আন্তর্জাতিক নারী দিবস
গান শুনতে নিরাপত্তা লাগবে কেন?
‘এই পদ্মা, এই মেঘনা’, ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘সময় গেলে সাধন হবে না’, ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’ বহুল জনপ্রিয় গানগুলো শুনলে যার অবয়বটি ভেসে ওঠে, তিনি লালনকন্যা খ্যাত কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন। লালন ফকিরের গান সবচেয়ে বেশি গেয়েছেন তিনি। ৫৪ বছর ধরে লালন, নজরুল, দেশাত্ম্যবোধকসহ ক্ল্যাসিক্যাল সংগীত গাইছেন তিনি। সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য পেয়েছেন ‘একুশে পদক’। পেয়েছেন জাপানের ‘ফুকওয়াকা’ পুরস্কার, যেটি এশিয়ার নোবেল হিসেবে পরিচিত। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। এ ছাড়াও পেয়েছেন দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।
সম্প্রতি ভিউজ বাংলাদেশ অফিসে এসেছিলেন তিনি। গান-আড্ডায় মুখর করে রেখেছিলেন ভিউজ বাংলাদেশ অফিস। এর মাঝেই তিনি কথা বলেছেন তার সংগীতজীবনের পথচলা, লালনসংগীত, বাংলা সংগীতাঙ্গনের নানান বিষয় নিয়ে। সাক্ষাৎকারের আজ প্রকাশিত হলো শেষ পর্ব। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ভিউজ বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক গিরীশ গৈরিক ও সম্পাদকীয় সহকারী শাহাদাত হোসেন তৌহিদ।
ভিউজ বাংলাদেশ: শিল্পজীবনের প্রয়োজনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে আপনি ঘুরছেন। শুনতে পেলেন কেউ একজন একাকী মনের আনন্দে আপনার গান গাইছেন- এমন অনুভূতি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন।
ফরিদা পারভীন: এটা তো বিশ্লষণ করা যায় না, উপলব্ধির ব্যাপার। খুব সত্যি, শুকরানা আদায় করি লালন সাঁইজির বাণী আমার মধ্যে বিরাজ করছে এ জন্য, যা গাইলেই সুরের একটা মাদকতা আমরা পাই। যা কিছু ঘটছে, যা কিছু ঘটবে সবকিছু নির্ধারিত। আমি কোনো জায়গায় কিন্তু অসম্মানিত হইনি। সমস্ত মানুষের কাছের আমি কৃতজ্ঞ। কি এমন গান গাই! আমি জানি না এই গাওয়ার মধ্য দিয়ে হয়তো আধ্যাত্মিক কোনো চেতনা তাদের ভেতরে জাগে। একমাত্র সারা ব্রহ্মাণ্ডের মালিক, তাঁর কাছে শুকরানা আদায় করি।
ভিউজ বাংলাদেশ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপনার গান শুনে ছল ছল করে কেঁদেছিলেন, গল্পটা বলবেন।
ফরিদা পারভীন: স্বাধীনতার পরের কথা। সম্ভবত ট্রান্সজেকশন সার্ভিস রুম উদ্বোধন করলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমার গুরু মুকসেদ আলী সাহেব সেখানে আমাকে দিয়ে গান করালেন। রাত জেগে জেগে ১২-১৪টা গান যখন রেকর্ড করলাম, মনে আছে সেসময় ওস্তাদ ফুলঝুরি খান আমার কণ্ঠ শুনে বলেন, এত বছর আমি ক্ল্যাসিক্যাল চর্চা করছি এরকম কণ্ঠ পাইনি। এরকম অনেকে বলেছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম তখন ট্রান্সজেকশন সার্ভিসের ডিরেক্টর ছিলেন। সেখানে গানের পরীক্ষক ছিলেন কমলদাশ গুপ্ত, কাদের জামিলী, আদুল আলম চৌধুরী, ফুলঝুরি খান। তারা আমার গান শুনেন। আর আমার ছোটবেলা থেকে অভ্যাস যদি কেউ গান করতে বলতো সাথে সাথে বসে পড়ে গান শুরু করতাম। কে কত বড় উস্তাদ আমি জানিও না, জানার দরকারও নাই বলে মনে করতাম। আমাকে গান করতে বললে যা জানি তাই গাইতাম। তো গান করার পর কমলদাশ গুপ্ত, আবদুল হামিদ চৌধুরী, কাদের জামিলী বললো, মা তুমি এত ভালো গান করে গাইলে। কি বলবো উনারা নাই দুনিয়াতে। নিজের এখন হয়েছে কি- সুস্থ হই আবার একটু অসুস্থ হই যে কারণে কষ্টটা বেড়ে যায়।
শহীদুল ইসলাম তো ভাষাসৈনিক, বঙ্গবন্ধু তাকে খুব ভালোবাসতেন। বঙ্গবন্ধু শহীদুল ইসলামকে বললেন, এই তুই কি করছিস, কোন মেয়েকে দিয়ে নাকি গান রেকর্ড করিয়েছিস এসব। শহীদুল ইসলাম বলল, লিডার আমি কিছু বলব না আপনি গানটা একটু শুনেন। তারপর ‘খাচার ভিতর অচিন পাখি’, গাইলাম। শোনার পর ওনার (বঙ্গবন্ধুর) চোখ ছল ছল করছিল। তখন বঙ্গবন্ধু শহীদুল ইসলামকে এই কথাটা বলেছিলেন, তোর যা খুশি মন চায় কর, এই মেয়েটাকে দিয়ে উৎসব কর। উৎসবে লালন হচ্ছে প্রধান, এখানে অন্য কিছু হবে না। তাকে লালনে প্রতিষ্ঠিত কর। পরে যখন গান গেয়ে উৎসব উদ্বোধন করলাম বঙ্গবন্ধু সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন। তিনি খুব খুশি হয়েছেন। শহীদুল ভাই বলেছেন- জানিস, যেখানে তোর গান শুনে বঙ্গবন্ধুর চোখে পানি আসে, আর কিছু চাস তুই। আমার খুব মনে আছে কথাটা। তারপর আমি গান করলাম’- পারে লয়ে যাও আমায়’, ‘বাড়ির কাছে আরশী নগর’, ‘খাচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘মিলন হবে কত দিনে’ চারটা গান আমাকে দিয়ে গাওয়ানো হলো। লালন উৎসবের উদ্বোধন করা হলো। আমি মনে করি ওটা আমার জীবনের পাথেয়। অধ্যাবধি আমি দেশের গান আধুনিক গান যেগুলো এ পর্যন্ত করেছি গানগুলো এত সমৃদ্ধ বাংলাদেশে এমন গান হয়নি। এগুলো মুছে যায়নি। ‘তোমরা ভুলেই গেছে, মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাটা যদি না বিধিল গায়’ এসব গানগুলো।
ভিউজ বাংলাদেশে: ‘তোমরা ভুলে গেছো মল্লিকাদির নাম’ এই গানের রহস্যভেদ নিয়ে বলবেন।
ফরিদা পারভীন: যিনি কবি যিনি লিখেছেন তার মতো আমি কি বলতে পারি? কিন্তু আমি ভাসাভাসা যেটুকু জানি, সমস্ত কবি-লেখকের সামনে তো তাদের ভালোবাসার একটা মানুষ সামনে থাকে। এই গানটির ভাবটাই এরকম। হয়তোবা কবি মল্লিকা দি বলে কাউকে অবচেতন মনে ভালোবাসতেন বা তাকে দূর থেকে দেখেছেন। এটা আমার এসেসমেন্ট। হয়তো সেই গ্রামেই যখন ছিলেন এই পটভূমিকায় হতে পারে। তবে, এটা মনে হচ্ছে যেন একেবারেই সত্যি ঘটনা। যখন বলছে আম কুড়ানোর সময়, তার সাথে হয়তো একটু দেখা হয়েছে, একটু হাতাহাতি হয়েছে এরকম হয় তো। ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ একটু একটু করে দেয়। যেমন গানে আছে, দুপুর বেলা মল্লিকাদির আটচালাতে গিয়ে।
ভিউজ বাংলাদেশ: মল্লিকাদির গান রেকর্ড কীভাবে হলো?
ফরিদা পারভীন: শিখেছি, তারপর রেকর্ড করা হয়েছে। ১৯৬৮ সালে আমি রাজশাহী বেতারে গান করি। নজরুল ও আধুনিক গানে আমি পাস করি রেডিওতে। সেখানে প্রথম রেডিওতে ওটা করা হয়েছিল। আরও একটি গান- ‘নিন্দার কাটা যদি না বিধিল গায়।’ দুটো গান ওখানে ওই মাসের শ্রেষ্ঠ গান হয়েছিল, তখন তো আমাকে কেউ দেখেনি। আমার গান শুনে আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমি এ জন্য সবসময় রেডিওকে বেশি প্রাধান্য দিই, তখন তো আমাকে কখনো দেখেনি কেউ; কিন্তু আমার কণ্ঠটাকে তারা স্বীকৃতি দিয়েছে। এখন দেখা যায়, শোনা যায় কত কিছু হয়। তাও আমি বাংলাদেশে টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের ওপর সত্যি সত্যি অনেক কৃতজ্ঞ।
ভিউজ বাংলাদেশ: নিরাপত্তার অজুহাতে কিংবা আপত্তির মুখে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লালন মেলা, বাউল মেলা বন্ধ হচ্ছে-ব্যাপারগুলো কীভাবে দেখছেন?
ফরিদা পারভীন: লালন সাঁইজির জীবদ্দশা থেকে লালন মেলাটা চলে আসছে। এরা কি লাঠিসোঁটা নিয়ে চলছে নাকি মানুষকে মারধর করছে? তাহলে সমস্যা কোথায়? নিরাপত্তার ব্যাপার কেন আসে আমি তো বুঝি না। গান শুনতে নিরাপত্তা লাগবে কেন? আমি নিজে সারারাত গান করেছি। লালন মেলায় সারারাত মানুষ গান শোনে, বুঝুক আর না বুঝুক এর আস্বাদন গ্রহণ করে।
কথিত আছে লালন সাঁইজি একইদিনে জন্ম এবং মৃত্যু হয়েছে। এবারও এত মানুষ হয়েছে চিন্তা করা যায় না। যারা এটা আয়োজন করেছে তাদের ধন্যবাদ। মেলায় গবেষকরা আলোচনা করেন, শুনলে মানুষের আত্মশুদ্ধি লাভ হয়। আমার কথা বলছি, আমার কথার একটা মূল্য তো নিশ্চয়ই আছে। আমি এতদিন লালন সাইজির বাণী ধারণ করে সারা পৃথিবীতে গান করে আসছি। এতকাল মেলা চলতেছে এখন হবে না কেন? আমি চাই মেলাটা চলুক। নিরাপত্তা দিতেই হবে। এখানে জেলা কর্তৃপক্ষ-এসপি কর্তা তারা নিরাপত্তা দিবে। মেলা বন্ধ করা যাবে না।
ভিউজ বাংলাদেশ: গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের কালচারে রাজনৈতিকভাবে বড় ধরনের আঘাত এসেছে। এ বিষয়ে আপনার অভিমত কী?
ফরিদা পারভীন: একটা দেশকে পরিচয় করিয়ে দেয় তার সংস্কৃতি। আমি সরল-সহজ সত্য কথা বুঝি, সবকিছু এখন আপগ্রেড করতে হবে। সংগীত সংশ্লিষ্ট সবকিছু চলমান রাখতে হবে। খুব সত্যি কথা বলছি, শুধু এখন না, করোনার পর থেকে কোনো প্রোগ্রাম নাই, আমরা কি খেয়ে বাঁচবো? এত নাম খ্যাতি হয়েছে আমাদের। বাউল-ফকির-যন্ত্রশিল্পীরা তো অনেক কষ্টে ছিল না এখন কষ্টে আছে, সেগুলো একটু বুঝতে হবে। তারপরও আমি আশাবাদী। আল্লাহর রহমতে আমাদের ফান্ড খুব শক্তিশালী হচ্ছে ড. ইউনূস স্যারেক স্যালুট জানাই। এখন একটু একটু খুব সামান্য করে প্রোগ্রাম হচ্ছে, এটা পর্যাপ্ত না। অথচ আগে আমরা সময় পাইনি এক প্রোগ্রাম করে আরেক প্রোগ্রাম শুরু করতে হতো। বিদেশ যেতে হতো, সেরকম হচ্ছে না।
ভিউজ বাংলাদেশ: আবদুল হামিদ চৌধুরী, কমল দাশগুপ্ত, সমর দাস, আবু জাফর, কাদের জমিলির মতো বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞরা এখন আর জন্ম না দেয়ার কারণ কী?
ফরিদা পারভীন: সংগীত হলো গুরুমুখী বিদ্যা। গুরুর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চরণ ধরে সংগীতের চর্চা করতে হয়। দ্বিতীয়ত; একদম দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি- চ্যানেলগুলো সস্তা রিয়েলিটি শো করে নষ্ট করে ফেলছে গানের জগৎ। চ্যানেলগুলো সংগীতের ধারাবাহিকতা নষ্ট করে ফেলছে। অনেক কিছু ভেতরে ভেতের এদিক-ওদিক হয়। যে সত্যিকারের প্রথম তাকে প্রথম করা হয় না। আমি অনেক জায়গায় বিচারক হিসেবে থেকেছি। সবই দেখি তা না। এদের দিয়ে ব্যবসার একটা পথও আছে। এখানে গাড়ি দেয়, টাকা দেয়, ফ্ল্যাট দেয়। কই আজকে পঞ্চাশ বছর তো একটা ফ্ল্যাট করতে পারলাম না। ১০ লাখ টাকা এক জায়গায় করার ক্ষমতা নাই। হ্যাঁ, এটা গর্বের সাথে বলতে পারি, আমার বাচ্চাদের উচ্চশিক্ষায় খুব ভালোভাবে শিক্ষা দিয়েছি। গুরুমুখী বিদ্যাটা অল্পতে পেয়ে যায় তো, এর কারণে এ অবস্থা। যদি এ অবস্থা হয় ভবিষ্যৎ এমনিতেই বলা যায়। তারপরও আশাবাদী যেন এর মধ্যে থেকে ভালো শিল্পী বের হয়ে আসুক।
ভিউজ বাংলাদেশ: ২০১৭ সালে আপনি হিন্দি ভাষায় লালনগীতি পরিবেশন করেছিলেন ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিসহ সুধীজনের সম্মুখে। সেই গল্প জানতে চাই?
ফরিদা পারভীন: বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার ছিলেন মুচকুন্দ দুব। সম্প্রতি তিনি প্রয়াত হয়েছেন। তিনি তখন আমার গান শুনেছিলেন। তিনি বাংলা গান জানতেন, পড়তেন। আমার গান তিনি ভুলতে পারতেন না। সেখান থেকে বাংলা গান অনুবাদ করার বাসনা হলো তার। আমি তো চিনি না। তিনি একদিন বললেন, আমি মুচকুন্দ দুব। হিন্দি বাংলা মেশানো ভাষায় বললেন- ফরিদা, আপনার গান খুব ভালো লেগেছে। আমি আপনাকে আমার অফিসে ডাকব। তখন যেখানে তিনি যেতেন সেখানে আমার কথা বলতেন। প্রথমে এই গানটি করতে বলতেন-‘পারে কে যাবি নবীর নৌকাতে আয়।’ তিনি তো হিন্দু, নবীর নৌকার কথা বলছেন কেন? আমি মনে করি, তিনি হচ্ছেন সর্বধর্মের সমন্বয়ক। লালন সাঁইজি যেমন সকল ধর্মের সমন্বয় রচনা করেছেন দেহতত্ত্ব, আল্লাহ-নবী তত্ত্ব, রাধা কৃষ্ণ তত্ত্ব, জীবাত্মার সাথে মানবাত্মার। সাঁইজির কাছে কিন্তু মানুষ হচ্ছে সত্য। ভবে মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার। আসলে সাঁইজির গানের অবগান আত্মনিবেদন করাটাই বড় কথা। তখন তিনি ভিতরে ভিতরে ১০৫টা গান হিন্দিতে অনুবাদ করে বলেছেন যে, এগুলো আমি ফরিদাকে দিয়ে গাওয়াব। আর কাউকে না। ওনার বাসায় নিয়ে গেল। আমার হাতে তিনটি গান তুলে দিলেন তিনি। সেগুলো হলো- ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’, ‘খাচার ভেতর অচিন পাখি’, ‘মিলন হবে কতদিনে’। এভাবে শুরু হলো ওনার সাথে আমার সম্পর্ক। তিনি আমার একাডেমিতে চলে আসতেন। হারমনি, তানপুরা কত কিছু যে দিয়েছেন তিনি। চার পাঁচটা গান শিখে নিলাম। তারপরে তিনি আমাকে আর গাজী আবদুল হাকিমকে দিল্লিতে নিয়ে গেলেন। ওখানে তবলা যন্ত্রানুষঙ্গ ইত্যাদি ম্যানেজ করে দিলেন। সেখানে বসে আমি বিশটা গান শিখলাম, রেকর্ড করলাম।
২০১৭ রাষ্ট্রপতি ভবনে লালনের গান হিন্দি অনুবাদের মোড়ক উন্মোচন করেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। লালনের ১০৫টি গান হিন্দিতে অনুবাদ করেছেন মুচকুন্দ দুব। সেখানে ভারতীয় পার্লামেন্টের প্রায় সবাই ছিল। তখনকার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আনিসুজ্জামান স্যার গিয়েছিলেন, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন গিয়েছে। সেখানে আমি দুটো গান করেছি একটা বাংলায় একটা হিন্দি। বাংলাটা হলো, ‘পারে লয়ে যাও আমায়।’ আর হিন্দিটা হলো- ‘বাড়ির কাছে আরশীনগর’ যেটা হিন্দিতে ‘পিঞ্জিরে কি ভিতর, আনছি কা কানছি কেয়ছে আয়ে যায়ে।’ এ দুটো গাওয়ার পর বিশ্বাস করবে না ভাই ওনি (প্রণব মুখার্জি) উঠে এসছেন। একেবারে আমাকে কোলের মধ্যে নিয়ে বলছেন, মা তুমি এত সুন্দর করে হিন্দি গান করলে। তুমি বাংলার মানুষ, তুমি আমার বাংলাদেশের মেয়ে। আমি খুব খুশি। আমি তোমাকে হাজার রকমের দোয়া করি। তুমি আরও বড় হও। তাদের সিকিউরিটি বলছে যান যান, সালাম করেন। আমি সালাম করলাম ইন্ডিয়া বাংলাদেশি তা না, তিনি আমার বয়োজ্যেষ্ঠ, সালাম করেছি। মুচকুন্দ দুব কি সম্মান দেখিয়েছে আমি ভুলতে পারব না। আল্লাহ পাক তাকে শ্রেষ্ঠতম জায়গায় রাখুক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে