জরুরি ভিত্তিতে ব্যাংকিং খাতের সংস্কার শুরু করা প্রয়োজন
ছাত্রদের আন্দোলনের পর এক বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রায় তিন মাস অতিক্রম করতে চলেছে। এই সরকারের প্রতি জনপ্রত্যাশার চাপ অনেক বেশি। তারা সমাজের বিভিন্ন স্তরে সৃষ্ট ক্ষত দূরীকরণের মাধ্যমে দেশকে টেকসই উন্নয়নের পথে ধাবিত করবে, এটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা; কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ক্রমেই ফিকে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য বেশ কিছু কমিশন গঠন করা হলেও সেই কমিশনের কার্যক্রম এবং অগ্রগতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ খুব একটা জানতে পারছে না। বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী চিন্তা করছে এবং সেই চিন্তার প্রতিফলন আমরা আগামীতে কতটা প্রত্যক্ষ করতে পারব, তা নিয়ে সাধারণভাবে কিছুটা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অর্থনীতির যে খাতটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। এই খাতকে পরিকল্পিতভাবেই বিপর্যয়ের মুখোমুখি এনে দাঁড় করানো হয়েছে। ব্যাংকিং খাত হচ্ছে একটি দেশের অর্থনীতির ‘লাইফ লাইন’। তাই কোনো দেশের অর্থনীতিকে সচল এবং কার্যকর রাখতে হলে সবার আগে ব্যাংকিং খাতকে সুষ্ঠু ধারায় প্রবাহিত করতে হয়; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের দেশের ব্যাংকিং খাত উন্নয়নের মূল সূত্র হিসেবে নীতি নির্ধারকদের কাছে কখনোই সেভাবে গুরুত্ব পায়নি। বরং ব্যাংকিং খাতকে লুটপাট এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের উর্বর ভূমি হিসেবেই বিবেচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে গত সরকারের শেষের কয়েক বছর ব্যাংকিং খাতে বিদ্যমান আন্তর্জাতিক মানের আইনগুলোকে এমনভাবে পরিবর্তন এবং সংস্কার করা হয়েছে, যাতে এই খাতকে ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী স্বার্থে ব্যবহার করা যায়। আরও পরিষ্কার করে বলতে গেলে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সময় কালের কথা উল্লেখ করতে হয়। তার সময়কালে ব্যাংকিং খাতের বিদ্যমান আইনগুলো যেভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে, তা এই খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের মধ্যে একমাত্র আ হ ম মুস্তফা কামালই ছিলেন পেশাগতভাবে ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তা। ফলে তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় উদ্যোক্তা গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমন সব আইনি পরিবর্তন সাধন করেছেন, যা ব্যাংকিং খাতকে নিশ্চিতভাবেই বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রসঙ্গক্রমে বলেছিলেন, আজ থেকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক টাকাও বাড়বে না। তার এই বক্তব্য অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের আশান্বিত করেছিল। কারণ অর্থমন্ত্রী নিজেও যেহেতু একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তা তাই তিনি ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সম্পর্কে ভালোভাবেই অবহিত ছিলেন; কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই সবাইকে আশাহত হতে হয়। দেখা গেল, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক এমনভাবে বিদ্যমান আইনগুলো পরিবর্তন করতে থাকলে যাতে কিস্তি আদায় না করেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে দেখানো যায়। একজন খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের এই উদ্যোগকে ‘কার্পেটের নিচে ময়লা রেখে ঘর পরিষ্কার দেখানোর চেষ্টা বলে অভিহিত করেছিলেন।
ব্যাংকিং খাতে হাজারো সমস্যা রয়েছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে জটিল সমস্যা হচ্ছে ছাড়কৃত ঋণ সঠিক সময়ে আদায় করতে না পারা। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৩ হাজার কোটি টাকার মতো। আর গত সেপ্টেম্বর মাসের হিসাব মোতাবেক, খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকারও বেশি; কিন্তু এটা খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র নয়। এটা খেলাপি ঋণের ভগ্নাংশ মাত্র। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কীভাবে লুকানো হয়েছে, তা একটু আলোচনা করা যেতে পারে। কিস্তি আদায় না করেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখানোর একটি কৌশল হচ্ছে ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণ নীতিমালা প্রয়োগ। ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণ অর্থ হচ্ছে কোনো ঋণ হিসাব থেকে পাওনা কিস্তি আদায়ের সময় সীমা বাড়ানো বা কমানো। তবে বাস্তবে ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় সীমা কমানোর প্রয়োজন হয় না। কারণ একজন ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছা করলে নির্ধারিত সময়ের আগেই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেন; কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলে সংশ্লিষ্ট ঋণ হিসাবটি খেলাপি মানে শ্রেণিকৃত হয়। ঋণ হিসাব খেলাপি মানে শ্রেণিকৃত হলে সেই উদ্যোক্তাকে নতুন করে আর কোনো ব্যাংক ঋণ দেয়া হয় না।
নির্ধারিত সময়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করেও ঋণ হিসেব নিয়মিত দেখানো একটি সহজ পন্থা হচ্ছে ঋণ হিসাবটি পুনঃতপশিলীকরণ করিয়ে নেয়া। যেমন কোনো ঋণ হিসাব থেকে কিস্তি আদায়ের নির্ধারিত সময় হয়তো ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ গ্রহীতা ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে তাকে খেলাপি মানে শ্রেণিকৃত করা হবে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য ঋণ গ্রহীতা ব্যাংকের নিকট তার ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময সীমা বর্ধিতকরণের জন্য আবদেন করবেন। ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ড যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ঋণ হিসাবের কাছ থেকে কিস্তি সময়সীমা বর্ধিত করে দিতে পারে। ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ড হয়তো কিস্তি পরিশোধের জন্য এক বছর সময়সীমা বর্ধিত করে দিল। তাহলে সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতাকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।
এই এক বছর ঋণ হিসাবটিকে খেলাপি বলা যাবে না। আগে কোনো ঋণ হিসাব সর্বোচ্চ তিন বার পুনঃতপশিলীকরণ করা যেত। প্রথম বার পুনঃতপশিলীকরণের জন্য মোট খেলাপি ঋণের ১০ শতাংশ, দ্বিতীয়বার ২০ শতাংশ এবং তৃতীয়বার ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট হিসেবে ব্যাংকে নগদে জমা দিতে হতো। প্রতিবার পুনঃতপশিলীকরণের মেয়াদ হতো ৩ বছর। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল তার মেয়াদের শেষের দিকে এসে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট জমা দিয়ে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ১০ বছরের জন্য ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণের সুযোগ দেয়া হয়। এতে ৩৮ হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের ঋণ হিসাব পুনঃতপশিলীকরণ করিয়ে নিয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকিং খাতে মোট পুনঃতপশিলীকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। এক বছর আগে এর পরিমাণ ছিল ৯১ হাজার কোটি টাকা। পুনঃতপশিলীকরণের ফলে এই বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণকে আনুষ্ঠানিকভাবে খেলাপি মানে শ্রেণিকৃত দেখানো যাচ্ছে না।
ঋণ হিসাব অবলোপনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ঋণাঙ্ককে খেলাপি ঋণ হিসাবের বাইরে রাখা হচ্ছে। আগে কোনো ঋণ হিসাব মন্দমানে শ্রেণিকৃত হবার পর ৫ বছর অতিক্রান্ত হলে উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়েরপূর্বক শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করে সেই ঋণ হিসাবকে অবলোপন করা যেতো। এখন মন্দমানে শ্রেণিকৃত হবার পর ২ বছর অতিক্রান্ত হলেই সেই ঋণ হিসাব অবলোপন করা যাচ্ছে। এজন্য শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণের শর্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। ৫ লাখ টাকার কম ঋণাঙ্কের ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের শর্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান মোতাবেক, ব্যাংকিং খাতের মোট অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। অবলোপনকৃত ঋণাঙ্ককে খেরাপি ঋণ হিসেবে প্রদর্শন করা হয় না।
গত জুন মাস পর্যন্ত মামলাধীন প্রকল্পে সংখ্যা ছিল ৬৭ হাজার ৫১৯টি। এদের কাছে ব্যাংকগুলোর দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ ২ লাখ ৯ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। এটা আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে আটকে আছে আরও ৭৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ মামলাধীন প্রকল্পগুলোর কাছে ব্যাংকের দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এটা ব্যাংকগুলোর ছাড়কৃত মোট ঋণ ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকার ১৭ শতাংশ। আর সব মিলিয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ৬ লাখ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা কার্যত পরিচালিত হচ্ছিল আন্তর্জাতিক মানের আইন দ্বারা। গত শতাব্দীর ১৯৮০ দশকের শেষার্ধে বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সংস্কার সাধন করা হয়। সেই সময় যেসব আইনি পরিবর্তন করা হয় তা ছিল আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত এবং অনুসৃত আইনের প্রতিফলন; কিন্তু গত ১৫/২০ বছরে ব্যাংকিং খাতের বিদ্যমান আইনগুলো এমনভাবে পরিবর্তন করা হয় যা মহল বিশেষের স্বার্থ রক্ষায় নিবেদিত। আইনের সংজ্ঞা এমনভাবে পরিবর্তন করা হয় যাতে প্রভাবশালী এবং সরকার সমর্থক ঋণখেলাপিরা সুবিধাপ্রাপ্ত হয়।
গত সরকার বিদায় নেয়ার ঠিক আগ-মূহূর্তে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি আইনি সংস্কার সাধন করে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য ছিল না। আগে কোনো শিল্পগোষ্ঠীর এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হয়ে পড়লে গ্রুপের অবশিষ্ট শিল্পগুলো কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ পেত না। এই আইন সংশোধন করে প্রণীত নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনো শিল্পগোষ্ঠীর এক বা একাধিক শিল্প-কারখানা ব্যাংক ঋণখেলাপি হলেও অবশিষ্ট কারখানাগুলোর ঋণ পেতে কোনো অসুবিধা হবে না। এই আইনি পরিবর্তনের ফলাফল কি হতে পারে, তা ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন পড়ে না। আরও একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই আইনে কয়েকটি নির্দিষ্ট শিল্পগোষ্ঠীকে চেক ক্লিয়ারন্সের ক্ষেত্রে বিশেষ এবং অচিন্ত্যনীয় সুবিধা দেয়া হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো সিডিউল ব্যাংকের চলতি হিসাবে চেক দাখিল করলে সেই হিসাবে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ নাও থাকে তাহলেও চেক ক্লিয়ারেন্স করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পাওনা অর্থ পরিশোধ করবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এই বিশেষ সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। এসব আইনি পরিবর্তন ব্যাংকিং খাতকে দুর্বল এবং খেলাপি ঋণভারে জর্জরিত করে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান ব্যাংকিং ব্যবস্থা ঋণখেলাপি ও দুষ্টু গ্রাহক বান্ধব। যারা নিয়মিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেন তাদের ব্যাংক থেকে কোনো বিশেষ আর্থিক সুবিধা দেয়া হয় না; কিন্তু যারা বছরের পর বছর ঋণের কিস্তি আটকে রাখেন তাদের নানাভাবে সুদ মওকুফ সুবিধাসহ নানা ধরনের আর্থিক সুবিধা দেয়া হয়। ব্যাংকিং খাত কিছু সুবিধাভোগী মানুষের লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার একটি বিশেষ গোষ্ঠী দেশের শীর্ষস্থানীয় ৬টি ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকের মালিকানা দখল করেছে। তারা এসব ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নামে বেনামে ঋণ হিসেবে গ্রহণ করে তা বিদেশে পাচার করেছেন। এই মুহূর্তে ব্যাংকিং সমস্যা জানার জন্য বিশেষ কমিশন গঠনের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ সমস্যাগুলো আমাদের জানাই আছে। এখন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সময়।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং খাতে যে সব আইনি পরিবর্তন করা হয়েছে তা বাতিল করে আইনগুলো পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। একই সঙ্গে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যেসব ঋণ গ্রহীতা কিস্তি পরিশোধ করছেন না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাদের স্থাবর-অস্থাবর সমুদয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদিতে বয়কটকরণসহ বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যেতে পারে। ঋণখেলাপি পরিবারের সন্তানদের বিদেশে তো নয়ই দেশের কোনো ভালো বিদ্যালয়ে শিক্ষার্জনের সুযোগ রহিত করতে হবে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিকে ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ হিসেবে ঘোষণা করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সবার আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা খেলাপি ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে সত্যি কতটা আন্তরিক।
এম এ খালেক: অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি ও অর্থনীতিবিষয়ক লেখক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে