বাজেট ২০২৪-২৫
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ায় অর্থনীতি কতটা উপকৃত হচ্ছে
নতুন অর্থবছর (২০২৪-২৫) জন্য প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত হয়েছে। এ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রণয়ন যে কোনো বিচারেই একটি কঠিন কাজ ছিল। অর্থমন্ত্রী সেই কঠিন কাজটিই সম্পন্ন করেছেন।
নতুন অর্থবছরের বাজেট ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ সহায়তা প্রদানের জন্য যে নীতি সহায়তা দেয়া প্রয়োজন, তা দিতে হবে। তবে সেটা দিতে হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। ব্যক্তি খাতকে অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে গিয়ে তাকে অবাধ স্বাধীনতা দেয়া যাবে না।
ব্যক্তি খাতে যেসব সুবিধ দেয়া হয় অনেক ক্ষেত্রেই তার অপব্যবহার হয়। ব্যক্তি খাতকে এমনভাবে সহায়তা দিতে হবে যাতে তারা স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিশ্ববাজারে অবাধ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো সামর্থ্য অর্জন করতে পারে। আমরা বিনিয়োগ বাড়াতে চাই; কিন্তু শুধু বিনিয়োগ বাড়ালেই হবে না, বিনিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানে যাতে অধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উৎপাদন ক্ষেত্র সব স্থানেই উৎপাদনশীলতার ঘাটতি রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
নতুন অর্থবছরে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে কালো টাকা সাদা বা বৈধ করার সুযোগ রাখা হচ্ছে । একই সঙ্গে জমি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট কিনেও এলাকাভেদে নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে টাকা সাদা করা যাবে। অনেক দিন ধরেই এই সুযোগ দেয়া হচ্ছে; কিন্তু এর মাধ্যমে দেশ কতটা উপকৃত হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করার সুযোগ রয়েছে। এভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দান সমর্থনীয় হতে পারে না।
স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো খাতগুলোতে বাজেট বরাদ্দ আরও অনেকটাই বাড়ানো প্রয়োজন। নতুন অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের অর্থনীতিতে বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। এ জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে। তবে আমি মনে করি, শুধু বাজেট বা মুদ্রানীতির মাধ্যমে উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না। এ জন্য সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
লেখক: অর্থনীতিবিদ ও নির্বাহী পরিচালক, ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে