ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে সাড়া পড়েনি পাহাড়ে
পার্বত্য চট্টগ্রামের ২৬টি উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রচার-প্রচারণা কর্মসূচিও চলমান রয়েছে। তবে নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ এবং মৃত ভোটার কর্তনের তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রমে তেমন সাড়া পড়েনি তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি জেলায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের ১২২টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামগুলোর অনেকেই জানেই না, ভোটার তালিকার তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে।
নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে দেশব্যাপী ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চালু রয়েছে। চলবে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ কর্মসূচিতে নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ এবং মৃত ভোটারদের নাম কর্তনের তথ্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করছেন তথ্য সংগ্রহকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কার্যক্রম মনিটরিংয়ে সুপারভাইজরের দায়িত্ব পালন করছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। উপজেলা নির্বাচন অফিসাররা নিজ নিজ উপজলায় তথ্য সংগ্রহের কর্মসূচি তদারকি করছেন।
বান্দরবান জেলায় সাতটি উপজেলায় ৩৪টি ইউনিয়নে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন ৩১৭ জন তথ্য সংগ্রহকারী এবং ৬২ জন সুপারভাইজার। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত নতুন ৩ হাজার ৫৯৪ জন নতুন ভোটারদের তথ্য এবং ৫৮০ জন মৃত ভোটার কর্তনের তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
রাঙামাটি জেলায় দশটি উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন ৫৩৬ জন তথ্য সংগ্রহকারী এবং ১৩৪ জন সুপারভাইজর। ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করেছেন ১০ হাজার ৯৩৯ জনের।
খাগড়াছড়ি জেলায় নয়টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন ৫৩০ জন তথ্য সংগ্রহকারী এবং ১০১ জন সুপারভাইজর। ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের কাজও চলছে ধীরগতিতে। এ পর্যন্ত ১ দশমিক ১ পার্সেন্ট ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
রেইছা সদর ইউনিয়নের হাতিভাঙ্গা পাড়ার বাসিন্দার উজালা তঞ্চঙ্গ্যা ও টাইগার পাড়ার বাসিন্দার অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, তথ্য সংগ্রহের জন্য আমাদের বাড়িতে আজও কেউই আসেনি। ভোটার তালিকার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এটিও আমাদের জানা নেই।
এদিকে একই চিত্র রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ইউনিয়নগুলোতেও। পার্বত্য চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা এবং পাহাড়ের একটি গ্রাম থেকে আরেকটি গ্রামের দূরত্ব অনেক বেশি হওয়ায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ঠিকমতো এগোচ্ছে না। তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি না গিয়ে গ্রামের একটি স্থানে বসে আশপাশের লোকজনের তথ্য সংগ্রহ করছেন, এতে অনেকেই বাদ পড়ে যাচ্ছেন অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি জেলা নির্বাচন অফিসার সাখাওয়াত হোসেন ও বান্দরবান জেলা নির্বাচন অফিসার সাহাদাত হোসেন জানান, ভোটারদের তথ্য সংগ্রহে তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে। বার্ষিক নতুন ভোটারের টার্গেট ১ দশমিক ৫-এর মতো।
তথ্য সংগ্রহের কাজও সন্তোষজনকভাবে চলছে। শেষের দিকে মূলত সংখ্যাটা বাড়ে। তবে তথ্য সংগ্রহে অবহেলার এখনো কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম হচ্ছে বিশেষ এলাকা, তাই এখানে উপজেলাভিত্তিক একটি যাচাই-বাছাই বিশেষ কমিটিও রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হলো কমিটির আহ্বায়ক ও নির্বাচন অফিসার সদস্য সচিব। তথ্য সংগ্রহের পর কমিটির যাচাই-বাছাইয়ের পর পরবর্তী সময়ে ভোটার নিবন্ধন ও ছবি তোলার জন্য মনোনীত হবেন। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে নিবন্ধন ও ছবি তোলা কার্যক্রম শুরু হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে