মার্কিন নির্বাচন
প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট না দ্বিতীয় মেয়াদ
আর মাত্র পাঁচদিনের অপেক্ষা! তারপরই জানা যাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিসকে পাবে, নাকি তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে বাসিন্দা হবেন হোয়াইট হাউসের।
সর্বশেষ জনমত জরিপগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লড়াই হবে সমানে সমান। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে দুই পক্ষের প্রচারণা চলছে। দুই প্রার্থীর নীতি নিয়ে ভোটারদের মাঝে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণও।
বিশ্বের প্রভাবশালী পরাশক্তি এবং বুনিয়াদি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে শীর্ষতম যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে ৫০টি রাজ্য। তবে রাজ্যগুলোর বেশিরভাগই প্রায় সব সময় একই দলকে ভোট দেয়। আর মুষ্টিমেয় কয়েকটিতে রয়েছে উভয় প্রার্থীরই জয়ের সম্ভাবনা। জয়-পরাজয় নির্ধারণকারী ওই সাতটি রাজ্য দোদুল্যমান বা সুইং স্টেট আর যুদ্ধবাজ বা ব্যাটলগ্র্যান্ড স্টেট নামে পরিচিত।
সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিয়ে থাকা বাকি ৪৩টি রাজ্যের চেয়ে দোদুল্যমানগুলোকে তাই জয়-পরাজয়ের নিয়ামক হিসেবে দেখা হয়। জরিপে ওই সাত রাজ্যে দুই প্রার্থীর জনপ্রিয়তার পারদ একে অন্যের পয়েন্ট কয়েক শতাংশের মধ্যে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাটি খুব কাছাকাছি থাকায় ফলাফলের ভবিষ্যদ্বাণী করা খুব কঠিন- বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে বেছে নিতে ভোট দেবেন। নির্বাচনটি প্রাথমিকভাবে ২০২০ সালের পুনরাবৃত্তি ছিল। তবে জুলাই মাসে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজের প্রচারণা বন্ধ ও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে ভোটের মাঠে নামিয়ে দেন।
জুলাইয়ের শেষ দিকে নির্বাচনী দৌড়ে নামার পর থেকেই হ্যারিস জাতীয় জরিপের গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে সামান্য এগিয়ে রয়েছেন। ১০ সেপ্টেম্বর দুই প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র বিতর্কের পরেও এ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাত্রা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল। ভোটের দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে জনপ্রিয়তার এই পারদ ওঠা-নামা করছে।
তবে শেষ কয়েকদিনে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে তাদের মধ্যে ব্যবধান হাড্ডাহাড্ডি অবস্থানে পৌছেছে। এই মুহূর্তে পোলিং গড় অনুসারে কোনো প্রার্থীই কোনো সিদ্ধান্তমূলক অবস্থানে নেই।
এর মধ্যে অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নেভাদা ও নর্থ ক্যারোলাইনায় আগস্টের শুরু থেকে বেশ কয়েকবার লিড হাতবদল হলেও এই মুহূর্তে সবগুলোতেই সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। অন্য তিনটি রাজ্য মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া এবং উইসকনসিনে আগস্টের শুরু থেকে কখনও কখনও দুই বা তিন পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন হ্যারিস। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবস্থান শক্ত হয়েছে ট্রাম্পেরও। বিশেষত পেনসিলভেনিয়ায় খুব কম ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন তিনি।
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের আগে এই তিনটি রাজ্যই ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। বাইডেন ২০২০ সালে রাজ্যগুলো পুনর্দখল করে হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হন। হ্যারিস যদি একই কাজ করতে পারেন, তবে তিনি নির্বাচনে জয়ের পথে থাকবেন।
যদিও এই জাতীয় জরিপগুলো সামগ্রিকভাবে সারা দেশে একজন প্রার্থী কতোটা জনপ্রিয় তার একটি দরকারি নির্দেশিকা, তবে ফলাফলের পূর্বাভাস দেয়ার সঠিক উপায় নয়।
ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম ব্যবহার করে ভোট হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে প্রতিটি রাজ্যকে জনসংখ্যার আকারের সাথে প্রায় সামঞ্জস্য রেখে বেশ কয়েকটি ভোট দেওয়া হয়। একজন প্রার্থীকে জয় পেতে মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের ২৭০টি পেতে হয়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে