৫ আগস্ট আশুলিয়ায় নিখোঁজ মিলনের সঙ্গে কী ঘটেছে?
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে ৫ আগস্ট দুপুরে ঢাকার আশুলিয়ায় আনন্দ মিছিলে গিয়েছিলেন মনিরুজ্জামান মিলন। বিকেল থেকেই নিখোঁজ তিনি। তিনমাস পরেও ৩২ বছর বয়সী মিলন বেঁচে আছেন না মারা গেছেন, তা জানতে পারেনি তার পরিবার।
স্বজনদের অভিযোগ, মিলনের নিখোঁজের ঘটনায় গত ২১ আগস্ট তার ভাই সামিউল ইসলাম আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও গুরুত্ব দিচ্ছে না পুলিশ।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার জোড়গাছা গ্রামের মিলন আশুলিয়ায় পোশাক কারখানা ফোর এ ইয়ার্ন ডাইংয়ের সুপারভাইজার ছিলেন। স্ত্রী ও দেড় বছর বয়সী মেয়ে মানসুরা মারিয়াকে নিয়ে থানার বুড়িবাজার সড়কের ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।
মিলনের স্ত্রী সবিতা খাতুন জানান, ২৮ জুলাই মেয়েকে নিয়ে বগুড়ায় ফিরে আসেন তিনি। ওই সময় আশুলিয়ার ভাড়া বাসায় একাই ছিলেন মিলন।
সবিতার ভাষ্য, ৫ আগস্ট বিকেল তিনটার দিকে স্বামীর সঙ্গে মোবাইলে শেষ কথা বলেন তিনি। মিলন জানান, সরকার পতনে আশুলিয়ায় আনন্দ মিছিলে আছেন তিনি। বিকেল চারটা থেকে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মিলনের মোবাইল ফোন রিসিভ হয়নি। সন্ধ্যার পর থেকেই বন্ধ পাওয়া যায় ফোনটি।
প্রায় দুই বছর সাত মাস আগে মিলনের সঙ্গে বিয়ে হয়ে সবিতার। স্বামীকে ফিরে পেতে অবুঝ দুগ্ধপোষ্য মেয়ে ও শ্বশুরবাড়ির সবাইকে নিয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি।
মিলনের মা মেরিনা বেগমসহ স্বজনেরা জানান, আশুলিয়া থানায় গিয়ে পোড়া মরদেহগুলোও দেখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সেখানে মিলনের মরদেহ পাওয়া যায়নি। আশেপাশের হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে খোঁজ করেও তার সন্ধান মেলেনি। তারা এখনো নিশ্চিত নন যে, মিলন বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন।
মিলনের স্ত্রী ও তার মা জানান, মিলন বিএনপির সমর্থক ছিলেন। দলটি গত বুধবার (৬ নভেম্বর) ৫০ হাজার টাকা এবং মাসখানেক আগে ২০ হাজার টাকা দিয়ে গেছে জামায়াত। তবে পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নিচ্ছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এখন পর্যন্ত আসেননি প্রশাসনের কেউই। হতাশায় আছেন তারা।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, মিলনের পরিবারের করা সাধারণ ডায়েরিটি এখনো দেখেননি তিনি। সেটি দেখার পরে এ বিষয়ে বলা যাবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে