৮১তম জন্মদিন
গোলাম সারওয়ার ছিলেন আপসহীন সাংবাদিক ও সম্পাদক
বাংলাদেশের সাংবাদিকতার জগতে সবাই যাকে শিক্ষাগুরু হিসেবে মান্য করেন, তিনি সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার। এই গুণী সাংবাদিকের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১ এপ্রিল। ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন। তার ৮১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ‘ভিউজ বাংলাদেশ’ আয়োজন করেছে ‘গোলাম সারওয়ার সংখ্যা’। এই গুণী সাংবাদিকের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন নিয়ে ‘ভিউজ বাংলাদেশ’-এর সম্পাদক রাশেদ মেহেদী কথা বলেছেন গোলাম সারওয়ারের জামাতা মিয়া নাঈম হাবিবের সঙ্গে। তিনি যুগান্তর এবং সমকাল দুটি পত্রিকারই প্রতিষ্ঠার সময় শ্বশুর গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।
বার্তাকক্ষে গোলাম সারওয়ার
সম্পাদক গোলাম সারওয়ার জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন সংবাদপত্রের বার্তাকক্ষে। দৈনিক সমকালে দীর্ঘ ৮ বছর এই অসাধারণ মানুষটির সান্নিধ্যে কাজ করার সময় তার যে যাপিত জীবন দেখেছি, সেখানে দিনের বেশির ভাগ সময় তিনি বার্তাকক্ষেই পার করতেন। সর্বশেষ অসুস্থও হয়ে পড়েন তার প্রিয় বার্তাকক্ষেই। সেই অসুস্থতা থেকে আর ফিরে আসেননি আমাদের মাঝে।
একজন ডায়নামিক সম্পাদক গোলাম সারওয়ার
চার দশকের অধিককালের সাংবাদিকতা জীবনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্বনামে খ্যাত ৬ জন সম্পাদকের তত্ত্বাবধানে কাজ করেছি, প্রতিষ্ঠানতুল্য সম্পাদক তোয়াব খানের পর যার কথা বিশেষভাবে মনে পড়ে, তিনি অগ্রজ প্রতিম শ্রদ্ধেয় গোলাম সারওয়ার (১৯৪৩-২০১৮)। সারওয়ার ভাইকে প্রথম দেখি ১, রামকৃষ্ণ মিশন রোডের তদানীন্তন ইত্তেফাক ভবনে। দৈনিক ইত্তেফাকের কচিকাঁচার আসরে তখন প্রায় নিয়মিত লিখি। এটা খুব সম্ভবত ১৯৭৬ অথবা ১৯৭৭ সালের কথা। সম্প্রতি প্রয়াত কবি ইকবাল হাসান তখন ইত্তেফাক ভবন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক পূর্বাণীর সাহিত্য সম্পাদক। দৈনিক ইত্তেফাকের বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব ছাড়াও সারওয়ার ভাই কিছুকাল সাপ্তাহিক পূর্বাণীর সার্বিক দেখাশোনার দায়িত্বেও ছিলেন। চীনের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা তার অনেক আগের। সে সুবাদেই বন্ধু ইকবাল হাসান একদিন আমাকে সারওয়ার ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
গোলাম সারওয়ার ছিলেন ব্যবহারিক সাংবাদিকতার শিক্ষক
১ এপ্রিল গোলাম সারওয়ার ভাইয়ের জন্মদিন। ১৯৪৩ সালের ১ এপ্রিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বরিশাল জেলার বানারীপাড়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সারওয়ার ভাই কখনো জন্মদিন পালন করতে চাইতেন না। তিনি এটা নিয়ে ফান করতেন। আমরা যদি জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে চাইতাম তিনি বলতেন, আরে, আমি যদি মানুষকে বলি আজ আমার জন্মদিন, মানুষ মনে করে এটা এপ্রিলফুল, যার ফলে তিনি জন্মদিন পালন করতেন না কখনো। পরবর্তীতে ওনার ছেলেমেয়েরা বড় হওয়ার পর তারা আয়োজন করত।