Views Bangladesh Logo

গ্যাস সংকটে শিল্পোদ্যোক্তারা এখন কী করবে

দিন যত যাচ্ছে, গ্যাস সংকট ততই তীব্র হচ্ছে। গ্যাস সংকটে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তারা আর বিনিয়োগের সাহস পাচ্ছে না। সরকার অনেকবার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত বারবার ব্যর্থতাই প্রমাণ করছে। গ্যাস-সংকটের কারণে কারখানাগুলোতে ৬০ শতাংশের বেশি উৎপাদন হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রি (বিসিআই)। গ্যাস সংকটের সঙ্গে বেড়েছে ব্যাংক ঋণের সুদের হার । তিন মাস সুদ না দিলেই ঋণখেলাপি করছে ব্যাংক। এমন অবস্থায় শিল্পোদ্যোক্তারা চরম নিরাশাজনক অবস্থার মধ্যে পড়েছেন।


গত রোববার (২৫ মে) শিল্প খাতে জ্বালানি সংকট নিয়ে যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ কয়েকটি সংগঠন। সেখানে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ এবং গ্যাস-বিদ্যুতের স্বল্পতায় শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে গ্যাসের চাপ না থাকলেও বিল দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি যথাসময়ে শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের চাপ রয়েছে। প্রশ্ন হলো ‘শিল্প মালিকরা উৎপাদন করতে না পারলে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেবেন কোথা থেকে? আর ঋণের সুদ পরিশোধই বা করবেন কীভাবে? এভাবে চলতে থাকলে কোরবানির ঈদের পর অনেক শিল্পকারখানাকে কোরবানি দিতে হবে। সব মিলে শিল্প ও শিল্পোদ্যোক্তাদের মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।


প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, চট্টগ্রাম, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের বিসিক ও আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েক মাস ধরেই কম-বেশি গ্যাস সংকট চলছে।

অনেক অঞ্চলে মাসাধিকাল ধরেই গ্যাস সরবরাহ শূন্যের কোঠায়। ফলে সরবরাহ চাপের ওঠা-নামার কারণে মিলের সমস্যা নষ্ট হচ্ছে। কারখানা নিয়মিত চালু না থাকার কারণে কারখানার যন্ত্রপাতি ও কলকব্জাও নষ্ট হচ্ছে। অর্থাৎ ক্ষতি একমুখী নয়, বহুমুখী! এই পরিস্থিতে কারখানা মালিক ও শিল্পোদ্যোক্তরা কী করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। তারা সরকারের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা বা আশ্বাসও পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় ক্ষোভে-দুঃখে বিসিআই সভাপতি বলেন, সরকার শিল্পে গ্যাস দিতে পারছে না, অথচ ধমক দিচ্ছে শ্রমিকদের বেতন দিতে না পারলে মালিককে জেলে যেতে হবে, এটা হতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি বলেন আরো ভয়াবহ কথা, ১৯৭১ সালে খুঁজে খুঁজে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে আর ২০২৫ সালে শুধু শিল্প নয়, শিল্পোদ্যোক্তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে। শিল্পে গ্যাস নেই, একের পর এক কারখানা বন্ধ হচ্ছে।

তাদের কথায় বোঝা যাচ্ছে সমস্যা কতটা গভীর। এর সমাধান সরকারকেই করতে হবে। অচিরেই গ্যাস সংকট দূর করা না গেলে অনেক কারখানাই বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন উদ্যোক্তরাও আর বিনিয়োগের সাহস পাবেন না। অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। ঈদের আগে পড়েই হয়তো এ নিয়ে বড় ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীকরা। তারা চান না দেশে এ ধরনের কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক। আমরাও চাই সরকার আরো গুরুত্ব দিয়ে শিল্পোদ্যোক্তাদের সমস্যা বিবেচনা করুক। পাশাপাশি এটাও চাই, গ্যাস সংকটের দোহাই দিয়ে কোনো চালু কারখানা যেন শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত না করে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ