উচ্চ মূল্যস্ফীতি কি নিয়ন্ত্রণে আসবে সহসাই?
চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা যাচ্ছে না। বাজেটে চলতি অর্থবছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও দেশের অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করছেন, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি আর বৃদ্ধি না পেলেও সহসাই তা ৯ শতাংশে নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা নেই। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বাজেট-উত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে; কিন্তু কীভাবে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব তা বলা হয়নি। খুব শিগগির চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। সেই মুদ্রানীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ইস্যুটি প্রাধান্য পাবে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়; কিন্তু শুধু মুদ্রানীতির মাধ্যমে উচ্চ মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
বর্তমানে আমার উচ্চ মূল্যস্ফীতির যে প্রভাব মোকাবিলা করছি তার কিছুটা আন্তর্জাতিক ঘটনা প্রবাহের কারণে সৃষ্ট। আর কিছুটা আমাদের অযৌক্তিক নীতির কারণে হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তার অধিকাংশই উদ্দেশ্য সাধনে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ গৃহীত নীতিগুলো পরিপূর্ণ বা যৌক্তিক ছিল না। করোনা-উত্তর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বব্যাপী উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রবণতা দেখা দেয়। সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়, যা ছিল দেশটির বিগত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা সেই সময় ১৯৪টি দেশের অর্থনীতি বিশ্লেষণ করে বলেছিল, ১৭৯টি দেশের অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এমন কি কোনো কোনো দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি অসহনীয় পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক অন্য এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছিল তাদের অধিকাংশই ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে। সর্র্বশেষ তথ্য মোতাবেক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি এখন ৩ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। শ্রীলঙ্কার মতো সমস্যাক্রান্ত দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির হার ৩৫ শতাংশ অতিক্রম করে গিয়েছিল। বর্তমানে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ৪ শতাংশে নিচে নেমে এসেছে।
প্রশ্ন হলো, এসব দেশ কীভাবে মূল্যস্ফীতি এতটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হলো? বা তারা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকা (ফেড) অন্যান্য ব্যবস্থার পাশাপাশি ব্যাংকের নীতি সুদ বা পলিসি রেট বৃদ্ধি করে। অর্থনীতিতে পলিসি রেট বৃদ্ধির মাধ্যমে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনাটাই হচ্ছে সবচেয়ে সহজ কাজ। অবশ্য এর পাশাপাশি অন্যান্য সহায়ক ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হয়। নীতি সুদ হার বা পলিসি রেট বৃদ্ধির মাধ্যমে কীভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হয় তা একটু বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। সিডিউল ব্যাংকগুলোা বিভিন্ন প্রয়োজনে স্বল্পকালীন সময়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ বা ধার গ্রহণ করে থাকে। এই ধার গ্রহণ প্রক্রিয়াকালিন সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদ ধার্য করে তাকে পলিসি রেট বলা হয়। সিডিউল ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় উদ্যোক্তা বা সাধারণ ঋণ গ্রহীতাদের ঋণদানের সময় যে সুদ চার্জ করে তাকে বলা হয় ব্যাংক ঋণের সুদের হার। পলিসি রেট এবং ব্যাংক ঋণের সুদের হার পরস্পর নির্ভরশীল। পলিসি রেট বৃদ্ধি পেলে ব্যাংক ঋণের সুদের হারও আনুপাতিকভাবে বৃদ্ধি পায়। না হলে সিডিউল ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে যাবে।
পলিসি রেট বিভিন্ন নামে হতে পারে। কোনো কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে বাজারে মুদ্রার সরবরাহ বা জোগান কমাতে হবে তাহলে তারা পলিসি রেট বৃদ্ধি করে। আবার যদি মনে করে বাজারে মুদ্রার সরবরাহ বাড়াতে হবে তাহলে পলিসি রেট হ্রাস করে। পলিসি রেট বৃদ্ধি করা হলে সিডিউল ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ বা ধার গ্রহণে আগের চেয়ে বেশি সুদ দিতে হয়। এই বর্ধিত হারে সুদ প্রদানের ফলে ব্যাংকগুলোর প্রাপ্ত সুদজনিত লভ্যাংশ কমে যেতে পারে। তাই পলিসি রেট বৃদ্ধি পেলে সিডিউল ব্যাংকগুলো উদ্যোক্তা বা সাধারণ ঋণ গ্রহীতাদের ঋণদানের সময় আগের তুলনায় বেশি হারে সুদ চার্জ করে। ফলে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ আগের তুলনায় ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। এতে উদ্যোক্তা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা এবং সামর্থ্য উভয়ই কমে যায়। ব্যাংক থেকে যে ঋণ প্রদান করা হয় তা কোনো না কোনোভাবে বাজারে চলে আসে। ফলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়; কিন্তু ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ যদি তুলনামূলকভাবে কস্টলি হয় তাহলে মানুষ কম পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করবে। এতে বাজারে অর্থের যোগান কমে যাবে। ফলে মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমে আসবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট বৃদ্ধি করলে তা সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ নষ্ট হয়; কিন্তু তারপরও সাধারণ ভোক্তা শ্রেণিকে স্বস্তি দেবার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট বৃদ্ধি করে থাকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক গত দুই বছরের মধ্যে অন্তত ১৩বার পলিসি রেট বৃদ্ধি করেছে। ইতোমধ্যে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসার কারণে তারা পলিসি রেট বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুকরণে বিশ্বের অন্তত ৭৭টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট বৃদ্ধি করে। এর পাশাপাশি অন্যান্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দেশগুলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব আমেরিকার অনুসরণে বাংলাদেশ ব্যাংকও উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য বেশ কয়েক বার পলিসি রেট বৃদ্ধি করেছে। করোনাকালিন সময়ের পরও বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি রেট ছিল ৫ শতাংশ। বেশ কয়েক বার বৃদ্ধির মাধ্যমে এখন পলিসি রেট দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। অর্থাৎ আগে যেখানে সিডিউল ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ বা ধার গ্রহণের জন্য ৫ শতাংশ সুদ দিতো এখন সেখানে সুদ দিতে হচ্ছে সাড়ে ৮ শতাংশ; কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এখানে সবচেয়ে বড় ভুল করেছে পলিসি রেট বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক ঋণের সুদের হার আনুপাতিক হারে বাড়তে না দিয়ে।
কিছু দিন আগ পর্যন্তও ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার ৯ শতাংশে নির্ধারিত করে রাখা হয়েছিল। এতে সিডিউল ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগের তুলনায় বেশি সুদ দিয়ে ধার গ্রহণ করলেও তারা সেই অর্থ ৯ শতাংশ সুদে বিনিয়োগ করতে বাধ্য হয়েছে। এমন কি এক সময় মূল্যস্ফীতির হার ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হারের চেয়ে বেশি ছিল। ফলে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ তুলনামূলক সস্তা হয়ে দাঁড়ায়। সিডিউল ব্যাংকগুলো ঋণদানের ক্ষেত্রে সংকোচনমূলক আচরণ করতে থাকে; কিন্তু সবার ক্ষেত্রে সংকোচন মূলক আচরণ করা যায়নি। যারা প্রভাবশালী ঋণ গ্রহীতা তারা সুযোগ বুঝে উচ্চ মাত্রায় ঋণ গ্রহণ শুরু করে। আগের এক মুদ্রানীতিতে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ১ শতাংশ; কিন্তু বাস্তবে ব্যাংক ঋণের অর্জিত হয় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। সেই একই সময়ে শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামাল এবং মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি হ্রাস পেয়েছিল ১৪ শতাংশ করে। আর ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি কমেছিল ৭৬ শতাংশ। তাহলে এই ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি যে ঋণ প্রদান করেছিল তা কোথায় গিয়েছিল? এই ঋণের অর্থ নানাভাবে বাজারে চলে আসে। ঋণকৃত কিছু অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেন।
পরবর্তীতে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি করা হলে ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণের প্রবাহ কমে গেছে। সর্বশেষ হিসাব মোতাবেক,ব্যক্তি খাতে ব্যাংক ঋণের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে; কিন্তু ভুল যা হবার তা আগেই হয়ে গেছে। পলিসি রেট বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে রাখার ফলে সিডিউল ব্যাংকগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বাজার ব্যবস্থাপনা। ব্যাংক ঋণকৃত যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাজারে চলে আসে তা মূল্যস্ফীতিকে কমানোর পরিবর্তে উসকে দেয়। আর জের আমরা এখনো বয়ে চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কি এক্ষেত্রে ভুল করেছে? নাকি তাদের দিয়ে মহল বিশেষ তাদের স্বার্থ হাসিল করে নিয়েছে? নিশ্চয়ই মনে থাকার কথা, অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের সুস্পষ্ট আপত্তি উপেক্ষা করে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার ৯ শতাংশ এবং আমানতের উপর প্রদেয় সুদ হার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ক্ষেত্রে সাড়ে ৫ শতাংশ এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকের বেলায় ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালিন গভর্নর উপস্থিত হয়ে এমন একটি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।
এখানে আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করার মতো, তাহলো আমানতের উপর প্রদেয় সর্বোচ্চ সুদ হার নির্ধারণের ক্ষেত্রেও বৈষম্য করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে আমানতের ওপর প্রদেয় সর্বোচ্চ সুদ হার সাড়ে ৫ শতাংশ। আর ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে এই সুদ হার ৬ শতাংশ। অর্থাৎ কেউ যদি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে আমানত সংরক্ষণ করেন তাহলে তিনি সাড়ে ৫ শতাংশ সুদ পাবেন। আর একই সময়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকে আমানত সংরক্ষণ করলে ৬ শতাংশ বা দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি সুদ পাবেন। এ ছাড়া আগে নিয়ম ছিল কোনো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তাদের মোট উদ্বৃত্ত আমানতের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকে সংরক্ষণ করতে পারতো। এই আইন সংশোধন কওে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত আমানতের ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের অনুমতি দেয়া হয়। ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকের প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এই অতি মহ্বতের কারণ কী?
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং সেক্টর বিষয়ক যতগুলো আইন প্রণীত হয়েছে অথবা আইনি সংশোধন করা হয়েছে তার উদ্দেশ্য হচ্ছে ঋণ খেলাপিদের সহায়তা দেয়া। সর্বশেষ ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট প্রদানের মাধ্যমে ঋন খেলাপিদের এক্সিট দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যতই চেষ্টা করুন না কেনো একটি মহল সরকারের সেই প্রচেষ্টাকে বানচাল করার জন্য সচেষ্ট রয়েছে। ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে রাখার ফলে ব্যাংকিং সেক্টরের যে ক্ষতি হয়েছে তার প্রভাবে মূল্যস্ফীতি উচ্চতর পর্যায়ে চলে গিয়েছে। এই উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে অনেক দিন সময় প্রয়োজন হবে। তাই বলা যেতে পারে চলতি অর্থবছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত দিবা স্বপ্ন হয়েই থাকবে। গত ৫ বছরের মধ্যে গত দুই বছরই মূল্যস্ফীতির হার ছিল অসহনীয় পর্যায়ে। ২০২৩-২৪ অর্থাৎ সদ্য সমাপ্ত অর্থবছওে মূল্যস্ফীতির গড় হার ছিল ৯ দশমিক ৭৩শতাংশ। আগের বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ০২ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে এটা ছিল ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। তার আগের দুই বছরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল যথাক্রমে ৫দশমিক ৫৬ শতাংশ ও ৫দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা সহনীয বলে মনে করা যেতে পারে।
এম এ খালেক: অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি ও অর্থনীতিবিষয়ক লেখক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে