থামেনি দুর্নীতি, তাই ঘুণে পোকার মতো রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নানা সমস্যা মোকাবিলা করে চলেছে। বাংলাদেশ এমনই একটি দেশ যার সমস্যার কোনো শেষ নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রেই জটিল সমস্যা প্রত্যক্ষ করা যায়। এক সময় যেসব প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা নিয়ে আমরা গর্ব করতাম এখন সেসব প্রতিষ্ঠানও আকণ্ঠ সমস্যায় জর্জরিত। এসব সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে জটিল সমস্যা হচ্ছে নিরাময় অযোগ্য দুর্নীতি। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ব্যাপক দুর্নীতি এবং অনিয়মে পরিপূর্ণ। ফলে জনগণের ট্যাক্সের অর্থে পরিচালিত এসব প্রতিষ্ঠান কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সেবা দিতে পারছে না। জনগণকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পেতে তার জন্য বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সাড়ে তিন বছর দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিল। তখনো ব্যাপক দুর্নীতির উপস্থিতি প্রত্যক্ষ করা গেছে। তবে সেই সময়ের প্রেক্ষাপট ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। সদ্য স্বাধীন দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই অরাজকতা বিরাজ করছিল। সেই সুযোগে কিছু মানুষ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হয়েছিল পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হয়ে আসবে; কিন্তু পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি তো স্বাভাবিক হয়নি বরং আরও অধঃপতন ঘটেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই দুর্নীতি আর অনাচার জেঁকে বসে।
আশির দশকে এইচ এম এরশাদ প্রেসিডেন্ট থাকাকালে একপর্যায়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশের এক নম্বর জাতীয় সমস্যা হচ্ছে অপরিকল্পিত জনসংখ্যা বৃদ্ধি; কিন্তু তার এই বক্তব্য সঠিক ছিল না। কারণ জনসংখ্যা তা পরিকল্পিত বা অপরিকল্পিত যাই হোক না কেন তা কখনোই একটি জাতির এক নম্বর জাতীয় সমস্যা হতে পারে না। জনসংখ্যা এমনই এক উৎপাদন উপকরণ যার সংস্পর্শ ছাড়া কোনো উৎপাদন কার্য সম্পাদিত হতে পারে না। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। জনসংখ্যা যদি উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য দিয়ে গড়ে তোলা না যায় তাহলে তা একটি দেশের জন্য মারাত্মক সমস্যায় পরিণত হতে পারে। আর জনসংখ্যাকে যদি জনসম্পদে পরিণত করা যায় তাহলে তা যে কোনো দেশের জন্য শ্রেষ্ঠ উৎপাদন উপকরণে পরিণত হতে পারে। কাজেই জনসংখ্যা কখনোই সমস্যা নয়, সমস্যা হচ্ছে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল অনেক দেশের এক নম্বর জাতীয় সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সেই দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা।
যখন কোনো দেশে সামরিক শাসন জারি হয় তারপর কিছু দিন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ফলে সমাজে যারা প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজ তারা কিছুটা হলেও নিজেদের গুটিয়ে নেয়; কিন্তু সামরিক শাসন যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে দুর্নীতির বিস্তার আরও ত্বরান্বিত হয়। স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে যে রাষ্ট্রটি বিশ্ব দরবারে যাত্রা শুরু করেছিল তা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হতে খুব একটা সময়ের প্রয়োজন হয়নি। তারপর থেকে দুর্নীতি শুধু বেড়েই চলেছে। যদিও অনেক সময় সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের কথা খুব জোরেশোরে প্রচার করা হয়েছে। দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তারের জন্য ক্ষমতাসীন সরকার বরাবরই আগের সরকারের ওপর দোষ চাপিয়ে দায়মুক্তি পাবার চেষ্টা করেছে। ২০০১ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশকে বিশ্বের শীর্ষদেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এরপর আরও ৪ বার বাংলাদেশ দুর্নীতির ধারণা সূচকে বিশ্বে শ্রেষ্ঠ স্থান দখল করে। এটা নিয়ে তৎকালীন বিরোধী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নানাভাবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারকে অভিযুক্ত করতো; কিন্তু তারা ভুলে যেত, ২০০১ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল দুর্নীতির যে ধারণা সূচক প্রকাশ করেছিল তাতে ২০০০ সালের অবস্থাকে প্রতিফলিত করা হয়েছিল। আর সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারে ছিল। কাজেই দুর্নীতির ধারণা সূচকে শ্রেষ্ঠ স্থান দখল করার দায়ভার আওয়ামী লীগ সরকারের ওপরই বর্তায়। আর দুর্নীতি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কোনো একটি দেশে দুর্নীতি বাড়তে বাড়তে এক সময় শীর্ষ স্থানে চলে আসে। পরবর্তী প্রতিটি সরকার আমলেই দুর্নীতি শুধু বেড়েছেই।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সাড়ে ১৫ বছরে দুর্নীতির ব্যাপকতা অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছিল। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতি অনেকটাই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছিল। গত সরকারের বিদায়ের পর বিভিন্ন সূত্র থেকে দুর্নীতির যে চিত্র প্রকাশিত হচ্ছে তা যে কোনো সচেতন নাগরিকের জন্য উদ্বেগজনক। দুর্নীতির নতুন নতুন ক্ষেত্র এবং উৎস আবিষ্কৃত হয়েছে। তার মাধ্যমে সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত একটি গোষ্ঠী বিস্তর অর্থ কামিয়ে নিয়েছে। একজন প্রতিমন্ত্রীর বিদেশে ৬ শতাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট আছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। কানাডার বেগমপাড়ায় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের সবচেয়ে বেশি বাড়ি ও সম্পদ রয়েছে। এটা কি চিন্তা করা যায়? রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা তিনি যত উচ্চ পদে আসীন থাকুক না কেন তিনি যদি সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন এবং দুর্নীতিমুক্ত থাকেন তাহলে স্ট্যাটাস অনুযায়ী তার সংসারের ব্যয় নির্বাহিত হবার কথা নয়। দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার সর্বত্রই পরিলক্ষিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সাড়ে তিন বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। সেই সময়ের দুর্নীতির বিষয়টি আমি খুব একটা বিবেচনায় নিতে চাই না। কারণ এই অল্প সময়ে সদ্য স্বাধীন একটি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় উন্নয়নের জন্য খুব বেশি কাজ করার সুযোগ ছিল না। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ যদি আরও দীর্ঘ সময় রাষ্ট্র পরিচালনার সময় পেত তাহলে দুর্নীতি হয়তো হ্রাস পেত অথবা আরও বৃদ্ধি পেত। কাজেই সেই সময়ের দুর্নীতির নিয়ে কিছু বলতে চাই না; কিন্তু পরবর্তীতে যারাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করেছেন সব আমলেই দুর্নীতি শুধু বেড়েছে। কোনো সময়ই দুর্নীতি কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো এখন বিপন্ন অবস্থার মধ্যে রয়েছে। বলা হয় শিক্ষা হচ্ছে একটি জাতির মেরুদণ্ড। এই প্রবাদ বাক্যটি আমরা সবাই বলে থাকি; কিন্তু আপনি লক্ষ্য করেন শিক্ষা খাতের অবস্থা কেমন। সেখানে দুর্নীতি কতটা বিস্তার লাভ করেছে তা অনুসন্ধান করলেই বুঝতে পারবেন। গত ৫৩ বছরে শিক্ষার মান শুধু নিচেই নেমেছে। কয়েক বছর আগেও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ৭০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এক সময় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হতো। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান কোথায় গিয়ে ঠেকেছে? ২৭শ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকছে না। দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে তুলনামূলক কম যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকদের ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব দেয়া হয়। তাদের কাজই হচ্ছে দলীয় আনুগত্য করা, শিক্ষার মানোন্নয়ন নয়। ছাত্ররা রাজনীতির নামে নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রমে যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তা শিক্ষার মান উন্নয়নে মোটেও সহায়ক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রতি বছর শিক্ষা খাতের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয়। এই অর্থ কোথায় যায়?
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কি হাল তা আমরা বিভিন্ন সূত্রের খবর বিশ্লেষণ করলেই বুঝতে পারি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির গাড়িচালক আব্দুল মালেক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। পিএসসির একজন গাড়িচালক আবেদ আলী কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন প্রশ্নপত্র ফাঁস করার মাধ্যমে। করোনাকালীন সময়ে জাতি প্রত্যক্ষ করেছে কীভাবে স্বাস্থ্য সেবার নামে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। হাসপাতালের জন্য উপকরণ ক্রয়ের নামে কীভাবে অর্থ আত্মসাৎ করা হয় তার দৃষ্টান্তও আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি। গত ৫৩ বছরে দেশের বিভিন্ন স্থানে কতগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে আর কতগুলো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে তার অনুপাত দেখলেই বুঝা যায় উচ্চশিক্ষা এখন কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে। স্বাধীনতার এত বছর পরও কি প্রতিটি জেলায় একটি করে মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় খরচে স্থাপিত হতে পারতো না? দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্তসংখ্যক কারিগরি বিদ্যালয় কি স্থাপিত হতে পারতো না? প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। দেশের খ্যাতিমান উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ব্যয় অত্যন্ত বেশি। এখানে সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষের ছেলেমেয়েদের পড়ানোর সুযোগ নেই। রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বেশিরভাগই বিদেশে লেখাপড়া করে। কাজেই দেশে শিক্ষার মান খারাপ হলেও তাদের কিছু আসে যায় না। সেশনজট অথবা শিক্ষার মান নিম্নমুখী হলেও রাজনীতিবিদদের তাতে কোনো সমস্যা নেই।
শিক্ষা এবং চিকিৎসা মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম। রাষ্ট্র তার প্রতিটি নাগরিকের উপযুক্ত কর্মসংস্থানমূলক শিক্ষা এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাধ্য; কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাতের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, সামর্থ্যবান মানুষ তাদের চিকিৎসা এবং সন্তানের উপযুক্ত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিদেশের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে। বিদেশে শিক্ষা এবং চিকিৎসার জন্য প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের সংকটের জন্য এসব কারণও কম দায়ী নয়। আইন করে নেতানেত্রীদের ছেলেমেয়েদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন এবং দেশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা গ্রহণে বাধ্য করা যেতে পারে। নেতানেত্রীরা যদি প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে দেশের বাইরে চিকিৎসা গ্রহণ বা সন্তানদের শিক্ষার জন্য প্রেরণ করতে না পারতেন তাহলে অভ্যন্তরীণভাবে শিক্ষা এবং চিকিৎসার মান উন্নয়ন হতো। করোনার সময় চিকিৎসার নামে প্রচুর অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে লুটে নেয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের জন্য এমন সব যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয় যার কোনো ব্যবহার আমরা প্রত্যক্ষ করি না। আর চিকিৎসা উপকরণ ক্রয়ের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা একটি চিহ্নিত মহল লুটে নিচ্ছে। এর কোনো প্রতিকার নেই। কারণ লুটে নেয়া এই অর্থ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বিলি-বণ্টন হয়ে থাকে।
সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে এর মধ্যে একটি কার্যকর ব্যবস্থা হতে পারে এই রকম- যারা প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন দায়িত্বে আছেন, যারা মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আছেন তাদের সন্তানদের কেউই বিদেশে পড়াশোনার জন্য যেতে পারবে না। এদের পরিবারের কেউ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবে না। মানুষ সাধারণত দেশের চিকিৎসা এবং শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর আস্থাহীনতার কারণেই বিদেশে গমন করেন। যদি এমন ব্যবস্থা করা হয় তাহলে আমি দায়িত্ব নিয়েই বলতে পারি আগামী ৫ বছরের মধ্যে দেশের শিক্ষা এবং চিকিৎসা খাতের চেহারা পাল্টে যাবে। দেশের সাধারণ মানুষ নিম্নমানের চিকিৎসা গ্রহণ করতে আর মন্ত্রী-এমপিদের সামান্য সর্দি জ্বর হলেই তারা বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের প্রতি বছর সম্পদের সঠিক হিসাব দাখিল করতে হবে। যারা ঋণখেলাপি তাদের সামান্য ডাউন পেমেন্ট দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। কেউ যদি জাতীয় অথবা স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিতে চান তাহলে তাকে ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে তারপরই নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। দুর্নীত হচ্ছে নিঃশব্দ ঘুণে পোকার মতো যা রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন করে ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার সুযোগ কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।
আবু হেনা রাজ্জাকী: সিনিয়র আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে