Views Bangladesh Logo

১২ দিনে ২০ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এত অবহেলা কেন?

দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়ানক হয়ে উঠছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর এক দিনেই সারা দেশে মারা গেছেন ৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৩৫ জনের ওপরে। এমন খবর জনমনে উদ্বেগ ভীতি সঞ্চার করেছে।

গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে চলতি মাসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২০ জনে। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজার ৮১৯ জন। এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৫২ শতাংশ নারী ও পুরুষ ৪৮ শতাংশ।

এভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে তা নিঃসন্দেহে আতঙ্কের ব্যাপার। গত ২০ আগস্ট ছিল বিশ্ব মশক দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকার দুই মেয়র লাপাত্তা হয়ে যান, ফলে দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম অনেক কিছুই ব্যাহত হয়েছে। লার্ভিসাইড স্প্রে, ফগিংসহ নিয়মিত মশক নিধন ব্যবস্থাগুলোও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছিল। এর ফলে মশা বেড়েছিল এবং তার সঙ্গে এখন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় বসেছে এক মাসের বেশি হয়ে গেল। মশক নিধন প্রক্রিয়া এখনো খুব ভালোভাবে চলছে বলা যাবে না। অনেক এলাকাতেই এখন নিয়মিত ফগিং করা হয় না। মশা নিধন সম্পর্কে সচেতনতাও কমে যাচ্ছে। সিটি করপোরেশনের মেয়র এখন নির্বাচিত হননি, পাশাপাশি নাগরিক অনেক কার্যক্রমই স্বাভাবিক হয়নি এখনো। ফলে মশার হাত থেকেও রেহাই পাচ্ছেন না নগরবাসী।

একই অবস্থা দেশের বিভিন্ন জেলায়। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে, সেই রোগীদের অবস্থাও বেশ আশঙ্কাজনক। ডেঙ্গু এখন অনেক প্রকার। অনেকে শুরুতে বুঝতেই পারেন না যে তিনি ডেঙ্গু আক্রান্ত। ফলে হাসপাতালে যেতে যেতে দেরি হয়। মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার এটাও একটি কারণ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেরিতে হাসপাতালে যাওয়া, দেশব্যাপী চিকিৎসা সুবিধার অপর্যাপ্ততা, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর রেকর্ড না রাখা এবং ডেঙ্গু শনাক্তে ভুল টেস্ট রিপোর্ট মূলত এ বছর উচ্চ মৃত্যুহারের কারণ।

সরকার ও জনগণ উভয়কেই ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। তা না-হলে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে। বাড়িঘর, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, দোকান-পাটের আশপাশের জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মশা নিধনে সরকারকে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি যেন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ না করে, সেটাই আমরা চাই।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ