বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
টিউলিপের পদত্যাগ: ব্রিটিশদের কাছে তুচ্ছ হলেও বাংলাদেশিদের কাছে মুখ্য কেন?
বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের নাম এসেছে। তার পরিবার এই অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আর তাই ব্রিটেনের ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে তার নাম আসার পর থেকেই তার ওপর পদত্যাগের চাপ বাড়ছিল। সম্প্রতি বাংলাদেশে দুর্নীতির একটি মামলায় তার মা, ভাই বোন ও খালার পাশাপাশি তাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে টিউলিপ সিদ্দিক বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত না নিলে সংঘাত বাড়বে
কথা ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবে; কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের মতানৈক্য বাড়ছে। এমনকি রাষ্ট্র সংস্কারের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়েও মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এরই মধ্যে সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত বেশ কয়েকটি কমিশন তাদের প্রস্তাব পেশ করলেও রাজনৈতিক মহলে তা নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। বরং কোনো কোনো রাজনৈতিক দল জুলাই-আগস্টের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি তুলেছে। এ নিয়ে সরকারের মধ্যেও এক ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বেশ জোরের সঙ্গেই বলা হয়েছিল যে, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরেই দেশে নির্বাচন হবে; কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারকেও নির্বাচনের ব্যাপারে নমনীয় মনে হচ্ছে
সব দলীয় সরকারই অন্য সরকারের অবদানকে কেন অস্বীকার করে?
জুলাই এবং আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের বিজয়ে বড় ভাগ বসাতে চায় বিএনপি; জামায়াতে ইসলামও চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা জামায়াতকে স্বীকৃতি দিলেও বিএনপিকে বেশি কৃতিত্ব দিতে আগ্রহী নয়। তাই দুপক্ষের মধ্যে মাঝে মাঝে বাকযুদ্ধ হয়। বিএনপি মনে করে তারা পনেরো বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছে, তাদের সংগ্রাম অব্যাহত না থাকলে শুধু জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন সম্ভব হতো না। কথাটি মিথ্যা নয়। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়ার ফলে ১৬ ডিসেম্বরে ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে।
সংস্কারের ‘ষড় ক’ এবং অর্থনৈতিক সংকটের পদধ্বনি
সংস্কার বলতে আপনি কী বোঝেন- সেটি নির্ভর করে আপনি কে, আপনার পেশা কী, আপনার রাজনৈতিক বিশ্বাস ও মত কী, কোন দলের সমর্থক এবং সর্বোপরী দেশ নিয়ে আপনার ভাবনা কী- তার ওপর। একজন রিকশাচালক সংস্কার বলতে যা বোঝেন, একজন রাজনীতির অধ্যাপকের কাছে সংজ্ঞাটি হয়তো সেরকম নয়। আবার জুলাই অভ্যুত্থানে যে রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো সক্রিয় ছিল, তাদের সবার কাছেও সংস্কারের সংজ্ঞা এক নয়। যেমন বিএনপি সংস্কার বলতে বোঝে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযাগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক সরকারের ক্ষমতা গ্রহণ। তাদের কাছে সংস্কার মানে প্রায় দেড় দশক ধরে ভোটবঞ্চিত মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ধারায় পরিচালিত করা; কিন্তু সংস্কার প্রশ্নে জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় বিএনপির দীর্ঘদিনের ভোট ও জোটসঙ্গী জামায়াতের অবস্থান ভিন্ন। তারা মনে করে, আগে সংস্কার তারপরে নির্বাচন। অর্থাৎ নির্বাচন তাদের কাছে এক নম্বর অগ্রাধিকার নয়।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে আকস্মিক শুল্ক-কর বাড়ানো কেন?
গত দুই বছর ধরে লাগামহীন উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে দেশের জনগণ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, গেল বছর গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এলেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের উপরেই। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ, খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশে।
হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারবে না
বদরুদ্দীন উমর বাংলাদেশের লেখক-গবেষক ও বামপন্থি রাজনীতিবিদ। তার জন্ম ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর, ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিপিই ডিগ্রি নেন। খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে প্রথমে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, পরে ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। রাজনীতি করবেন বলে ১৯৬৮ সালে পদত্যাগ করেন। পরে সার্বক্ষণিক লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। বর্তমানে বদরুদ্দীন উমর জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি ও সংস্কৃতি পত্রিকার সম্পাদক। সম্প্রতি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলেছেন ভিউজ বাংলাদেশের সঙ্গে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ভিউজ বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক গিরীশ গৈরিক। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ প্রকাশিত হলো শেষ পর্ব
যে কারণে শ্বেতপত্র কোনো আলোড়ন তোলেনি
অন্তর্বর্তী সরকার অনেকগুলো সংস্কার কমিটি করেছে। ‘স্বৈরাচারের’ রেখে যাওয়া অর্থনীতির ওপর পর্যালোচনার জন্য গঠিত কমিটি সম্প্রতি একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে এবং শ্বেতপত্রের ওপর সাংবাদিক সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট কমিটি শ্বেতপত্রের তথ্য-উপাত্তের ব্যাখ্যা করেছে। সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদত্ত কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের বক্তব্য থেকে প্রতিপন্ন হয়, বিগত সরকারের আমলে ‘চামচা পুঁজিবাদ থেকেই চোরতন্ত্র’ তৈরি হয়েছিল এবং তাতে অংশ নিয়েছে রাজনীতিক, সামরিক ও বেসামরিক আমলা, বিচার বিভাগসহ সবাই। শ্বেতপত্র বলছে, বিগত ১৫ বছরে ২৮ উপায়ে দুর্নীতির মাধ্যমে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। শ্বেতপত্র দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করেনি, কারণ চোর ধরা নয়, চুরির বর্ণনা দেয়াই নাকি শ্বেতপত্রের কাজ। তাই শ্বেতপত্র শুধু চুরির প্রক্রিয়া খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের বক্তব্য হচ্ছে, দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান খুঁজে পেতে হলে দুদক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে ধর্ণা দিতে হবে।
সমাজ-রাষ্ট্রের মর্মমূল থেকে দুর্নীতি দূর করুন
রাষ্ট্রের উৎপত্তি যখন থেকে, দুর্নীতিরও উৎপত্তি তখন থেকেই। যুগে যুগে, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিভিন্ন জাতি-রাষ্ট্রে বিভিন্নরকম দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির নানারকম সামাজিক-রাজনৈতিক-দার্শনিক-ধার্মিক সংজ্ঞা, অর্থ আছে।
বাংলাদেশ শুরু থেকেই স্বৈরশাসনের কবলে
১৯৫৪ সালের নির্বাচনের পর মুসলিম লীগের যে অবস্থা হয়েছে এর সাথে একটা মিল আছে। অনেক বড় মিল আছে। মিলটা এখানে যে, এই দুটো রাজনৈতিক দলেরই ভবিষ্যৎ শেষ হয়েছে। মুসলিম লীগ যেভাবে শেষ হয়ে গিয়েছিল, আওয়ামী লীগও সেভাবে শেষ হয়ে যাবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফরেন পলিসি নিয়ে কাজ করার জন্য আসেনি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফরেন পলিসি নিয়ে কাজ করার জন্য আসেনি