Views Bangladesh Logo

নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরও কেন হাসপাতাল বুঝে নিতে গড়িমসি

রকম অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা সম্ভবত বাংলাদেশেই সম্ভব: নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরও কয়েক বছর ধরে হাসপাতালটি বুঝে নিচ্ছে না সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ। বছরের পর বছর ধরে হাসপাতালটি অহেতুক পড়ে আছে। ঠিকাদার নিজেদের লোক দিয়ে প্রায় চার বছর ধরে হাসপাতালটি পাহারা দিচ্ছেন। বারবার চিঠি দিলেও কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটি বুঝে নিচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় হাসপাতালের বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে।

গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, রাজশাহী শিশু হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল আট বছর আগে। শেষ হয়েছে দেড় বছর আগে। ২০০ শয্যার হাসপাতালটি এখনো বুঝে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল বুঝে না নেয়ায় সেবা কার্যক্রমও শুরু করা যাচ্ছে না। রাজশাহীর সিভিল সার্জন বলছেন, হাসপাতাল বুঝে নেয়ার জন্য কয়েক দফা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন তারা। সেখান থেকে সাড়া না পাওয়ায় হাসপাতাল হস্তান্তরে জটিলতা দেখা দিয়েছে।

রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের নির্মাণ প্রকল্পের নাম ‘কনস্ট্রাকশন অব গভর্নমেন্ট শিশু হসপিটাল অ্যাট রাজশাহী সিটি করপোরেশন’। প্রায় ৩৫ কোটি টাকায় ব্যয়ে নির্মিত ওই হাসপাতালের কাজটি পায় ‘কেএসবিএল অ্যান্ড এইচই (জেভি)’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। মূল কাজ তিন বছরেই শেষ হয়ে যায়। এরপর আরও কিছু বাড়তি কাজ দেয়া হয়েছিল। সেগুলোও ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে শেষ করে প্রতিষ্ঠানটি। গত ৩০ অক্টোবর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর ভবনটি হস্তান্তরের জন্য চিঠি দেয়া হয়।

এ ঘটনা থেকেই বোঝা যায় আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর কতখানি দায়িত্বজ্ঞানহীন। আগে যাও যোগাযোগ করা যেত, এখন ৫ আগস্টের পর থেকে কোনো সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ কী তাও জানাতে পারছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে মানবেতরভাবে শিশুদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। একটি হাসপাতালের জন্য জনগণের অর্থ ব্যয় তখনই সফল হয়, যখন এটা জনগণের কাজে লাগে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নির্মাণ করা হাসপাতাল ফেলে রাখা হয়েছে। এক ঘণ্টার জন্যও বিলম্ব করা তো অপরাধ। যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এটা চালু করা জরুরি এবং এই হাসপাতাল নির্মাণের সঙ্গে যারা জড়িত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সেইসব কর্মকর্তাদেরও জবাবদিহি আদায় করতে হবে, কেন নির্মিত হাসপাতালটি এভাবে ফেলে রাখা হলো।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ