আমাদের সমাজে কেন পরমতসহিষ্ণুতার অভাব?
ভলতেয়ারের বিখ্যাত উক্তিটা দিয়েই শুরু করা যাক, ‘তোমার কথার সঙ্গে আমি একমত না হতে পারি; কিন্তু তোমার কথা বলার স্বাধীনতা রক্ষার জন্য জীবন দিতে পারি।’ ভলতেয়ারই জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন ফরাসি বিপ্লবের আগুন। আর ফরাসি বিপ্লবই পৃথিবীতে জানিয়েছিল সাম্য, মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ববোধের কথা। আধুনিক গণতান্ত্রিক বোধের যাত্রা ফরাসি বিপ্লব থেকেই। গণতন্ত্র মানেই পরমতসহিষ্ণুতা। সমাজে নানা চিন্তা, মতবাদ, মতাদর্শ থাকবে; কিন্তু গণতান্ত্রিক রাজনীতি হচ্ছে সহিংসতাবিহীন আলাপ-আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে, শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানো।
পরমতসহিষ্ণুতা অর্থ অন্যের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, অন্যের কথাকে গুরুত্ব দেয়া। ‘বিচার মানি; কিন্তু তালগাছ আমার’ এই ধরনের যে কোনো মনোভাব পরমতসহিষ্ণুতা অস্বীকার করে। সমাজে নানা মত, নানা পথ। যত মত তত পথ। যত মত থাকবে তত ফুল বিকশিত হবে। মাও সেতুং বলেছিলেন, ‘শত ফুল ফুটতে দাও।’ চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব হয়েছিল এ কথার ওপর ভিত্তি করে। যে সমাজে শত ফুল ফুটতে দেয়া হয় না, সে সমাজই আবদ্ধ হয় বদ্ধ পুকুরে। আর বদ্ধ পুকুর এক সময় পরিণত হয় জরাজীর্ণ, দূষিত ডোবায়। যে কোনো নির্দিষ্ট মতবাদ আকড়ে ধরে থাকার নামই মৌলবাদ। মৌলবাদের শেষ পরিণতি সাম্প্রদায়িকতা। অহিংসার পরিবর্তে সহিংসতাই সেখানে অনিবার্য।
শুধু সমাজ-রাষ্ট্রীয় জীবনে নয়, ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনেও পরমতসহিষ্ণুতার প্রয়োজন। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব না দিলে, শ্রদ্ধা না করলে সংঘাত অনিবার্য। দর্শনশাস্ত্রে একটা কথা আছে, তুমি অন্যের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতে পারো একমাত্র তার মতামতের যথার্থ গুরুত্ব দিয়ে। পৃথিবীর সমস্ত ধর্ম-দর্শনেই পরমতসহিষ্ণুতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দর্শনের একটি মূল লক্ষ্যই হচ্ছে সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠা। সেই সমতা প্রতিষ্ঠিত হবে কীসের ভিত্তিতে? কথা বলার ভিত্তিতেই। কথা নেই মানেই তো অচল সমাজ। অচল সমাজের কোনো অগ্রগতি নেই। তা স্থবির ও আবদ্ধ। আবর্জনার স্তূপ।
আমাদের সমাজে-রাষ্ট্রে-পরিবারে পরমতসহিষ্ণুতার অভাব দেখা দিয়েছে ভয়ংকরভাবে। তার অনেক কারণ রয়েছে। প্রধান কারণটিই হচ্ছে আমাদের কৃষিভিত্তিক সমাজ ভেঙে যাওয়া এবং আধুনিক বুর্জোয়া সমাজ তৈরি না হওয়া। আমাদের এখানে বুর্জোয়া সমাজ তৈরি হয়নি। আশির দশকের পর রেমিট্যান্স আয়ে, ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, পোশাক কারখানাসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক শিল্পমাধ্যমে কিছু মানুষের হাতে নগদ টাকা এসেছে স্রোতের মতো; কিন্তু সেই অর্থে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক হয়নি। ফলে বুর্জোয়া বিকাশ হয়নি। মূল্যবোধ তৈরি হয়নি। যারই হাতে টাকা এসেছে, তারই অবস্থা হয়েছে ‘আপন গাঁয়ে কুকুর রাজা’র মতো। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয়ার শিক্ষাদীক্ষা তার হয়নি।
পরমতসহিষ্ণুতার প্রয়োজন আমাদের সমাজে পঞ্চাশ-ষাট বছর আগেও হয়নি। এর কারণ সমাজ ছিল স্থবির, কেন্দ্রীভূত; অর্থাৎ, কৃষিভিত্তিক সমাজ। পূর্বপুরুষের প্রচলিত ধ্যান-ধারণা, বিশ্বাস-সংস্কার, আচার-ব্যবহার, বোধ-মনন নিয়েই প্রজন্মের পর প্রজন্ম জীবন কাটিয়ে দিয়েছে। একই সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অংশ হওয়ার কারণে বাধ্য হয়েই তাদের পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্যে থাকতে হয়েছে। বাধ্য হওয়ার মতো বাধ্যবাধকতাও ছিল না সেই অর্থে; কারণ, পরমতসহিষ্ণুতা সেই সমাজের সংস্কৃতিরই অংশ ছিল; কিন্তু সেই সাংস্কৃতিক পরিবেশ এখন ভেঙে পড়েছে। ভেঙে পড়েছ কারণ আজ আমরা বৈশ্বিক সংস্কৃতিক অংশ। পুরো দুনিয়াই আজ একটা গ্রাম। প্রতি মুহূর্তেই একদম নিভৃত গ্রামেও প্রবেশ করছে বৈশ্বিক সংস্কৃতির অনেক দিক। রাজনীতি-সংস্কৃতিসহ সমকালীন অনেক জীবনাচারও ঢুকে যাচ্ছে আমাদের ভেতরে।
পরমতসহিষ্ণুতা খুব গভীরভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে আমাদের সমাজে দেশ ভাগের আগে রাজনীতিই ছিল না সেই অর্থে। পূর্ববাংলায় গণমানুষের মনে-মগজে-মননে রাজনীতি প্রবেশ করে মূলত ১৯৪০ সালের পর ‘পাকিস্তান চাই’ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। পূর্ববাংলার মুসলমানরা এই প্রথম নিজের জন্য আলাদা একটি রাষ্ট্রের দাবি করে। তার আগেও রাজনীতি ছিল বটে, তবে তা গণমানুষের অংশ ছিল বলে বলা যাবে না। রাজনীতি ছিল না মানে সে-অর্থে তর্ক-বিতর্কও ছিল না। তর্ক-বিতর্ক না থাকলে পরমতসহিষ্ণুতার প্রয়োজনও দেখা যায় না।
দেশভাগের আগে এ দেশের সাধারণ মুসলমান ও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মূলত ছিল কৃষক, জেলে, কামার-কুমার, তাঁতি, ঘরামি, কাঠুরে ইত্যাদি কায়িক শ্রমনির্ভর নিম্নআয়ের মানুষ। অবস্থাসম্পন্ন অনেক গৃহস্থকে বুর্জোয়া অর্থে মধ্যবিত্ত বলা যাবে না। সাধারণ মানুষের রাষ্ট্রের সঙ্গে তেমন সম্পর্ক ছিল না। তাদের সম্পর্ক বরং বেশি ছিল জমিদার, ভূস্বামী, মহাজন, জোতদারদের সঙ্গে। দৈনন্দিন জীবনের বেশির ভাগ সমস্যা তারা গাঁয়ের সীমানার মধ্যেই সমাধান করতে পারতেন। বিচার ব্যবস্থাও ছিল পঞ্চায়েত নির্ভর। তার মানে ফৌজদারি মামলা না হলে খুব বেশি আইন-আদালতেরও সম্মুখীন হতে হয়নি।
সমাজে তখন বেশির ভাগ তর্ক-বিতর্ক ছিল ধর্ম, জীবনাচার নিয়ে। এ কর না ও কর না, এ কর ও কর; মোটামুটি মৌখিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এসব বিতর্কের সমাধান করা যেত। আর এসব বিতর্কের সূত্রপাত যতটা না হতো রাষ্ট্রীয় সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে, তার চেয়ে বেশি অনেকটা সময় কাটানোর বিনোদন হিসেবেই। নাই কাজ তো খই ভাজ। আপন পেশা ও ঘরের বাইরে তাদের গন্তব্যই বা ছিল কতদূর? দেশভাগের পর এ দেশে একটু একটু করে হানা দিতে থাকে বৈশ্বিক যত আধুনিক দর্শন, রাষ্ট্রীয় চিন্তা, নীতিবোধ। ধর্মীয় রাজনীতির বাইরে জেগে ওঠে বাঙালি জাতীয়তাবাদ। আসে মার্কসবাদ। প্রগতিশীলতা। বস্তুবাদ। রুশ ও চীন বিপ্লবের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে বাংলায়। আসে মধ্যপ্রাচ্যের ধর্মীয় চিন্তা। ইউরোপের শিল্প-সাহিত্য-দর্শন-রাজনীতি চিন্তা।
এই বৈশ্বিক চিন্তার ঢেউ আসতে শুরু করেছিল অবশ্য গত শতাব্দীর প্রথম থেকেই। হয়তো ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকেই; কিন্তু তা যতটা দ্রুত এসেছে কলকাতায় ততটা দ্রুত পূর্ববাংলা পর্যন্ত পৌঁছুতে পারেনি। এ কথা মানতেই হবে যে এ দেশে বৈশ্বিক চিন্তার অনুপ্রবেশ ঘটেছে একটু দেরিতেই। দেশভাগের পরই মূলত এ দেশের মানুষ রাজনীতি সম্পর্কে বেশি সচেতন হয়। তাই আমাদের প্রথম নবজাগরণের যুগ মূলত ষাটের দশক। যা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে; কিন্তু স্বাধীনতার পর আমাদের সমাজ আর আগের অগ্রগতিটাকে ধরে রাখতে পারেনি। এর কারণ সমাজ কোনো রাজনৈতিক স্থিররতায় পৌঁছাতে পারেনি। একেক পর এক ক্যু, পাল্টা ক্যু, গণঅভ্যুত্থান; গণতান্ত্রিক যাত্রাও বারবারই টালমাটাল।
শুধু রাজনীতিকে দায় করলেই হবে না, এর সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশও একেবারে উলট-পালট হয়ে গেছে। আবার সব সংস্কৃতির পেছনে রাজনীতি থাকেই; কিন্তু, রাজনীতি জিনিসটা যে কী তা এদেশের জনগণ খুব একটা বুঝেছেন বলেও মনে হয় না। রাজনীতি বলতে বুঝেছেন পাঁচ বছরে একবার ভোট দেয়া, ক্ষমতার চর্চা; কিন্তু রাজনীতি যে জনমানুষের প্রাত্যাহিক চর্চারই একটা বিষয় সে বোধ হয়নি। গত বিশ বছরে বাংলাদেশে যা ঘটে গেছে, তা আসলে ঘটা অনিবার্য ছিল। কাঁচা পয়সার সঙ্গে মানুষের হাতে হাতে ঘরে ঘরে আসতে থাকে টিভি-ডিশ-ইন্টারনেট-মোবাইল-কম্পিউটার-ফেসবুক।
ফেসবুক-ইউটিউবে যে যা খুশী লিখতে পারে। যে কেউ যা ইচ্ছে তাই প্রকাশ করতে পারে। কি এক অসম্ভব উন্মাদনা মানুষকে নিজের আত্মসম্মান-যুক্তিরবোধ ভুলিয়ে দেয়! একজনকে পছন্দ হল না, তাকে যা খুশী-গালমন্দ দিয়ে পোস্ট দিয়ে অদ্ভুত এক বিকৃত উল্লাসে মত্ত হলেন অনেকেই। এর সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি তে যে কারও ছবি বিকৃত করে ভিডিও তৈরি করে চলতে থাকে চরিত্র হননের প্রতিযোগিতা। ফলে উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোতে ফেসবুক-ইউটিউবের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে ওঠে প্রতিহিংসা, অসুস্থ প্রতিযোগিতার, যা পরমত সহিষ্ণুতার সামাজিকবোধকে আরও দুর্বল করে দেয়। সামাজিকে যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অনেক ভাল বিষয়বস্তু আছে, তবে সেগুলোর চর্চা উন্নত খুব সামান্যই দেখা যায়।
বিশ্বায়ন পুঁজির দাসত্ব করে। পুঁজির এমনই প্রভাব- জোর করে হলেও সে ঢুকবেই। তাকে ঠেকিয়ে রাখা যায় না। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নব্য উদারনীতিবাদ; মুক্ত বাজার অর্থনীতি। মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে একই দোকানে ধার্মিক আর পতিতজন ক্রয়-বিক্রয় করতে বাধ্য। বাজারব্যবস্থায় এক হলেও চেতনায়-বিশ্বাসে তো আর এক নয়। ফলে সংঘাত অনিবার্য। চারদিকে অস্থিরতা বিরাজমান। পরমতসহিষ্ণুতার অভাব ঘটা স্বাভাবিক; কিন্তু পরমতসহিষ্ণুতা ছাড়া কি একটা সমাজ টিকতে পারে? আমরা দেখেছি নাস্তিক-আস্তিক নিয়ে তর্ক, জাতীয়তাবাদ-অন্তর্জাতিকতাবাদ নিয়ে তর্ক, প্রগতিশীলতা-প্রতিক্রিয়াশীরতা নিয়ে তর্ক, শাপলা-শাহবাগ নিয়ে তর্ক; এমন কি, মেয়েরা কী কাপড় পরবে বা পরবে না তা নিয়েও তর্ক।
তর্ক খারাপ না। তর্ক ভালো; কিন্তু তর্ক যখন সহিংসতায় রূপ নেয় তা ভয়ংকর। আর তর্ক সহিংসতায় রূপ নেয় কখন? যখন যুক্তি দিয়ে আর নিজের মতামত ব্যক্ত করা না যায়। আমরা আমাদের সবরকম চিন্তাবিদদের দেখেছি প্রচণ্ড আক্রমণাত্মক। নিজের যুক্তি উপস্থাপনের চেয়ে অন্যকে হেয়, ছোট করতেই তাদের আগ্রহ বেশি। ফলে তর্কের জবাব তর্কের মাধ্যমে না হয়ে, হয়েছে অস্ত্রের মাধ্যমে। সমাজে চলমান অস্থিরতা এখন চারদিকেই ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ অল্পতেই উত্তেজিত হয়ে যান। রাস্তাঘাটে হাতাহাতি এখন নৈত্যনৈমিত্তিক ঘট্না। ফেসবুকও পরিণত হয়েছে রাস্তায়। কারও কথা পছন্দ না হলেই প্রচণ্ড আক্রমণাত্মক মন্তব্য। প্রায় খুন করে ফেলার সমান। কে যে কী বলছে আর কে যে কী করছে বোঝা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি আমাদের রাজনৈতিক জীবনে একটা বিরাট পরিবর্তন এসেছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের স্বৈরাচারী সরকারকে হটানো গেছে। অনেকে এটাকে বিপ্লব হিসেবে চিহ্নিত করছেন। অনেকে সমাজে আমূল পরিবর্তন আনতে চেষ্টা করছেন; কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে, গণঅভ্যুত্থান গণমানুষের জোরে সংঘটিত করা যায়; কিন্তু সাংস্কৃতিক পরিবর্তন জোর-জবরদস্তির বিষয় না। তা বোঝাপড়ার বিষয়। লেখাপড়ার বিষয়। শিক্ষাদীক্ষা ও উন্নত রুচিবোধের বিষয়। গণঅভ্যুত্থান আমাদের দেশে আগেও হয়েছে; কিন্তু সেরকম বৈপ্লবিক কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। তার কারণ সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা-চেতনাগত পরিবর্তন ঘটেনি।
এখন সময় এসেছে সেই পরিবর্তনের। সেই সুযোগও এসেছে। এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। কাজে লাগাতে হবে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে। প্রচুর কথা বলার মধ্য দিয়ে। প্রচুর তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে। প্রচুর লেখাপড়ার মাধ্যমে। আধুনিক চিন্তা-দর্শনের সঙ্গে আমাদের পরিচিত হতে হবে। সেসব বুঝতে হবে। শুধু লাফালেই হবে না। না বুঝে লাফানো হবে আত্মঘাতীর শামিল। তা আমাদের এগিয়ে না নিয়ে বরং পিছিয়ে নিয়ে যাবে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে