ঘরে ঘরে জনতা ব্যাংক
ব্যাংকিং খাতে বিপর্যয় ঠেকানোর জন্য আইনি সংস্কার জরুরি
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) তাদের এক গবেষণা প্রতিবেদনে ব্যাংকিং সেক্টরের দুরবস্থা তুলে ধরেছে। সংস্থাটি বলেছে, গত ১৫ বছরে দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়েছে। ফলে এই সেক্টর বর্তমানে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পতিত হয়েছে। দেশে ব্যবসায়রত ৬০টি ব্যাংকের মধ্যে অন্তত ২৯টি নানা কারণেই স্বাভাবিক গতিতে চলছে না। এর মধ্যে অন্তত ১০টি ব্যাংক দেউলিয়া হবার পর্যায়ে রয়েছে। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের স্থল ব্যাংকিং সেক্টরকে লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ১৫ বছরে দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে সংঘটিত ২৪টি বড় ধরনের দুর্নীতির ঘটনায় ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে একটি চিহ্নিত মহল। ব্যাংকিং সেক্টর থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে লুটে নেয়া এই অর্থের পরিমাণ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ১২ শতাংশ।
ব্যাংকিং খাতে নৈতিকতা চর্চার বিকল্প নেই
অর্থনীতিবিদ হিসেবে সব সময়ই আমি শুধু তত্ত্ব চর্চায় আটকে না থেকে গুণমুখী উন্নয়ন চিন্তাগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে যুক্ত থাকতে সচেষ্ট হয়েছি। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকেই সব সময় আমার গবেষণার কেন্দ্রে রেখেছি। গণমানুষের কল্যাণে অর্থনীতি চর্চাকে প্রাসঙ্গিক করার সুযোগ সবার জীবনে আসে না। তবুও সব সময়ই আগ্রহ ছিল নীতিনির্ধারণের সুযোগ পেলে এই গবেষণার অভিজ্ঞতাগুলো বাস্তবে কাজে লাগাব। ১৯৯০-এর দশকের একেবারে শেষদিকে একবার সুযোগ এসেছিল জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়। প্রায় দুবছর সময় পেয়েছিলাম ‘জনতা ব্যাংক জনতার ব্যাংক’ স্লোগানের আলোকে ‘ঘরে ঘরে জনতা ব্যাংক’ এবং কৃষক ও খুদে উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক লেনদেনের সুযোগকে অবারিত করার। পাশাপাশি ব্যাংক সেবাকে আরও গণমানুষের কাছাকাছি নেওয়ার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ইন্টার্নশিপ ব্যবস্থা চালু করে তরুণদের যুক্ত করতে সচেষ্ট হই। সে সময় ওই ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীসহ সব ব্যাংকারই যেভাবে এগিয়ে এসেছিলেন অংশগ্রহণমূলক ও মানবিক ব্যাংকিং চালু করতে তা এক কথায় ছিল অনন্য। তাই ব্যাংকটি সব সূচকেই বাংলাদেশের এক নম্বর ব্যাংকে পরিণত হতে পেরেছিল।