম্য কমে আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার অবশ্যই জনবান্ধব, জলবায়ুবান্ধব ও নারীবান্ধব হতে হবে।
কমিশনের সিস্টেমস্ এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান বলেন, ‘তরুণ, নারী ও যুবকদের ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং তাদের মতামতকে গ্রহণ করতে হবে। এআই, বিগ ডাটা, আইওটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, তাই আমাদের এ প্রযুক্তি পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন করতে শিখতে হবে।’
নতুন প্রযুক্তি ডিজিটাল ডিভাইড বাড়িয়ে দেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রযুক্তিগত বৈষম্যকে চিহ্নিত করে সেগুলোকে সমাধান করতে হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে