ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ভারত না পাকিস্তান এগিয়ে?
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর উভয় দেশের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আসুন জেনে নিই ভারত ও পাকিস্তানের কাছে কোন কোন ক্ষেপণাস্ত্র আছে এবং তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষমতা কী।
ভারতের অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি থেকে ৫ হাজার - ৮ হাজার কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আঘাত হানতে পারে। অন্যদিকে পাকিস্তানের শাহীন-৩ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২,৭৫০ কিলোমিটার। ভারত অস্ত্রের জন্য রাশিয়ার ওপর বেশি নির্ভরশীল এবং পাকিস্তান চীনের ওপর বেশি নির্ভরশীল।
অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক মিসাইল সিস্টেম
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় দুই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। প্রথমটি হলো পৃথ্বী এয়ার ডিফেন্স (PAD) ক্ষেপণাস্ত্র যা সুউচ্চ উচ্চতার ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ প্রতিহত করে এবং দ্বিতীয়টি হলো অ্যাডভান্সড এয়ার ডিফেন্স (AAD) যা নিম্ন উচ্চতার ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ প্রতিহত করে। ভারতের অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কমপক্ষে ৫,০০০ কিলোমিটার দূর থেকে আগত ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম বলে জানা যাচ্ছে। ভারত রাশিয়ার সহযোগিতায় ব্রহ্মোস-১ এবং ব্রহ্মোস-২ হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও তৈরি করেছে এবং এগুলো স্থল, আকাশ, সমুদ্র এবং উপ-সমুদ্র প্ল্যাটফর্ম থেকে উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে। অন্যদিকে পাকিস্তানের কাছে প্রচলিত এবং পারমাণবিক অস্ত্রধারী ক্ষেপণাস্ত্রের অনেক বিকল্প রয়েছে। বলা হচ্ছে যে উভয় দেশই একে অপরের হুমকির কথা বিবেচনা করে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষমতা উন্নত করেছে; কিন্তু ভারতের মতো পাকিস্তানের কাছে আইসিবিএমের বিকল্প নেই।
পাকিস্তানের কাছে আইসিবিএম নেই
ভারতের সুপরিচিত প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক রাহুল বেদী বলেছেন, যদি বিষয়টি আইসিবিএম পর্যন্ত পৌঁছায় তবে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। রাহুল বেদী বলেন, ‘আইসিবিএমের উড়ানের সময় ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ড। আইসিবিএম একটি কৌশলগত অস্ত্র এবং ভারত চীনকে মাথায় রেখে এটি তৈরি করেছে। পাকিস্তানের আইসিবিএম নেই। পাকিস্তানের এটির প্রয়োজনও নেই। পাকিস্তানের সম্পূর্ণ প্রস্তুতি ভারতকে কেন্দ্র করে, যেখানে ভারতের মূল লক্ষ্য চীন। ১৯৯৮ সালে ভারত যখন পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় তখন অটল বিহারি বাজপেয়ি বিল ক্লিনটনকে লেখা একটি চিঠিতে একই কথা বলেছিলেন।
অন্যদিকে চীনের সহযোগিতায় পাকিস্তান শাহীন সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। পাকিস্তানের শাহীন ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘ পাল্লার আঘাত হানতে সক্ষমতা রয়েছে। ভারতের আক্রমণ মোকাবেলায় পাকিস্তান অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক মিসাইল সিস্টেম নিয়েও কাজ করছে। পাকিস্তানের কাছে HQ-9BE আছে; কিন্তু ভারত যদি ব্রহ্মোস ব্যবহার করে তাহলে পাকিস্তানের পক্ষে তা থামানো সহজ হবে না।
রাহুল বেদী জানান, ভারতের কাছে কৌশলগত এবং প্রচলিত উভয় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। ভারতের নজরদারি ব্যবস্থাও এখন উন্নত হয়েছে। ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও অনেক উন্নত। তাছাড়া পাকিস্তানের কাছে এত কার্যকর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই। ফলে মনে হয় না যে পাকিস্তান ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে