জিডিপি
উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণ: বাস্তবতার আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে
উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হবার জন্য যে তিনটি আবশ্যিক শর্ত পরিপালন করতে হয়, বাংলাদেশ তার সবই বেশ ভালোভাবে পূরণ করেছে। এরপর কয়েক বছর পর্যবেক্ষণে ছিল বাংলাদেশ। আগামী বছর (২০২৬) বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হবে। স্বাধীনতার পর থেকে এটাই হবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় অর্জন। কোনো দেশই স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে নিজেদের চিরদিন ধরে রাখতে চায় না। প্রতিটি দেশেরই আকাঙ্ক্ষা থাকে কীভাবে এবং কত দ্রুততম সময়ের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়া যায়। একটি দেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকলে উন্নত দেশগুলো থেকে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়; কিন্তু সেটা কোনোভাবেই মর্যাদাপূর্ণ নয়। বরং এক ধরনের করুণা থেকেই এটা করা হয়। কোনো দেশই স্বল্পোন্নত বা দরিদ্র দেশ হিসেবে থাকতে চায় না। উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হতে পারা একটি দেশের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাকর।
নারী ক্ষমতায়নের অর্থনৈতিক তাৎপর্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির বাইরেও অস্তিত্বশীল
১৭২.৯২ মিলিয়ন জনসংখ্যার বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয়ার একটি ছোট দেশ। গত কয়েক দশকে দেশটি উন্নয়নের একটি সাফল্যের গল্প হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে নারী জনসংখ্যা ৮৮.০৭ মিলিয়ন যা পুরুষ জনসংখ্যা ৮৪.৮৫ মিলিয়নের চেয়ে কিছুটা বেশি। সঙ্গতকারণেই নারীরা দেশের জনসংখ্যাগত এবং অর্থনৈতিক বাস্তবতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তা সত্ত্বেও শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং পেশাগত প্রতিনিধিত্বে লিঙ্গবৈষম্য এখনো প্রকট যা নারীদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নের জন্য আরও বেশি উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে। নারী ক্ষমতায়ন শুধুমাত্র সামাজিকভাবে আবশ্যক নয়, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি অর্থনৈতিক অপরিহার্যতা। বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ এবং তাদের অগ্রগতিতে বাধাগুলো দূর করে দেশটি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা উন্মোচন করতে পারে এবং ত্বরান্বিত করতে পারে উন্নয়নের গতিকে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে কিছু কথা
আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) জন্য জাতীয় বাজেট প্রণয়নের প্রাথমিক কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে জুন মাসের ৫ তারিখ প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। বর্তমানে যেহেতু জাতীয় সংসদ কার্যকর নেই, তাই আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের কাছে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকে সামরিক শাসনামল এবং ২০০৭-০৮ এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছর ছাড়া প্রতি বছরই বাজেট জাতীয় সংসদের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়েছে। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট নানা কারণেই ভিন্নতর হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক সরকার আমলে বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা থাকে। সেখানে দলীয় নেতাদের তোষণ করার জন্য এমন কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয় বাস্তবে যার কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকে না।
খাদ্য নিরাপত্তার জন্য উৎপাদনের সঠিক পরিসংখ্যান দরকার
দেশে নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যানের অভাব। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে নিয়মিত যে পরিসংখ্যান দেয়া হচ্ছে তা অনেক ক্ষেত্রেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়। বাস্তবতার সঙ্গে তার মিল থাকে কম। আমাদের জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধির হার, মূল্যস্ফীতি, উৎপাদন, ভোগ ও বণ্টনের ক্ষেত্রে যে পরিসংখ্যান পাওয়া যায় তাতে সাধারণ মানুষের পুরোপুরি আস্থা থাকে না। এই আস্থাহীনতা দূর করা দরকার। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে উপস্থাপন করা দরকার সঠিক ও নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান। নতুবা যথাযথভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার সঠিক বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আমরা যে গবেষণা করি তার জন্যও দরকার হয় সঠিক পরিসংখ্যান। নতুবা তার ফলাফল ইস্পিত লক্ষ্য অর্জনে সফল হয় না। অনেক সময় গবেষকগণ তাদের বিশ্লেষণের মূল ভিত্তি নির্মাণ করেন নিজস্ব সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত থেকে। তবে তার পরিধি থাকে খুবই সীমিত। নির্দিষ্ট এলাকা ও নির্ধারিত নমুনার ভিত্তিতে প্রণীত হয় ওই সব পরিসংখ্যান। বৃহত্তর পরিসরে ও জাতীয়ভাবে তা অনেক সময় প্রযোজ্য হয় না। জাতীয়ভাবে প্রণীত পরিসংখ্যান মূলত দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগ বা সংস্থা থেকে প্রকাশ করা হয়। তার ওপর প্রচ্ছন্নভাবে আধিপত্তমূলক প্রভাব থাকে ক্ষমতাশীন সরকারের। তারই ইঙ্গিতে কখনো পরিসংখ্যান হয় অতিরঞ্জিত, স্ফীত। আবার কখনো হয় কম মূল্যায়িত। নিকট অতীতে এ ধরনের আলোচনা-সমালোচনা বরাবরই আমরা শুনে এসেছি।
এই মুহূর্তে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের চেয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ বেশি জরুরি
ম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জন্য এটি ছিল দ্বিতীয় এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে প্রণীত প্রথম মুদ্রানীতি। বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই প্রস্তাবিত মুদ্রানীতি নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছিল। বর্তমান বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি প্রবণতাকালে কেমন মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হয় তা নিয়ে সবারই আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। প্রায় তিন বছর ধরে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে।
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১০ ফেব্রুয়ারি চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। এটি ছিল চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) দ্বিতীয় এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মুদ্রানীতি। ঘোষিত মুদ্রানীতি নিয়ে আগে থেকেই সংশ্লিষ্ট মহলের বিশেষ আগ্রহ প্রত্যক্ষ করা গেছে। তবে সবাই ধারণা করেছিলেন প্রস্তাবিত মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক হতে পারে। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে ঘোষিত মুদ্রানীতিকে সংকোচনমূলক বলা যেতে পারে। কারণ ঘোষিত মুদ্রানীতিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের চেয়ে বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর বেশি জোর দেয়া হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। এটা বিগত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ঋণ প্রবৃদ্ধি। একই সময়ে শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামাল, ক্যাপিটাল মেশিনারিজ এবং মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি ব্যাপক হারে কমেছে। অর্থাৎ ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি এখন অনেকটাই মন্থর হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ আহরণের হারও কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ আহরণের পরিমাণ কমেছে ৭১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ১০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল ৩৬ কোটি মার্কিন ডলার
টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিকল্প নেই
প্রতিটি রাষ্ট্রেরই লক্ষ্য থাকে কীভাবে দ্রুত এবং টেকসই উন্নয়ন অর্জন করা যায়। সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সর্বাধিক জনকল্যাণ সাধন এবং দেশকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাওয়াই একটি সরকারের মূল দায়িত্ব। যে সরকার এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে সমাজের সর্বস্তরে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে পারে, সেই সরকারই জনকল্যাণমূলক সরকার হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। অনেকের মনে এমন একটি ধারণা আছে যে, শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন করা গেলেই উন্নয়ন অর্জনের মূল লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে; কিন্তু এই ধারণা মোটেও ঠিক নয়। কারণ উন্নয়ন বলতে শুধু একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বুঝায় না। উন্নয়ন হচ্ছে একটি সামগ্রিক ধারণা। অর্থনৈতিক উন্নয়ন কোনো দেশের উন্নয়নের একটি মাত্র সূচক কিন্তু এটাই সামগ্রিক উন্নয়নসূচক নয়। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি অন্যান্য উন্নয়নসূচকে ইতিবাচক অগ্রগতি সাধন করা না গেলে তাকে কোনোভাবেই সুষম উন্নয়ন বলা যাবে না। অর্থনৈতিক উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; কিন্তু এটাই উন্নয়নের একমাত্র মাপকাঠি নয়।
শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের জন্য কেন কমিশন গঠন করা হয়নি!
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার সাধনের জন্য কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। কমিটিগুলো ইতোমধ্যেই তাদের সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দিয়েছে; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, জাতির মেরুদণ্ড শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের জন্য কোনো কমিশন গঠন করা হয়নি। অতীতে বেশ কয়েকটি কমিশন শিক্ষা খাতের সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সময় প্রতিবেদন দাখিল করলেও কোনো সরকারই সেই শিক্ষা কমিশনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করেনি। ফলে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা যুগের চাহিদা পূরণে সক্ষম হচ্ছে না। আমরা উচ্চ শিক্ষিত জনশক্তি গড়ে তুলছি; কিন্তু তারা কতটা সুশিক্ষিত এবং কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে অবদান রাখতে সক্ষম তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এবং কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব না হলে কোনো দিনই জাতি তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারবে না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা যে জনশক্তি গড়ে তুলছে তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করতে মোটেও সক্ষম নয়।
ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মূলনীতি বিশ্ববাসীকে যে বার্তা দিল
দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আর তার এই ফেরা বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরই তার ঘোষিত ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মূলনীতি বাস্তবায়ন শুরু করবেন। ট্রাম্পের এই এজেন্ডা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির খুঁটিনাটি তো পরিবর্তন করবেই, পাশাপাশি এর ফলে আমেরিকার সীমানার বাইরে বসবাস করা কোটি মানুষের জীবনও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে। প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোর ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হতে পারে তা নিয়ে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। নির্বাচনি প্রচারণার সময় বিভিন্ন বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন যে, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক দিনের মধ্যে শেষ করতে পারবেন। যদিও সেটি ঠিক কীভাবে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কখনোই খোলাসা করেননি তিনি।
ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সুবিধা পেতে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি
আশির দশকে তৎকালীন সামরিক-স্বৈরশাসক জেনারেল এইচ এম এরশাদ অপরিকল্পিত জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে ‘এক নম্বর জাতীয় সমস্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। তার এই বক্তব্য সেই সময় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেলেও এটা ছিল সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এই মন্তব্য। কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি তা পরিকল্পিতই হোক বা অপরিকল্পিতই হোক কখনো একটি দেশের জন্য এক নম্বর জাতীয় সমস্যা হতে পারে না। জনসংখ্যা এমনই এক সম্পদ, যার কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবীর উন্নয়ন অগ্রযাত্রা জনসংখ্যা ব্যতীত কোনোভাবেই কল্পনা করা যায় না। জনসংখ্যাকে পরিকল্পিতভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ এবং উৎপাদনশীল উপকরণে পরিণত করা গেলে তা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদে পরিণত হয়। আর জনসংখ্যা যদি অপরিকল্পিতভাবে বেড়ে ওঠে, তাহলে তা একটি দেশের জন্য ‘দায়’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার দায়িত্ব একান্তভাবেই রাষ্ট্রের। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার ব্যর্থতার দায় রাষ্ট্র কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। আরা যদি বাংলাদেশের দিকে দৃষ্টি দিই তাহলে দেখব, আমাদের এখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার ক্ষেত্রে অমার্জনীয় ব্যর্থতা রয়েছে, যার দায় কোনোভাবেই রাষ্ট্র এড়াতে পারবে না।