রাশিয়া
অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানো কতটা সহজ?
যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে- সেই দলটি দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর পর গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হলো- তার পেছনে অন্তত বিশটি কারণ আছে। এখানে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা বিদেশি ইন্ধনের অভিযোগ যতই থাকুক, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আওয়ামী লীগ যে দুর্নীতি, দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতির কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল- সেটি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কি বন্ধ হবে?
আজ ২৮ এপ্রিল, ২০২৫। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ৩ বছর ৩ মাস ৫ দিনে গড়াল। অর্থাৎ ১ হাজার ১৫৯ দিনে। হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির দিক দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ যুদ্ধ ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ। ক্ষতিটা যদিও সবচেয়ে বেশি হয়েছে ইউক্রেনের; কিন্তু অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে এ যুদ্ধ সারা বিশ্বকেই নানাভাবে ভোগাচ্ছে; বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ ও এশিয়াকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন এবং তার সহযোগিতায় যুদ্ধ বন্ধের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছিলেন।
চীন-ভারত ঘনিষ্ঠতা, ট্রাম্পের উদ্বেগ ও দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক সমীকরণ
২০২৫ সালে এসে আন্তর্জাতিক রাজনীতি এমন এক মোড় নিয়েছে যেখানে ‘কৌশলগত অবিশ্বাস’ নতুন ধরনের ‘অস্থায়ী মিত্রতা’ তৈরি করছে। চীন ও ভারতের মধ্যকার ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতা, মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের ব্যবহৃত হওয়া, আর দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত অবস্থানের গুরুত্ব- এই সমীকরণগুলো দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। চীন ও ভারতের মধ্যে ২০২০ সালের গ্যালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছিল তিক্ত; কিন্তু বিগত এক বছরে ব্রিকস (BRICS) শীর্ষ বৈঠক, সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO), এবং দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত আলোচনা চীন-ভারত সম্পর্ককে নতুন এক ‘পরিকল্পিত সহাবস্থান’-এ পরিণত করছে।
কৃষি খাতের পুনর্মূল্যায়ন ও কৃষি কমিশন গঠন প্রসঙ্গে
উৎপাদনে আধুনিক উপকরণ ব্যবহার ও ভূমি উন্নয়নে এদের আগ্রহ থাকে কম। প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ প্রাপ্তি ও কৃষি যন্ত্র সংগ্রহে এদের প্রবেশাধিকার কম। ফলে তাদের প্রতি ইউনিট জমির উৎপানে প্রবৃদ্ধির হার কম। অপরদিকে বড় ও মাঝারি কৃষকগণ ক্রমাগতভাবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষাবাদে। তারা ক্ষয়িষ্ণু কৃষক। চাষাবাদে তাদের বিনিয়োগ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে তাদের উৎপাদন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে।
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন ফাটলে রূপ নিচ্ছে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ময়দান থেকে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের শুরু। আত্মপ্রকাশ ঘটে ভূরাজনৈতিক ব্লকের। যুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্বে সমাজতান্ত্রিক ব্লক সোভিয়েত ইউনিয়নের বাড়-বাড়ন্তে উদ্বেগ বাড়তে থাকে ওই ব্লকের। বাড়তে থাকে উত্তেজনা। শুরু হয় একে অপরের মধ্যকার বহুমাত্রিক প্রতিযোগিতা। উভয় ব্লকেরই দাবি ছিল, বিপরীত ব্লক তাদের ভেতরকার ঐক্য ধ্বংস করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদল যেমন পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে অবস্থান নিতে পারত না, তেমনি সোভিয়েত ট্যাঙ্কগুলোও প্রুশিয়ান ময়দানে প্রবেশ করতে পারত না যুক্তরাষ্ট্রের কারণে। তখন ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন করার এই প্রক্রিয়াকে তখন ‘ডিকাপলিং’ বলা হতো। উভয় ব্লকের কয়েক দশকের দ্বন্দ্ব যা করতে পারেনি, তা এখন কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই করতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর পশ্চিমাদের সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি করবে কি না!
বর্ণিত পটভূমিতে আমাদের দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় সফরে চীন যাচ্ছেন। ড. মোহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরের বিষয়ে চীনের বিশেষ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের জন্য বিশেষ প্লেন পাঠাবে। এ থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, চীন ড. মোহাম্মদ ইউনূসের এই প্রস্তাবিত সফরের ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। বাংলাদেশে চীনের প্রচুর পরিমাণ বিনিয়োগ আছে। তারা আমাদের উন্নয়ন কাজে সহায়তা করছে। চীনের বিভিন্ন ধরনের পণ্যদ্রব্য আমাদের দেশে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশ এক সময় ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ পণ্য আমদানি করত। বর্তমানে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চীনের অবস্থান সবার শীর্ষে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ২৫ ট্রিলিয়ন টাকা। একই সময়ে বাংলাদেশ-ভারতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ৪৬ ট্রিলিয়ন টাকা। ওই বছর বাংলাদেশের মোট আমদানি বাণিজ্যে চীনের অংশীদারত্ব বৃদ্ধি পায় ১৫ দশমিক ১৭। আর বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য হ্রাস পায় ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট ৬৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য চীনে রপ্তানি করে। এর বিপরীতে চীন থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে ২২ দশমিক ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। এই বাস্তবতায় ড. মোহাম্মদ ইউনূস চীন সফরে যাচ্ছেন।
ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের সংস্কার
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রথমে যে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তার মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও ছিল। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করে জনপ্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের নিমিত্তে ৩ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে ড. বদিউল আলম মজুমদারকে প্রধান করে ৮ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা সংস্কারের ওপর সমধিক গুরুত্ব দিয়েছেন, তার মতে সংস্কার ভাবনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। দেশের জনগোষ্ঠীর প্রত্যেক নাগরিককে দৃঢ়তার সঙ্গে সংস্কারের এই মহাযজ্ঞে আনন্দের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে জনগণকে এগিয়ে আসতেও আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতি বন্ধ করুন
আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং জাতিসমূহের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখাই জাতিসংঘ সনদের মূল লক্ষ্য। জাতিসংঘের সনদ মূলত একটি সংবিধান, আর সংবিধান মানেই এক প্রকার আইন। এই সনদের ২ ধারা অনুযায়ী সব সদস্যরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও সমতা রক্ষাই জাতিসংঘের ভিত্তি; কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র, বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য (ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন) দেশগুলোই বারবার এই আইনের লঙ্ঘন করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে আছে সবসময়ই। চীন, রাশিয়া কম যায়নি। সম্প্রতি ভারতও এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেই তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। এ যেন ‘জোর যার মুল্লুক তার’ গ্রাম্যনীতি। তাহলে আর জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার অর্থ কী? যে রক্তপাত ও মানবিক বিপর্যয়ের ওপর দাঁড়িয়ে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা কি ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো ভুলে গেছে?
রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনিশ্চয়তা দূর করুন
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যতগুলো মেগা প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছে তার প্রায় সবই এখন গলার কাঁটা হয়ে গেছে। কিছু প্রকল্প চালু হয়ে যাওয়ার পরও আশানুরূপ লাভের মুখ দেখছে না। যেমন, কর্ণফুলী টানেল। আর অনেক মেগা প্রকল্পের কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা সরকার বলতে পারছে না। এর মধ্যে একটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রকল্প রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র।
ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মূলনীতি বিশ্ববাসীকে যে বার্তা দিল
দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আর তার এই ফেরা বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরই তার ঘোষিত ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মূলনীতি বাস্তবায়ন শুরু করবেন। ট্রাম্পের এই এজেন্ডা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির খুঁটিনাটি তো পরিবর্তন করবেই, পাশাপাশি এর ফলে আমেরিকার সীমানার বাইরে বসবাস করা কোটি মানুষের জীবনও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে। প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোর ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হতে পারে তা নিয়ে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। নির্বাচনি প্রচারণার সময় বিভিন্ন বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন যে, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক দিনের মধ্যে শেষ করতে পারবেন। যদিও সেটি ঠিক কীভাবে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কখনোই খোলাসা করেননি তিনি।