বাঁচার আকুতি জানাতে জানাতেই মারা যান রকি
বাঁচার আকুতি জানিয়ে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতেই মারা গেলেন কামরুল হাবিব রকি (২১)। বেইলি রোডের আগুনে তাঁর সঙ্গেই পুড়ে ভস্ম হয়ে গেল তাঁর দেখা সব স্বপ্নও।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার বেইলি রোডে আগুন লাগলে সেখান থেকে আর বের হতে পারেননি রকি। পরিবারের হাল ধরতে মাত্র দু’মাস আগে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে চাকরি নেন যশোরের কামরুল হাবিব রকি। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তাঁর লাশ পৌঁছায় গ্রামের বাড়িতে। সদর উপজেলার ধোপাখোলায় এখন চলছে শোকের মাতম।
নিহত রকির মামা জিহাদ হোসেন বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে রকির ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কল দিয়েছি, সে রিসিভ করেনি। পরে আমাকে কল ব্যাক করে বলে, ‘মামা আমাদের ব্রাঞ্চে (কাচ্চিভাই বেইলি রোড শাখা) আগুন লাগছে। আমি আটকা পড়েছি। আমাকে বাঁচাও।’ এর কিছুক্ষণ পর কল কেটে যায়। আমি ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বিষয়টি জানাই। তারা জানায় উদ্ধার কাজ চলছে, ধৈর্য্য ধরুন। এরপর আমি ঢাকায় রওনা হই। সেখানে হাসপাতালে পাই রকিকে। ততক্ষণে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমিই রকিকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলাম। গত ডিসেম্বরে ওর চাকরির পর আমিই ওকে ঢাকা চিনিয়েছি। আজ ওর লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।”
নিহত রকির ভাই কামরান হোসেন সাজিম বলেন, “আমাদের তিন ভাইয়ের মধ্যে রকি সবার বড়। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে চাকরি করে সংসারের হাল ধরেছিল। বাবা ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালায়। তাঁদের দু’জনের আয়ে আমাদের সংসার চলত।”
এদিকে, রকির মা রিপা বেগম ও বাবা কবির হোসেন সন্তানের শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। স্বজনদের আহাজারিতে চারপাশ ভারী হয়ে উঠেছে। প্রতিবেশীরাও রকির জন্য চোখের জল ফেলছেন। স্বজনদের সান্ত্বনা দেয়ার ভাষাও আজ যেন হারিয়ে ফেলেছেন তারা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে