বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ করার এখতিয়ার যদি না থাকে তাহলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে
চট্টগ্রাম বন্দরের ৯টি টার্মিনালের মধ্যে একটির পরিচালনার ভার বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেয়ার যে উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিয়েছে তার সমালোচনা এখন তুঙ্গে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম সফরে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিশ্বের তুলনায় পিছিয়ে থাকা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার ভার পৃথিবীর সেরা কোনো কোম্পানির হাতে ছেড়ে দিতে হবে এবং এই ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা মানুষকে বোঝাতে হবে। সরকার ইতোমধ্যে বিদেশি কোম্পানিও নির্বাচিত করে ফেলেছে- ডিপি ওয়ার্ল্ড, আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি কোম্পানি। এই কোম্পানির সিইও বা প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে দেশে-বিদেশে ড. ইউনূসের দুইবার সাক্ষাৎ হয়েছে এবং তাদের প্রস্তাবিত কাজ হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের জট কমানো, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করা এবং বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র গেটওয়ে হিসেবে এর কার্যকারিতা বাড়ানো।
মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
প্রকাশ্য দিবালোকে চাপাতি হাতে নিয়ে ছিনতাইকারীরা এক তরুণের ব্যাগ ছিনিয়ে নিচ্ছে- এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সাধারণ মানুষের মনে প্রবল আতঙ্ক এসে ভর করেছে। গত মঙ্গলবার (২৭ মে) সংবাদমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ঘটনাটি ঘটেছে ১৮ মে বিকেলে। ঘটনাস্থল রাজধানীর মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলি। ছিনতাইয়ের শিকার তরুণের নাম আবদুল্লাহ। তার বাড়ি কুমিল্লায়। ছিনতাইয়ের এ ঘটনায় গত রোববার রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় অজ্ঞাতপরিচয়ের তিন ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছেন আবদুল্লাহ। হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত তিন ছিনতাইকারীকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
লাশবাহী গাড়িতে ডাকাতি: এ কেমন বাংলাদেশ
সমাজে-রাষ্ট্রে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়। সেসব নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সম্পাদকীয় লেখা হয়। সরকার ও জনগণকে সতর্কবার্তা দেয়া হয় এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে; কিন্তু বাংলাদেশে এখন লাশবাহী গাড়িতেও ডাকাতি হচ্ছে- এ নিয়ে কার উদ্দেশ্যে কী বলা যেতে পারে? একটা দেশের আত্মা কতটা দূষিত হয়ে গেলে সে দেশের মানুষ এরকম হীন কাজ করতে পারে! ডাকাতি থেকে রক্ষা পায় না লাশবাহী গাড়িও। মর্মান্তিক বিষয় হচ্ছে, ডাকাতি করতে গিয়ে ডাকাতরা লাশের গায়েও আঘাত করেছে
ঘোলা জলে রাজনীতি: অস্থির সময়ের প্রতিচিত্র
রাজনীতিতে যে অস্পষ্টতা, দ্বিধা ও উত্তেজনা জমে উঠছে, তা কেবল ঘটনার সমাহার নয়- এ এক সময়চিত্র। তা আমাদের শাসনব্যবস্থার গভীরে জমে থাকা দুর্বলতা, বৈপরীত্য ও অস্থিরতার বহিঃপ্রকাশ। সরকার পরিবর্তনের প্রায় এক বছর হতে চলছে, অথচ একটি স্পষ্ট রূপরেখা, সময়সীমা, কিংবা দায়িত্ববোধপূর্ণ রাজনৈতিক ভাষ্য নির্মাণ করতে পারিনি। বরং স্পষ্ট হয়ে উঠছে অনিশ্চয়তা, দায়িত্বহীনতা ও অস্বচ্ছ চর্চার এক জটিল চিত্র। ঘটনাবলির পরম্পরা দেখে অনেকে বলছেন, যেন এটি একটি অদৃশ্য পরিকল্পনার অংশ, যার উদ্দেশ্য পানি ঘোলা করে স্বার্থসিদ্ধি। বাস্তবতা হচ্ছে, কোনো না কোনো শক্তি এই ঘোলা পানিকে তাদের হাতের খেলা বানাতে চাচ্ছে বা এ পরিকল্পনার অংশীজন হচ্ছে- এতে কোনো সন্দেহ আছে? যে সরকারকে মনে করা হয়েছিল সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও শক্তিশালী, সেই সরকার আজ ১০ মাস পূর্ণ হতে না হতেই দুর্বলতার লক্ষণ স্পষ্টভাবে প্রকাশ করছে। নীতিগত স্পষ্টতা নেই, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিভ্রান্তি, এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব জনমনে প্রশ্ন তুলেছে- এই সরকার কি আদৌ জানে কোথায় যাচ্ছে?
সরকারের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব কি শুধুই নির্বাচন প্রশ্নে?
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এবং মির্জা আব্বাস সম্প্রতি এমন কিছু কথা বলেছেন, যাতে মনে হচ্ছে বিএনপি বুঝি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান বিরোধী দল। যদিও অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুতির পরে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় বিএনপিও বড় ভূমিকা রেখেছে। বিএনপি শুরু থেকেই বলছে যে, এই সরকার তাদের সরকার; কিন্তু দেখা গেল, গত বছরের ৮ আগস্ট এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণের মাস কয়েক পর থেকেই বিএনপির সঙ্গে তাদের দূরত্ব বা টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। তাতে প্রশ্ন উঠছে, সরকারের সঙ্গে বিএনপির এই দূরত্ব কী শুধুই নির্বাচন প্রশ্নে নাকি এর পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে?
চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করুন
খবরটা শুধু মর্মান্তিক নয়, জাতিগত লজ্জার। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সংবাদমাধ্যমে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, ঝালকাঠির রাজাপুরে ‘চাঁদার’ টাকা না পেয়ে নার্গিস বেগম (২৫) নামের এক গৃহবধূর গরু নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। গত বুধবার সকালে উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়নের ঘিগড়া গ্রামের একটি মাঠ থেকে গরুটি নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীর নাম বেল্লাল খান (৫৮)। তিনি শুক্তাগড় ইউনিয়নের বামন খান গ্রামের আজিজ খানের ছেলে এবং একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালামের আজাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অভিযুক্ত বেল্লাল খানের ভাষ্য, চাঁদার টাকার জন্য নয়, নার্গিসের স্বামীর কাছে পাওনা ২০ হাজার টাকার জন্য তিনি গরুটি নিয়ে গেছেন। টাকা দিয়ে দিলে তিনি গরুটি ফেরত দেবেন।
তারেক রহমানের রাজনৈতিক বিচক্ষণতা তাকে অনন্য উচ্চতায় স্থান দিয়েছে
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তারেক রহমান। দেশে ফিরতে মানা, কথা বলতে মানা, কথা প্রচারে আদালতের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও এগিয়েছেন। তার দৃঢ়তায় নির্যাতকদের পরাস্ত হতে হয়েছে নিদারুণভাবে। চব্বিশের বিপ্লব-পরবর্তী স্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপট তৈরি করতেও তিনি ভূমিকা রেখেছেন। একজন নির্যাতিত হিসেবে প্রতিহিংসাপরায়ণ ও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠার শঙ্কা করেছেন অনেকে, বাস্তবে দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্নচিত্র।সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন শান্ত থাকার। বিগত সরকারের অবিরাম অপপ্রচার, পতিত প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েক মন্ত্রীর নিয়মিত গালমন্দ, ভেংচি, খিঁচুনির জবাব কখনো মন্দ কথায় দেননি তারেক রহমান। তার কাজ তিনি করে গেছেন নীরবে-নিভৃতে, যা ক্রমে তাকে আরও শক্তিশালী করেছে। খাদের কিনার থেকে দলকে টেনে তোলার শক্তি দেখিয়েছে। দলের তৃণমূলের কাছে হয়ে উঠেছেন ছায়াসঙ্গী।
অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানো কতটা সহজ?
যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে- সেই দলটি দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর পর গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হলো- তার পেছনে অন্তত বিশটি কারণ আছে। এখানে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা বিদেশি ইন্ধনের অভিযোগ যতই থাকুক, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আওয়ামী লীগ যে দুর্নীতি, দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতির কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল- সেটি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।
অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারে দৃষ্টান্ত স্থাপন না করলে, আর হবে না!
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংস্কারের ওপর অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘ঠুনকো সংস্কার না, লোক দেখানো সংস্কার না, একদম ফান্ডামেন্টাল সংস্কার। এটা এমনভাবে করব আর কেউ পাল্টাতে পারবে না।’ তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘আমার একটাই কথা- সংস্কার। সংস্কারে কী কী বিষয় হবে, সেটা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা করেন; কিন্তু সংস্কার না করে যেন নির্বাচন না করি।… এই সুযোগ হারাবেন না।’ তিনি চমৎকার বলেন; কিন্তু তা তিনি বাস্তব অবস্থা বিচার করে বলেন না। তিনি স্বপ্ন দেখেন; কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে হতাশ হন। কেউ যাতে সংস্কার পাল্টাতে না পারে সেই ব্যবস্থা তিনি নেবেন- এই কথাটি বাস্তবতা বিবর্জিত আবেগের কথা।
রাজনৈতিক শিষ্টাচারে খালেদা জিয়ার কর্মকাণ্ড অনুসরণীয়
যে কোনো দেশের ইতিহাসে এমন এক সময় আসে যখনকার ঘটনাবলি অন্যান্য ঘটনাকে ম্লান করে দেয়। এমন ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটে যিনি প্রকৃতির চলমান গতির পরিবর্তন ঘটান, জাতির গতি সঞ্চার করেন, নতুন দিকনির্দেশনা দেন, উদ্বুদ্ধ করেন আত্ম-অনুসন্ধানে। তেমনই একজন হলেন বিএনপির চেয়ারপারসন আপসহীন নেত্রী, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ধারক বেগম খালেদা জিয়া। টানা চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থেকে তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, সবচেয়ে বেশিসংখ্যক সংসদীয় আসনে বিজয়, আপসহীন সংগ্রামে দুটি স্বৈরশাসনকে বিদায় দেওয়ার অসামান্য কৃতিত্ব তার।