শিশির ভট্টাচার্য্য
মডার্ন আর্টের পরম্পরায় সুরঞ্জনার সীবিত কোলাজ
বিংশ শতকের প্রথম দুই দশকে উদ্ভাবিত ও চর্চিত কিউবিজম, ফোবিজম, কোলাজ, দাদা... মডার্ন আর্টের পরম্পরায় একবিংশ শতকের প্রথম দুই দশকে ঢাকা ও মন্ট্রিয়লে সুরঞ্জনা ভট্টাচার্য্য (১৯৬৯) যে শিল্পমাধ্যমের চর্চা করে চলেছেন, তার নাম ‘সীবিত কোলাজ’। ২০০৭ সালে দুরারোগ্য ডিস্ট্রোফি রোগে আক্রান্ত হবার কয়েক বছর পর থেকে নিত্যনতুন চারুকৃতির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক ব্যথা ও একাকিত্বকে জয় করার অস্ত্র হিসেবে সুরঞ্জনা ব্যবহার করছেন নতুন এই শিল্পমাধ্যমকে।
বাংলাদেশের কাম্যতম বহুভাষী শিক্ষা
প্রতিটি ভাষা পৃথকভাবে জীবন ও জগৎকে ধারণ ও বর্ণনা করে থাকে- ত্রিশের দশকে স্যাপির-হোর্ফ হাইপথিসিসে এমনটা দাবি করা হয়েছে। এই দাবি যদি সত্য হয়, তবে বহুভাষী শিক্ষা একভাষী শিক্ষার তুলনায় কার্যকর ও সম্পূর্ণতর হবার কথা। বহুভাষী শিক্ষা ১) স্বাভাবিক (Natural/Organic) হতে পারে এবং ২) কৃত্রিম হতে পারে (Artificial)। রোমান আমলে (খ্রিষ্টপূর্ব ১ম থেকে ৫ম শতক) ল্যাটিন ভাষা-ভিত্তিক বহুভাষী শিক্ষাব্যবস্থা ছিল একটি স্বাভাবিক বহুভাষী শিক্ষাব্যবস্থা (Natural/Organic Multilanguage Education), কারণ ল্যাটিন তখনও একটি জীবিত ভাষা। মধ্যযুগের দ্বিতীয় পর্বে (১০০০ থেকে ১৫০০) ল্যাটিন ভাষা-ভিত্তিক বহুভাষী শিক্ষাব্যবস্থা ছিল একটি কৃত্রিম বহুভাষী শিক্ষাব্যবস্থা (Artificial/Imposed Multilanguage Education), কারণ ল্যাটিন তখন একটি মৃত ভাষা। আমার দাবি, স্বাভাবিক বহুভাষী শিক্ষা ব্যবস্থা যতটা সর্বজনীন ও কার্যকর শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারে, কৃত্রিম বহুভাষী শিক্ষাব্যবস্থা এই দুই কর্তব্য পালনে ততটাই ব্যর্থ হবার কথা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাংলা ভাষাভিত্তিক বহুভাষী শিক্ষাব্যবস্থা হবে একটি স্বাভাবিক শিক্ষাব্যবস্থা, কারণ বাংলা সর্বসাধারণের মুখের ভাষা।
ভাষার রাজনীতি
এমন একটা পরিস্থিতি কল্পনা করা যাক, যেখানে কোনো উপলক্ষে একটি কেক কাটা হবে। কেক ছোট, খানেওয়ালা বেশি। কেকের বেশির ভাগ আমি কিংবা আমার ছেলেমেয়ে, আমার আত্মীয়স্বজন, আমার পক্ষের লোকজন খেলে আমার বা আমাদের জন্য ভালো। কেকের সিংহভাগ আমার প্রতিপক্ষ খেয়ে নিলে তাদের জন্য ভালো। সবাই মিলে খেলে সবার জন্য ভালো। ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা!’ প্রতিপক্ষ কিংবা বাকি সবার সঙ্গে কেক ভাগ করে খেলে নিজের কিংবা নিজেদের পুষ্টি নিশ্চিত হবে কি না, সে প্রশ্ন উঠবেই। ‘আপনি বাঁচলে তবে তো বাপের নাম!’ কেক বাটোয়ারা নিয়ে কোন সিদ্ধান্তটি শ্রেয়তম, ব্যক্তিক, গোষ্ঠীক ও সামাজিক পর্যায়ে সেটা নির্ধারণ করার নামই রাজনীতি।