ঋণখেলাপি
‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ কি চিহ্নিতকরণ সম্ভব হবে?
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১২ মার্চ ব্যাংকিং সেক্টরের ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে সার্কুলার জারি করেছে। এই সার্কুলারটি বর্তমান মুহূর্তে ব্যাংকিং সেক্টরের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা প্রচণ্ড আগ্রহ নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। অনেকেই মনে করছেন, এবার বুঝি ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা জালে ধরা পড়তে যাচ্ছেন। অর্থনীতিবিদরা অনেক দিন ধরেই ব্যাংকিং সেক্টরের ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য দুটি দাবি করে আসছিলেন।
ইচ্ছাকৃত হোক আর অনিচ্ছাকৃত হোক, ঋণখেলাপি মানে ঋণখেলাপি
যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে, বাংলাদেশে যেহেতু পুঁজিবাজীর খুবই দুর্বল তাই এদেশের অর্থনীতিতে ব্যাংকিং খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের শিল্প-কারখানা এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজির চাহিদা মেটানোর জন্য মূলত ব্যাংকের কাছে যেতে হয়। বাংলাদেশে বিগত একযুগে যে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা সুসংহত ও তরান্বিত করতে একটি সুষ্ঠু ও গতিশীল ব্যাংকিং ব্যবস্থা থাকা একান্ত প্রয়োজন; কিন্তু সার্বিকভাবে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত খুবই নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলো প্রকৃত উদ্যোক্তাদের কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সহযোগিতা দিতে পারছে না। বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যেসব সমস্যা বা প্রতিকূলতা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে তা এক দিনে বা হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয়নি। বছরের পর বছর এই খাতটি নানা সমস্যায় জড়িয়ে রয়েছে। দিন দিন সমস্যার ব্যাপকতা এবং গভীরতা শুধু বাড়ছেই। এ খাতকে সুশৃঙ্খল ও গতিশীল করা জরুরি।