Views Bangladesh Logo

‘টিউলিপ সিদ্দিকের বিকল্প বিবেচনা করছে’ যুক্তরাজ্য সরকার, দাবি সানডে টাইমসের

যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হলে তার জায়গায় নতুন দায়িত্ব কে পাবেন, তা বিবেচনা করা শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জ্যেষ্ঠ সহকর্মীরা, খবর দ্য সানডে টাইমসের।

সানডে টাইমস জানিয়েছে, স্টারমারের কিছু ঘনিষ্ঠ লোক আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও, সিদ্দিকের উত্তরসূরি হিসেবে কে আসতে পারেন, তা বিবেচনা করছেন।

গত সোমবার (৬ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্যের একটি স্বাধীন তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক।

এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিউলিপ স্বাধীন তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানোর আগেই তার বিকল্প হিসেবে কয়েকজনের নাম বিবেচনা করা হয়েছে।

এদিকে, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র টিউলিপকে তার পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য দলের সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করার বিষয়টিকে "সম্পূর্ণ অসত্য" বলে দাবি করেছেন। এর আগে, কিয়ার স্টারমার জানিয়েছিলেন, টিউলিপের ওপর তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।

ডাউনিং স্ট্রিটের বিবেচনাধীন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন র‍্যাচেল রিভসের দুই মন্ত্রীর সহকারী এলেস্টেয়ার স্ট্রাথার্ন এবং ইমোজেন ওয়াকার।

অন্য প্রার্থীরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের সংসদীয় ব্যক্তিগত সচিব (পিপিএস) ক্যালাম অ্যান্ডারসন, কনিষ্ক নারায়ণ, পরিবেশ দপ্তরের পিপিএস জশ সাইমন্স এবং রেচেল ব্লেক।

অ্যাটর্নি জেনারেল লুসি রিগবি এবং একজন মন্ত্রীর সহকারী ও অর্থনীতিবিদ তোরস্টেন বেল-ও শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।

লেবার পার্টির একটি সূত্র জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিকের পদক্ষেপ এটা নির্দেশ করে যে, তিনি নিজের দোষ স্বীকার করতে প্রস্তুত এবং তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেবেন।

টিউলিপ সিদ্দিক একাধিক সম্পত্তিতে বসবাসের কারণে চাপের মুখে রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে কিংস ক্রসের কাছে একটি দুই বেডরুমের ফ্ল্যাট এবং হ্যাম্পস্টেডের একটি আলাদা বাড়ি।

দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) জানিয়েছে, ২০০১ সালে ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৩৮০ মিলিয়ন ডলার) দিয়ে কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন আবদুল মোতালিফ নামে একজন ডেভেলপার। শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। ২০০৪ সালে কোনো অর্থ না দিয়েই টিউলিপ সিদ্দিক ওই ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছিলেন।

রোববার (৫ জানুয়ারি) দ্য মেইল জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক আগে প্রতিবেদকদের বলেছিলেন, ফ্ল্যাটটি তার বাবা-মায়ের মাধ্যমে কেনা হয়েছিল এবং তাকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।

দ্য সানডে টাইমস পরবর্তীতে জানিয়েছে, লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড এলাকায় টিউলিপ সিদ্দিকের বোনকে বিনামূল্যে আরেকটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করা মঈন গনি নামে একজন আইনজীবী। হ্যাম্পস্টেডের ওই ফ্ল্যাটে একসময় বসবাস করেছিলেন টিউলিপ।

এছাড়া, ইস্ট ফিঞ্চলেতে যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আবদুল করিমের মালিকানাধীন ২.১ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে সিদ্দিক বলেছেন, ‘আমি স্পষ্ট যে আমি কিছু ভুল করিনি। তবে, সন্দেহ এড়াতে, আমি চাই স্বাধীনভাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে সত্যতা যাচাই করা হোক। আমি অবশ্যই নিশ্চিত করব যে আপনাদের এই কাজের জন্য সব তথ্য দিবো।’

টিউলিপের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই অভিযোগগুলোর জন্য কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি এবং টিউলিপ পুরোপুরি এই দাবিগুলো অস্বীকার করেছেন।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ