জাতিসংঘ
গাজাবাসীর কান্না কি পৌঁছাচ্ছে বিশ্বনেতাদের কানে?
গাজায় তখন শেষ রাত। পবিত্র রমজান মাস হওয়ায় গাজার অনেক লোক সেহরি খাচ্ছিলেন, তখনই বোমারু বিমানের শব্দ। মুহুর্মুহু বোমার বিস্ফোরণ। খাবার ফেলেই তাদের পালাতে হলো। চোখের সামনে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল তাদের ঘরবাড়ি। যুদ্ধবিরতি চলছে। কেউ কল্পনাও করতে পারেনি অতর্কিতে এমন ভয়ংকর হামলা নেমে আসবে। চোখের সামনেই মারা গেল অনেক প্রিয়জন। ছোট্ট শিশুরা পিতা-মাতাকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে একা একা রাস্তায় দৌড়াতে লাগল। একটু পর ভেসে এলো ফজরের আজান। মোয়াজ্জিনের কণ্ঠও কান্নাভেজা।
বিদেশি ভাষা ব্যবহারে জাতীয় ভাষানীতি অবলম্বন করতে হবে
অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃরাষ্ট্রিক ঘাত-প্রতিঘাত ও সংশ্লেষণের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র গতিশীল থাকে। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে উপজাতি, ধর্মীয় সম্প্রদায়, বিশেষ আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য-সম্পন্ন জনগোষ্ঠী, ভাষাগত পার্থক্য ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে আলাদা আলাদা জনগোষ্ঠী দেখা দেয়। রাষ্ট্রের জনপ্রকৃতিতে বিরাজ করে বৈচিত্র্য। বৈচিত্র্যর স্বীকৃতি দিয়ে, বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ও সমন্বয়- এই নীতি অবলম্বন করে সরকারকে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ জনপ্রকৃতির বৈচিত্র্যগত সমস্যার সমাধান করতে হয়। সংস্কৃতির বহুত্ববাদের (Pluralism in culture) কথা বলে জাতির ভেতরে অনৈক্য সৃষ্টি করলে জাতি টেকে না। তাতে রাষ্ট্রের অস্তিত্বের শর্তও নষ্ট হয়।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে আমাদের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার স্থির করতে হবে
লাদেশের জনগণ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্ররূপে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করার পরও এরা বাংলাদেশের স্বতন্ত্র জাতীয় সংস্কৃতির কথা ভাবতে পারেন না। তাদের দৃষ্টি অতীতমুখী, বাংলাদেশের লেখক, শিল্পী, রাজনীতিবিদদের অপর একটি অংশে দেখতে পাই ভারতের সংস্কৃতির বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতির প্রতি ভীষণ বিরূপ মনোভাব। এরা বাংলাদেশের জনগণের সংস্কৃতির উৎস খুঁজেন মধ্য যুগের মধ্যপ্রাচ্যের সংস্কৃতিতে বিশেষ করে ইসলাম প্রচারের ইতিহাসে। এরা বাংলার ইতিহাসে বখতিয়ার খিলজির লক্ষণাবতি ও গৌড় জয়ের আগে যেতে চান না। আরবে ইসলাম প্রচার থেকে আরম্ভ করে বাংলার তুর্কি, পাঠান, মোগল শাসকদের শাসনকাল অতিক্রম করে ওহাবি ও ফরাজি আন্দোলনের ধারা ধরে দ্বিজাতিতত্ত্ব ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা এবং পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসে আসেন। তারা জোর দেন দ্বিজাতিতত্ত্বে। এই সেদিন, মনে হয় ২০০৪ সালে, বখতিয়ার খিলজির লক্ষণাবতি জয়ের আটশ বছর পূর্তি উপলক্ষে একদল বুদ্ধিজীবী সতেরটি ঘোড়া নিয়ে পল্টন ময়দানে সমবেত হয়ে অনুষ্ঠান করেছেন এবং প্রচার মাধ্যমে তা বিপুল প্রচার লাভ করেছে। বাংলাদেশের লেখক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীদের একটি অংশ রবীন্দ্রভক্ত এবং অপর একটি অংশ নজরুলভক্ত।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভয় দেখাচ্ছেন, নাকি সত্যি?
সবেমাত্র ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এরই মধ্যে তিনি তার ক্ষমতাবলে বহু আদেশ দিয়ে এবং আগামীতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ইচ্ছা ব্যক্ত করে বিশ্বব্যাপী অনেকের পিলে চমকে দিয়েছেন। রীতিমতো হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। ইতোমধ্যেই তিনি এতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা অনেকের কাছেই স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে না। বিগত দিনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেই এভাবে এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি; অন্য দেশকে হুমকি দেননি। সমালোচকরা কেউ কেউ তাকে উগ্র জাতীয়তাবাদী হিসেবে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার অতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেয়া এবং গাজার অধিবাসীদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করা, কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্যে পরিণত করা, যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে একাধিকবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘গভর্নর’ বলে উল্লেখ করেছেন; পরবর্তীতে কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের ওপর উচ্চহারে ট্যারিফ ধার্য করা, ইউএসএইড বন্ধ করে দেয়া, অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিপোর্ট করা, ডেনমার্কের কাছ থেকে গ্রিনল্যান্ড নিয়ে নেয়া, পানামা ক্যানেলের দখল পুনরুদ্ধার করা, ইউক্রেনের খনিজসম্পদের বিনিময়ে সামরিক সাহায্য দেয়া এবং সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের গোয়েন্দা তথ্যে প্রবেশের অধিকার বন্ধ করাসহ আরও অনেকগুলো বিষয়।
আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতি বন্ধ করুন
আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং জাতিসমূহের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখাই জাতিসংঘ সনদের মূল লক্ষ্য। জাতিসংঘের সনদ মূলত একটি সংবিধান, আর সংবিধান মানেই এক প্রকার আইন। এই সনদের ২ ধারা অনুযায়ী সব সদস্যরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও সমতা রক্ষাই জাতিসংঘের ভিত্তি; কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র, বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য (ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন) দেশগুলোই বারবার এই আইনের লঙ্ঘন করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে আছে সবসময়ই। চীন, রাশিয়া কম যায়নি। সম্প্রতি ভারতও এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেই তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। এ যেন ‘জোর যার মুল্লুক তার’ গ্রাম্যনীতি। তাহলে আর জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার অর্থ কী? যে রক্তপাত ও মানবিক বিপর্যয়ের ওপর দাঁড়িয়ে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা কি ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো ভুলে গেছে?
আন্তর্জাতিক কনভেনশন গণহত্যা বিষয়ে নিশ্চুপ কেন?
মানুষে মানুষে সংঘাতের ক্ষেত্রে নিয়ম নির্ধারণের এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে; কিন্তু আধুনিক যুগের আগে, বিশ্বের কোনো শক্তিরই সব দেশের ওপর কোনো উল্লেখযোগ্য নিয়ন্ত্রণ ছিল না কিংবা মিত্র দেশগুলোর জোট ছিল না-যাদের ওপর এই কাঙ্ক্ষিত নিয়মগুলো প্রয়োগ বা বাস্তবায়ন করা যাবে। তবে ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, ইউরোপীয় দেশগুলো নিজেদের মধ্য কিছু চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক আইন পালন করা বাধ্যতামূলক করা হয়। ইউরোপীয় দেশগুলো মূলত এই সিদ্ধান্তে আসে যে, ওই চুক্তিগুলো আমলে নিয়ে তাদের আন্তর্জাতিক আইন পালনে বাধ্যবাধকতা আরোপের ক্ষমতা রয়েছে। এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, ইউরোপের এই দেশগুলো সামুদ্রিক নিয়মনীতির বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছায়, যা ছিল যুদ্ধের আইনের প্রথম ভিত্তি। এই আইনগুলো বিংশ শতকে ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে থাকে এবং এর মধ্যে কিছু আইন আজ অবধি বলবৎ রয়েছে। দুটি বিশ্বযুদ্ধের পরে, মানবিক বিপর্যয় এবং গণহত্যা নির্মূলের ক্ষেত্রে এই আইনের মানবতার দিকগুলো আরও বেশি নজর কাড়ে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব গৃহীত
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার (২ মে) বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।
ইসরায়েলের রাফাতে স্থল অভিযান হবে ‘নজিরবিহীন মানবিক বিপর্যয়’: জাতিসংঘ
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান বলেছেন, “বাস্তব সত্য হল, রাফাতে স্থল অভিযান চালানো হলে সেখানে ‘নজিরবিহীন মানবিক বিপর্যয়’ থেকে কম কিছু হবে না। তখন কোনও মানবিক পরিকল্পনাই এটিকে প্রতিহত করতে পারবে না।”
গাজার ধ্বংসস্তূপ সরাতে ১৪ বছর লাগতে পারে: জাতিসংঘ
ইসরায়েলি তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড। সেখানকার ধ্বংসস্তূপ সরাতে ১৪ বছর লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া, নজর রাখবে ভারত
বাংলাদেশ ও চীনা সেনাবাহিনী আগামী মাসে প্রথমবারের মতো যৌথ সামরিক মহড়া করবে। বৃহস্পতিবার(২৫ এপ্রিল) চীনা কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দিয়েছে। এ খবরের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ওই মহড়ার দিকে ভারত নজর রাখবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য চীন ও ভারতের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে। বৃহস্পতিবার চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া ও ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই এ খবর দিয়েছে।