বিশ্ব ব্যাংক
ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সুবিধা পেতে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি
আশির দশকে তৎকালীন সামরিক-স্বৈরশাসক জেনারেল এইচ এম এরশাদ অপরিকল্পিত জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে ‘এক নম্বর জাতীয় সমস্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। তার এই বক্তব্য সেই সময় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেলেও এটা ছিল সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এই মন্তব্য। কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি তা পরিকল্পিতই হোক বা অপরিকল্পিতই হোক কখনো একটি দেশের জন্য এক নম্বর জাতীয় সমস্যা হতে পারে না। জনসংখ্যা এমনই এক সম্পদ, যার কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবীর উন্নয়ন অগ্রযাত্রা জনসংখ্যা ব্যতীত কোনোভাবেই কল্পনা করা যায় না। জনসংখ্যাকে পরিকল্পিতভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ এবং উৎপাদনশীল উপকরণে পরিণত করা গেলে তা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদে পরিণত হয়। আর জনসংখ্যা যদি অপরিকল্পিতভাবে বেড়ে ওঠে, তাহলে তা একটি দেশের জন্য ‘দায়’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার দায়িত্ব একান্তভাবেই রাষ্ট্রের। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার ব্যর্থতার দায় রাষ্ট্র কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। আরা যদি বাংলাদেশের দিকে দৃষ্টি দিই তাহলে দেখব, আমাদের এখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার ক্ষেত্রে অমার্জনীয় ব্যর্থতা রয়েছে, যার দায় কোনোভাবেই রাষ্ট্র এড়াতে পারবে না।
বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিশ্বব্যাংকের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বৈশ্বিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটির সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আন্না বিয়ার্দে।
অতিমাত্রায় বিদেশি ঋণ জাতির আর্থিক স্বাধীনতা বিপন্ন করে
গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। সেই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মার্কিন অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কেন হচ্ছে না, সে সম্পর্কে তার গুরুত্বপূর্ণ মতামত উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষকরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো মার্কিন অধ্যাপকের বক্তব্য শ্রবণ করছিলেন। এমন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এক তরুণ শিক্ষক দাঁড়িয়ে মার্কিন অর্থনীতিবিদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আমাদের অর্থনীতির ওপর নানাভাবে হস্তক্ষেপ করছেন বলেই আমরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নয়ন অর্জন করতে পারছি না। মার্কিন অর্থনীতিবিদ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর তরুণ অধ্যাপকের উদ্দেশে বলেন, যে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ৮০ শতাংশ অর্থ আমরা জোগান দিই, সেই অর্থনীতি কি আপনাদের নাকি আমাদের? আপনার যদি নিজস্ব উৎস থেকে উন্নয়ন কাজের অর্থায়ন করতে পারতেন তাহলে আমাদের পরামর্শ দেবার কোনো প্রয়োজন হতো না। তার এই বক্তব্য শুনে বাংলাদেশি তরুণ অধ্যাপক আর কোনো কথা না বলে বসে পড়েন।
জরিপের ওপর ভিত্তি করে পরিসংখ্যান প্রকাশ যে কারণে পূর্ণাঙ্গ নয়
জরিপের ওপর ভিত্তি করে পরিসংখ্যান প্রকাশ যে কারণে পূর্ণাঙ্গ নয়
বায়ুদূষণ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করুন
অসংক্রামক রোগে মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়, তার অধিকাংশই বায়ুদূষণজনিত। বাতাসে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণার প্রভাবে সৃষ্টি হওয়া দূষণের ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে অন্তত ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পক্ষান্তরে রাজস্ব বাড়াবে
শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পক্ষান্তরে রাজস্ব বাড়াবে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের পথ তৈরি করতে পারে, বাস্তবায়ন করুক নির্বাচিত সরকার
নিয়মিত সরকারের কর্মকাণ্ড মূল্যায়নের জন্য ১০০ দিন খুব বেশি সময় নয়। আর এই বিশেষ ধরনের সরকারের ক্ষেত্রে আমাদের আরও নমনীয় হতে হবে। তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ১০০ দিনে এই সরকার কী কী দায়িত্ব পালন করতে পারতেন এবং কী কী দায়িত্ব পালন করেছেন তার একটি পর্যালোচনা হতে পারে। বর্তমান সরকারের ভূমিকাকে আরও কার্যকর করার জন্যই এ ধরনের পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে। নিয়মিত সরকারের চেয়ে এই সরকারের আবার অনেক কিছু করার সুযোগ বেশি। কারণ এই সরকারের কোনো রাজনৈতিক পিছুটান নেই। তারা চাইলে জনস্বার্থে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবেন। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন হবার কারণে তাদের কাছে প্রত্যাশা বেশি। তাদের ভোটের চিন্তা নেই। যদি জনগণের আকাঙ্ক্ষা তাদের হিসাবের মধ্যে থাকে তাহলেই তারা অনেক অর্থবহ কাজ করতে পারবেন।
তথ্য নির্ভুলতায় বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও পরিপ্রেক্ষিত
তথ্য যাচাই আর নীতি নির্ধারণে আইবিএম প্রোগ্রামার জর্জ ফুয়েশেলের কথাটা প্রণিধানযোগ্য- ‘গার্বেজ ইন, গার্বেজ আউট’। মানে যত আবর্জনা বা ভুল তথ্য অন্তর্জ্বালে ভরা হবে, তত ভুল তথ্যই সমাজে ছড়ানো হবে। তথ্য বিশ্লেষণে আর নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মিথ্যা ও অবিশ্বস্ত তথ্য বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্তের দিকে নিয়ে যায়। এতে যে খারাপ নীতিগুলো প্রবর্তিত হয়, তার প্রতিক্রিয়া হতে পারে মারাত্মক। সঠিক তথ্য প্রকাশ করার ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো কঠিন সিস্টেম তৈরি করেছে; কিন্তু বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাই না করেই এখানে তথ্য প্রকাশ করে দেয়ার প্রবণতা আছে। তথ্য সংগ্রহের একেবারে শুরু থেকেই এটা চলছে। ফলে এই গরমিল জাতীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণেও প্রভাব ফেলেছে। এই অসংগতির প্রভাব পড়েছে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা থেকে শিক্ষাগত নীতি পর্যন্ত।
কর্ণফুলী টানেলে ঋণ করে আনা বড় বিনিয়োগ গচ্চা
আয়ের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি ব্যয়ের লোকসানি মেগা প্রকল্প চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল এখন ‘গলার কাঁটা’। এটি নির্মাণে আনা ঋণ এবং সুদের অর্থও পরিশোধ করতে হচ্ছে অন্য প্রকল্পে নেয়া ঋণের অর্থ থেকে। ফলে একদিকে লোকসান আর অন্যদিকে ঋণের ঘানি টানতে গিয়ে দুদিক দিয়েই শাঁখের করাতের মতো দেশের অর্থনীতিকে কাটছে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেলটি।