অর্থনৈতিক উন্নয়ন
স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি সূচকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে
৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। এ স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের শোষণ-নির্যাতন থেকে বেরিয়ে যাওয়া। শুধু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নয়, এই বাংলার মানুষের ওপর দুইশ বছর ধরে নির্যাতন চালিয়েছে ব্রিটিশ শাসন। মুঘল-পাঠানরাও কোনোদিন এই বাংলার মানুষের প্রাপ্য হিস্যা বুঝিয়ে দেয়নি। তার মানে হাজার বছর এই বাংলার মানুষ কেবল শোষণেরই শিকার হয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল হাজার বছরের পরাধীনতার বিরুদ্ধে লড়াই। মুক্তিযুদ্ধ ছিল তাই আপামর মানুষের আজীবনের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। সেই স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি আজ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে কেন?
বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে
স্বাধীনতার পর একজন মার্কিন উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ সফরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য উপস্থাপনকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেন ত্বরান্বিত হচ্ছে না, সে সম্পর্কে কিছু কথা বলেছিলেন। তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন তরুণ অধ্যাপক বলে ওঠেন, আপনারা আমাদের অর্থনীতিতে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেন বলেই আমাদের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বক্তব্য শ্রবণ করার পর মার্কিন অধ্যাপক কিছুক্ষণ চুপ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, যে দেশের অর্থনীতির ৮০ শতাংশই আমাদের মতো দেশের ঋণের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, সেই দেশের অর্থনীতি নিয়ে আমরা কথা বলব না তো কে বলবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ অধ্যাপক সেদিন আর কিছু বলতে পারেননি। এটাই বাস্তবতা।
ইচ্ছাকৃত হোক আর অনিচ্ছাকৃত হোক, ঋণখেলাপি মানে ঋণখেলাপি
যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে, বাংলাদেশে যেহেতু পুঁজিবাজীর খুবই দুর্বল তাই এদেশের অর্থনীতিতে ব্যাংকিং খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের শিল্প-কারখানা এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজির চাহিদা মেটানোর জন্য মূলত ব্যাংকের কাছে যেতে হয়। বাংলাদেশে বিগত একযুগে যে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা সুসংহত ও তরান্বিত করতে একটি সুষ্ঠু ও গতিশীল ব্যাংকিং ব্যবস্থা থাকা একান্ত প্রয়োজন; কিন্তু সার্বিকভাবে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত খুবই নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলো প্রকৃত উদ্যোক্তাদের কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সহযোগিতা দিতে পারছে না। বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যেসব সমস্যা বা প্রতিকূলতা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে তা এক দিনে বা হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয়নি। বছরের পর বছর এই খাতটি নানা সমস্যায় জড়িয়ে রয়েছে। দিন দিন সমস্যার ব্যাপকতা এবং গভীরতা শুধু বাড়ছেই। এ খাতকে সুশৃঙ্খল ও গতিশীল করা জরুরি।