মুক্তি যুদ্ধ
লক্ষ্য নির্ধারণ ও ইতিবাচক মানসিকতা
খেলা, খেলোয়াড় ও সংগঠক নিয়ে ভাবাবেগ উসকে দেয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। এটি ক্রীড়াঙ্গনের জন্য ক্ষতিকর। বিভাজন আর বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের দ্বন্দ্ব ও বিতর্ক সৃষ্টি ক্রীড়াঙ্গনে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকে দুর্বল করে। বৈচিত্র্যপূর্ণ ঐক্যবদ্ধ ক্রীড়াঙ্গন শুধু সৌন্দর্য নয় এটাই প্রত্যাশিত। ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং পদক্ষেপকে না বুঝে, চিন্তা-ভাবনা না করে ঝাঁপিয়ে পড়াটার মধ্যেই নেতিবাচক মানসিকতা প্রশ্রয় পায়। যেসব ঘটনা ঘটলে লক্ষ্যের পথে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে সে সব ঘটনার সম্ভাবনায় আকাঙ্ক্ষিত হয়ে থাকার নামই উদ্বেগ।
সংস্কৃতির বাতিঘর সনজীদা খাতুন এক মৃত্যুহীন প্রাণ
যে কোনো দেশ বা জাতি কিংবা সংস্কৃতির কেউ না কেউ থাকেন যারা আমৃত্যু কাটিয়ে দেন নিরলস সংস্কৃতিচর্চায়, মানবতার কল্যাণে, দেশের হিতৈষে। কাণ্ডারি হয়ে, আলোকবর্তিকা হয়ে। ফিরে তাকান না নিজের দিকে, সাময়িক সুখের দিকে। তেমনই একজন মানুষ ছিলেন ছায়ানটের সভাপতি সনজীদা খাতুন (৪ এপ্রিল ১৯৩৩-২৫ মার্চ ২০২৫)। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার বাতিঘর। তার হাত ধরে, তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে শুদ্ধ সংগীতচর্চার ধারা। বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীতের প্রমিতচর্চা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে ছায়ানটের প্রযত্নে। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে সনজীদা খাতুন আত্মনিবেদিত প্রাণ। বাঙালি সংস্কৃতির এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনকে ঋদ্ধ করে বাঙালিত্বেও দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তোলার সাধনায় ব্রতী হয়েছিলেন তিনি
এক বিস্মৃত মুক্তিযোদ্ধার গল্প ও বাংলাদেশের অবহেলিত ইতিহাস
বুয়েটে পড়ুয়া প্রকৌশলীরা যদি কূটনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করতেন, তবে হয়তো জাতির জন্য ভালো হতো; কিন্তু সেটি না করলেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আজ সেই দায়িত্ব বিশ্বমঞ্চে পালন করে দেখাচ্ছেন। তার ভূমিকা নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে আলোচনা ও বিশ্লেষণ। এতে আমার মনে একটি প্রশ্ন জেগেছে- শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যা থাকলেই কি সব কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সহজ হয়? নিশ্চয়ই নয়। কারণ জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি এর প্রয়োগ ও চর্চা না থাকলে, সেই বিদ্যাও মূল্যহীন হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে চলুন ফিরে যাই এক সময়ের এক মুক্তিযুদ্ধের বার্তাবাহকের জীবনে।
বাংলাদেশে থাকতে হলে মুক্তিযুদ্ধ মেনেই থাকতে হবে
স্বাধীনতা যুদ্ধ সবসময়ই আমার কাছে ইমোশনাল ব্যাপার। যুদ্ধে গিয়েছি। যুদ্ধের বেদনা নিয়ে আমি সবসময় চলি। চোখের সামনে ভাসছে- সাথী পড়ে গেছে। গুলি খেয়েছে। তার মধ্যে লাফ মেরে উপরে উঠেছে। আমাকে বলেছে- ‘মামা, মাকে দেইখো আর তো।’ কেউ রইলো না। মায়ের একমাত্র সন্তান পাগল হয়ে মরছে। গাঙ সাঁতরাইয়া পার হইছি, পাকিস্তানি বাহিনীর গুলি খাইছি। পাকিস্তানি বাহিনী গুলি করে একদিনে ১৫ হাজার লোক মারছে বুড়িগঙ্গাতে। বুড়িগঙ্গা লাল হয়ে গেছে। ১০ হাজার লোক মারছে জিঞ্জিরাতে। এক দিনে ২৫ হাজার লোক মারা গেছে শুধু কেরানীগঞ্জে। ২ মে জিঞ্জিরা-কেরানীগঞ্জে একটা বাড়িঘরও ছিল না, সব পুড়ে ফেলেছে পাকিস্তানি বাহিনী। সেই মুক্তিযুদ্ধে নদী সাঁতরিয়ে রাইফেলটা নিয়ে পার হয়েছি। শত শত মুক্তিযোদ্ধাকে পাকিস্তানি বাহিনী গুলি করেছে, বাঙ্কারে ক্রলিং করে যাইতেছে। কারও পা গেছে। কারও চোখ গেছে। কারও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ গেছে। কেউ সম্ভ্রম হারিয়েছে। হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছে- তারপর পাকিস্তানি বাহিনী পালিয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী এই সংগঠন শিগগিরই একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। দল গঠনের এই উদ্যোগকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আপাতদৃষ্টিতে এটি একটি ছাত্র আন্দোলন মনে হলেও, বাস্তবে এর রাজনৈতিক অভিসন্ধি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রেরণা সৃষ্টি করুক অমর একুশে বইমেলা
শিক্ষাদীক্ষা-শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধির চর্চায় বাঙালি মুসলমান সমাজ যে অনেক পিছিয়ে আছে এটা প্রথম গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন শিখা গোষ্ঠীর লেখকরা। তাই তারা গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকের মাঝামাঝি গড়ে তোলেন বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন। ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’-এর ব্যানারে এই আন্দোলনে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেন আবুল হুসেন, কাজী আবদুল ওদুদ, কাজী মোতাহার হোসেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী, কাজী আনোয়ারুল কাদীর, আবদুল কাদির, আবুল ফজল প্রমুখ চিন্তাবিদ। তাদের অমোঘ মন্ত্র ছিল- ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে 'বিতর্কিত প্রবন্ধ' প্রত্যাহার ছাত্র সংবাদ কর্তৃপক্ষের
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রকাশিত একটি 'বিতর্কিত প্রবন্ধ' প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের মাসিক প্রকাশনা ‘ছাত্র সংবাদ’।
পঁচাত্তরের ২৫ জানুয়ারি কীভাবে পাস হয়েছিল ‘বাকশাল’
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে দুর্ভিক্ষ এবং জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি নতুন ধরনের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে বঙ্গবন্ধু এগোতে থাকেন- তিনি যেটিকে বলতেন ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’- সেই বিপ্লব কায়েমের অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে পাস হয় সংবিধানের বহুল আলোচিত (এবং বিতর্কিত) চতুর্থ সংশোধনী বিল। যে সংশোধনীর মধ্য দিয়ে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়।
সংস্কারের ‘ষড় ক’ এবং অর্থনৈতিক সংকটের পদধ্বনি
সংস্কার বলতে আপনি কী বোঝেন- সেটি নির্ভর করে আপনি কে, আপনার পেশা কী, আপনার রাজনৈতিক বিশ্বাস ও মত কী, কোন দলের সমর্থক এবং সর্বোপরী দেশ নিয়ে আপনার ভাবনা কী- তার ওপর। একজন রিকশাচালক সংস্কার বলতে যা বোঝেন, একজন রাজনীতির অধ্যাপকের কাছে সংজ্ঞাটি হয়তো সেরকম নয়। আবার জুলাই অভ্যুত্থানে যে রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো সক্রিয় ছিল, তাদের সবার কাছেও সংস্কারের সংজ্ঞা এক নয়। যেমন বিএনপি সংস্কার বলতে বোঝে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযাগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক সরকারের ক্ষমতা গ্রহণ। তাদের কাছে সংস্কার মানে প্রায় দেড় দশক ধরে ভোটবঞ্চিত মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং দেশকে একটি গণতান্ত্রিক ধারায় পরিচালিত করা; কিন্তু সংস্কার প্রশ্নে জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় বিএনপির দীর্ঘদিনের ভোট ও জোটসঙ্গী জামায়াতের অবস্থান ভিন্ন। তারা মনে করে, আগে সংস্কার তারপরে নির্বাচন। অর্থাৎ নির্বাচন তাদের কাছে এক নম্বর অগ্রাধিকার নয়।
হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারবে না
বদরুদ্দীন উমর বাংলাদেশের লেখক-গবেষক ও বামপন্থি রাজনীতিবিদ। তার জন্ম ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর, ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিপিই ডিগ্রি নেন। খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে প্রথমে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, পরে ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। রাজনীতি করবেন বলে ১৯৬৮ সালে পদত্যাগ করেন। পরে সার্বক্ষণিক লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। বর্তমানে বদরুদ্দীন উমর জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি ও সংস্কৃতি পত্রিকার সম্পাদক। সম্প্রতি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলেছেন ভিউজ বাংলাদেশের সঙ্গে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ভিউজ বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক গিরীশ গৈরিক। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ প্রকাশিত হলো শেষ পর্ব