Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

আমাদের স্বাধীনতার চেতনা এক

Haznah Md  Hashim

হাজনাহ মো. হাশিম

বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪

৭ বছর আগের কথা, ১৯৫৭ সালের ৩১ আগস্ট, মালে, যা এখন মালয়েশিয়া হিসেবেই সবার কাছে পরিচিত, যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করেছিল। এই স্বাধীনতার ঘোষক ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রী তুয়ানকু আবদুল রহমান। এই ঐতিহাসিক দিনে, মারদেকা (মুক্তি) শব্দটি ৭ বার উচ্চারণ কারার মধ্য দিয়ে একটি নতুন সার্বভৌম ও স্বাধীন জাতির জন্ম হয়। মালয়েশিয়া এখন একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ। ২০২৩ সালে দেশটির অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২২ সালে কোভিড-পরবর্তী অর্থনৈতিক প্রত্যাবর্তনের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার মাধ্যমে এই মাঝারি প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। এতে দেশটি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ওপর নির্ভরশীল রয়ে যায়।

২০২৩ সালে মোট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৩৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বছর রপ্তাানি বাণিজ্য, পর্যটকদের আগমন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি স্থিরভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাপক পারিবারিক ব্যয়, শক্তিশালী শ্রম বাজার এবং বিস্তৃত অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ এই বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করেছে। এই বছরের দ্বিতীয় ত্রিমাসিকে দেশটির অর্থনীতি বেড়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, যা আগের প্রান্তিকে (অর্থবছরের চারভাগের এক ভাগ, প্রতি তিন মাস অন্তর এক প্রান্তিক) ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২২ সালের পর সর্বোচ্চ ২০২৪ সালের অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।

আমি আবারও গর্বের সঙ্গে বলছি যে, মালয়েশিয়াই প্রথম মুসলিম দেশ বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম জাতি হিসেব আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি। তারপর থেকে দুই দেশের মধ্যে ‘ভ্রাতৃত্বের বন্ধন’ বজায় আছে। আমাদের সম্পর্ক দিন দিন আরও উন্নত হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত পরস্পরকে দৃঢ়-বন্ধনে বেঁধে রেখেছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় যে কয়টি দেশ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তাদের মধ্যে প্রথম দিকের সরকারপ্রধানদের মধ্যে ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতো সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম।

প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার বাংলাদেশের নতুন সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার ১৯তম বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় ব্যবসায়িক অংশীদারী। এ ছাড়া বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার ১৬তম বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। এই শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্কের সঙ্গে, মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) আমাদের ব্যাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন দিনের শুভ সূচনা করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আমি আশা করি, এর মধ্য দিয়ে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলো আমরা আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারব।

বাংলাদেশি পর্যটকদেরও আমি স্বাগত জানাতে চাই। আপনারা মালয়েশিয়ায় আসুন, শুধু ভ্রমণের জন্যই নয়, চিকিৎসার জন্যও। খুবই সাশ্রয়ী মূল্যে মালয়েশিয়া উন্নত চিকিৎসা এবং দক্ষ স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে। মালয়েশিয়া এখন শিক্ষার্থীদের জন্যও আকর্ষণীয় স্থান। বৈচিত্র্যময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা-পরিবেশের জন্য মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষার্থীকে আকৃষ্ট করেছে।

সব শেষে বাংলাদেশে বসবাসকারী সব মালয়েশিয়ানদেরও আমি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক মুক্তির চেতনার সঙ্গে একাত্ম হতে অনুরোধ করি। বাংলাদেশ একটি সুন্দর দেশ। আমাদের স্বাধীনতার চেতনা এক শুভ জাতীয় দিবস!

হাজনাহ মো. হাশিম: বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ